ঢাকা ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

উপদেষ্টাদের কেউ দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত হলে ছাড় দিতে রাজি নন ড. ইউনূস

  • আপডেট সময় : ০৯:২৫:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার রংপুরে দুদক কার্যালুয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন চেয়ারম্যান

রংপুর প্রতিনিধি: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আমরা সোশ্যাল মিডিয়া আর পত্রপত্রিকাতে দেখেছি, এটা আমাদের চোখে পড়েছে। কিন্তু উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে এবং সেটা যদি সুনির্দিষ্ট হয় সেটা আমরা দেখবো। সেই সঙ্গে দুদকের আমিসহ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে এবং আমরা কাজ ঠিক মতো করি না- সেটাও সাংবাদিকরা লিখবেন।’ এ জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টায় রংপুর নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের রংপুর জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই সরকার সম্পর্কে আমাদের ধারনা পাওয়া দরকার, এটা রাজনৈতিক সরকার নয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তিনি একেবারে দুর্নীতির বিপক্ষের মানুষ। যদি তার নিজের উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এ ক্ষেত্রে তিনি বিন্দু মাত্র ছাড় দিতে রাজি নন। তাছাড়া আমাদের যে বিধিবদ্ধ আইন তাতে কাউকেই বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘একটা ব্যাপার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমাদের কাছে অভিযোগ এলে সেটা যেন সুনির্দিষ্ট হয়। শুধু কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করলেই হবে না। সেই টাকা কোত্থেকে করেছেন, কীভাবে করেছেন এই অংশগুলো যদি রক্ষা করতে না পারি তাহলে শেষ পর্যন্ত তা টিকবে না।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলমান আছে, আরো কয়েকটি তদন্তাধীন আছে। যদি তদন্তে সে সব অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমরা মামলা মোকদ্দমায় চলে যাবো।’
রংপুর সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি উদঘাটনে খুব শিগগিরি সেখানে অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আছে বলে শুনলাম। এ বিষয়ে আমি প্রস্তুত হয়ে আসিনি। রংপুর সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগুলো চেক করে দেখা হবে। মামলা-মোকদ্দমা কী আছে সেসবের অবস্থা কী- সবই দেখা হবে।’ ঢাকায় ফিরে ফাইল পত্র দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
রংপুর সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা পেলে ব্যবস্থা নেবো। আর সুনির্দিষ্ট কিছু পেলে অবশ্যই আমরা দেখবো।’ তিনি বলেন, ‘দুদকের অনেক পুরানো মামলা আছে নতুন মামলাও আছে। বেশ কিছু পুরাতন মামলা ধামাচাপা অবস্থায় পড়ে ছিল, সেই মামলাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছি। নতুন মামলাগুলোর ওপর সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছি।’ এর আগে দুদক চেয়ারম্যান স্টেশন রোড এলাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের নিজস্ব জমিতে ৬ তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনটি রংপুর জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। গণপূর্ত বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি। এ সময় রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেনসহ দুদকের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ মুজিব জাতির পিতা নন, স্বাধীনতা অর্জনে তার ত্যাগকে স্বীকার করি

উপদেষ্টাদের কেউ দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত হলে ছাড় দিতে রাজি নন ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ০৯:২৫:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

রংপুর প্রতিনিধি: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আমরা সোশ্যাল মিডিয়া আর পত্রপত্রিকাতে দেখেছি, এটা আমাদের চোখে পড়েছে। কিন্তু উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে এবং সেটা যদি সুনির্দিষ্ট হয় সেটা আমরা দেখবো। সেই সঙ্গে দুদকের আমিসহ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে এবং আমরা কাজ ঠিক মতো করি না- সেটাও সাংবাদিকরা লিখবেন।’ এ জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টায় রংপুর নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের রংপুর জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই সরকার সম্পর্কে আমাদের ধারনা পাওয়া দরকার, এটা রাজনৈতিক সরকার নয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তিনি একেবারে দুর্নীতির বিপক্ষের মানুষ। যদি তার নিজের উপদেষ্টা পরিষদের কেউ দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এ ক্ষেত্রে তিনি বিন্দু মাত্র ছাড় দিতে রাজি নন। তাছাড়া আমাদের যে বিধিবদ্ধ আইন তাতে কাউকেই বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘একটা ব্যাপার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমাদের কাছে অভিযোগ এলে সেটা যেন সুনির্দিষ্ট হয়। শুধু কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করলেই হবে না। সেই টাকা কোত্থেকে করেছেন, কীভাবে করেছেন এই অংশগুলো যদি রক্ষা করতে না পারি তাহলে শেষ পর্যন্ত তা টিকবে না।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা চলমান আছে, আরো কয়েকটি তদন্তাধীন আছে। যদি তদন্তে সে সব অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমরা মামলা মোকদ্দমায় চলে যাবো।’
রংপুর সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি উদঘাটনে খুব শিগগিরি সেখানে অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আছে বলে শুনলাম। এ বিষয়ে আমি প্রস্তুত হয়ে আসিনি। রংপুর সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগুলো চেক করে দেখা হবে। মামলা-মোকদ্দমা কী আছে সেসবের অবস্থা কী- সবই দেখা হবে।’ ঢাকায় ফিরে ফাইল পত্র দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
রংপুর সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা পেলে ব্যবস্থা নেবো। আর সুনির্দিষ্ট কিছু পেলে অবশ্যই আমরা দেখবো।’ তিনি বলেন, ‘দুদকের অনেক পুরানো মামলা আছে নতুন মামলাও আছে। বেশ কিছু পুরাতন মামলা ধামাচাপা অবস্থায় পড়ে ছিল, সেই মামলাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছি। নতুন মামলাগুলোর ওপর সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছি।’ এর আগে দুদক চেয়ারম্যান স্টেশন রোড এলাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের নিজস্ব জমিতে ৬ তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনটি রংপুর জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। গণপূর্ত বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি। এ সময় রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেনসহ দুদকের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।