নিজস্ব প্রতিবেদক : এসএসসি পরীক্ষা ও রোজার বিষয়টি চিন্তা করে এবার এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঠিক কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সাংবিধানিক এ সংস্থা। তবে স্থানীয় সরকারের এ ভোটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব পরিকল্পনার কথা জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। এই কমিশনার বলেন, উপজেলা নির্বাচন করার সময় যেটা, সে সময়টা চলে এসেছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে। এরপর রোজা। রোজার মধ্যে তো নির্বাচন করা সম্ভব না। ঈদের পরপরই যাতে নির্বাচন হয় সেইভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করবো। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যালটেও হতে পারে আবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হতে পারে। আবার ব্যালট-ইভিএম দুটোর সমন্বয় থাকতে পারে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। ইভিএম কী পরিমাণ ব্যবহারযোগ্য সে হিসাব এখনো পাইনি। এটা পেলে হয়তো আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। রোজার শেষের দিকে তফসিল হতে পারে জানিয়ে ইসি আলমগীর বলেন, ঈদের কিছুদিন আগে তফসিল হতে পারে। আর নির্বাচনী প্রচারণা এবং নির্বাচন ঈদের পরে হবে। ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে ভোটের বিষয়টি যুক্ত করা হয়। আর ২০১৭ সালের মার্চে প্রথমবার তিন উপজেলায় দলীয় প্রতীকে ভোট হয়। তবে ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদ বাদে বাকি দুটি পদ উন্মুক্ত রাখেন। এবারের উপজেলায় নৌকা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেবে না- এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মো. আলমগীর বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি মনে করে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেবে না, সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, তারা নিতে পারে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই, সমস্যাও নেই। আইন অনুযায়ী দুইভাবে মনোনয়ন দেওয়ার নিয়ম আছে। রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন বা স্বতন্ত্র নিয়ে।
পূর্বের চেয়ারম্যান না হলে লাগবে ২৫০ সমর্থন: নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, স্বতন্ত্র হিসেবে যদি কেউ উপজেলা পরিষদে ভোট করতে চান, উনি যদি ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে না থাকেন তাহলে ওনাকে ২৫০ জন ভোটারের সমর্থন রয়েছে এই মর্মে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যদি আগে নির্বাচিত হয়ে থাকেন তাহলে ওনার ২৫০ জনের স্বাক্ষর লাগবে না। দলীয় প্রতীকে ভোট সহজ নাকি প্রতীকে সহজ- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য প্রতীক থাকলেও যে অবস্থা, না থাকলেও একই অবস্থা। কমিশনের আলাদা কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো সমস্যা নেই। প্রতীক থাকলে কোনো বাড়তি চাপ থাকে কি না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এই কমিশনার বলেন, আমাদের আইনে কোনো সমস্যা নেই। না আমরা কোনো সময়েই…, কাজই তো আমাদের আইন অনুযায়ী, আমরা চাপ মনে করবো কেন?
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দিলেও আইনের ব্যত্যয় হবে না: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়া হলেও তা আইনের ব্যত্যয় হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে আইনের ব্যত্যয় হচ্ছে কি না? জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘আইনটি যেভাবে করা আছে, তাতে দলীয় প্রতীকেও হতে পারে, দলীয় প্রতীক ছাড়াও হতে পারে। কোনো দল যদি কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে প্রতীক দেয় সেখানে নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হবে। এছাড়া অপশন আছে-সেখানে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারে। আমি আইনটি দেখেছি, আইনটি ঠিক আছে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি মনে করে সেখানে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দিয়ে দেবে, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আবার দল যদি মনে করে, না আমরা এভাবে দলীয় মনোনয়ন কাউকে দেবো না, আবার কোথাও কোথাও দেবো কোথাও কোথাও দেবো না-দল থেকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে।’
আইন সংশোধনের কোনো উদ্যোগ আছে কি না? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘না আইন সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন, দলীয় প্রতীক ছাড়াও নির্বাচন করতে পারবেন। এতে আইনের ব্যত্যয় হবে না।’
উপজেলা নির্বাচন এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে
জনপ্রিয় সংবাদ