ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

উন্নয়ন অধ্যয়ন কেন পড়বেন?

  • আপডেট সময় : ১১:০১:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : যেসব তরুণ সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্যের নিরসনে কাজ করতে চান, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন দিয়ে প্রভাব ফেলতে চান এবং একই সঙ্গে পেশাগত সাফল্যও অর্জন করতে চান, তাঁদের জন্য উন্নয়ন অধ্যয়ন পাঠের বিকল্প নেইছবি: খালেদ সরকার
১৯৭২ সালে যে দেশের আয় ছিল মাত্র ৮০০ কোটি টাকা, তার অর্থনৈতিক সক্ষমতা এখন ৩৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা দেখে জাতিসংঘের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বিষয়ক উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক জেফরি স্যাকস বাংলাদেশকে ‘জুয়েল ইন আ ক্রাউন’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিকূলতাও রয়েছে। আমরা যত বেশি অগ্রসর হব, নিত্যনতুন প্রতিবন্ধকতাও আমাদের তত ঘিরে ধরবে। আর তখনই দেশের উন্নয়নকে বাধাহীন ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আমাদের প্রয়োজন হবে সাহসী, সক্ষম ও দক্ষ জনবল। আমাদের প্রত্যাশা ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের স্বীকৃতি অর্জন করবে।
আর এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি তরুণদের আরও দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারে। বিষয়টি হলো উন্নয়ন অধ্যয়ন (ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ)। এই বিষয়ের বহুমুখী পাঠ্যসূচি শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের প্রতিবন্ধকতা, বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের কৌশল, তত্ত্ব ও নীতি সম্পর্কে অবগত করে থাকে। তাই যেসব তরুণ সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্যের নিরসনে কাজ করতে চান, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন দিয়ে প্রভাব ফেলতে চান এবং একই সঙ্গে পেশাগত সাফল্যও অর্জন করতে চান, তাঁদের জন্য উন্নয়ন অধ্যয়ন পাঠের বিকল্প নেই। উন্নয়ন অধ্যয়ন বিষয়ে পড়াশোনার মধ্য দিয়েই একজন শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন, জিডিপির সূচক ওঠানামা দিয়ে একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন মাপা যায় না। বরং দেশের উন্নয়নের সঙ্গে যে জনগণের সার্বিক অবস্থা, তাঁদের পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিকতাও জড়িত—সেটা শেখায় উন্নয়ন অধ্যয়ন। এই বিষয়ের গভীরে গেলেই বোঝা যায়, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রাষ্ট্রের জনগণ ও তাঁদের অবস্থা জানা কতটা জরুরি। আর উন্নয়ন অধ্যয়নে পড়ে এসব জানতে পারলেই একজন হয়ে উঠতে পারেন এ সময়ে কর্মক্ষেত্রের জন্য দক্ষ ও উপযোগী ব্যক্তি। তাঁর চাহিদা তখন দেশ ও দেশের বাইরে, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি কিংবা জাতিসংঘ থেকে শুরু করে যেকোনো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাতেই বাড়বে। বাড়বে কাজের সুযোগ।
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ চালু হয়েছে। এই সময়ে চাকরিক্ষেত্রের চাহিদা ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের ধারা অনুযায়ী যুগোপযোগী পাঠ্যসূচি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ পরিচালনা করছে। গত দশক থেকে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) সমাজবিজ্ঞান ও কলা অনুষদের অধীন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ পরিচালনা করছে। আইইউবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগটি এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমাদৃত বিভাগ। এখান থেকে স্নাতকোত্তর করে শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সঙ্গে দেশে ও দেশের বাইরের স্বনামধন্য সব প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। সমাজ, দেশ, সর্বোপরি বিশ্বের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশ নিতে পারছেন। এ বিষয়ে পড়াশোনা শুধু তত্ত্বীয় জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ নয়, ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও প্রত্যেককে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলছে। যার ফলে উন্নয়ন অধ্যয়নের শিক্ষার্থীরা ব্র্যাক, সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউএনডিপি, ইউনিসেফের মতো জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থা এবং সিপিডি, পিডব্লিউসির মতো গবেষণা সংস্থায় কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উন্নয়ন অধ্যয়ন কেন পড়বেন?

আপডেট সময় : ১১:০১:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী ২০২২

ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : যেসব তরুণ সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্যের নিরসনে কাজ করতে চান, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন দিয়ে প্রভাব ফেলতে চান এবং একই সঙ্গে পেশাগত সাফল্যও অর্জন করতে চান, তাঁদের জন্য উন্নয়ন অধ্যয়ন পাঠের বিকল্প নেইছবি: খালেদ সরকার
১৯৭২ সালে যে দেশের আয় ছিল মাত্র ৮০০ কোটি টাকা, তার অর্থনৈতিক সক্ষমতা এখন ৩৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা দেখে জাতিসংঘের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বিষয়ক উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক জেফরি স্যাকস বাংলাদেশকে ‘জুয়েল ইন আ ক্রাউন’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিকূলতাও রয়েছে। আমরা যত বেশি অগ্রসর হব, নিত্যনতুন প্রতিবন্ধকতাও আমাদের তত ঘিরে ধরবে। আর তখনই দেশের উন্নয়নকে বাধাহীন ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আমাদের প্রয়োজন হবে সাহসী, সক্ষম ও দক্ষ জনবল। আমাদের প্রত্যাশা ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের স্বীকৃতি অর্জন করবে।
আর এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি তরুণদের আরও দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারে। বিষয়টি হলো উন্নয়ন অধ্যয়ন (ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ)। এই বিষয়ের বহুমুখী পাঠ্যসূচি শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের প্রতিবন্ধকতা, বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের কৌশল, তত্ত্ব ও নীতি সম্পর্কে অবগত করে থাকে। তাই যেসব তরুণ সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন, সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্যের নিরসনে কাজ করতে চান, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন দিয়ে প্রভাব ফেলতে চান এবং একই সঙ্গে পেশাগত সাফল্যও অর্জন করতে চান, তাঁদের জন্য উন্নয়ন অধ্যয়ন পাঠের বিকল্প নেই। উন্নয়ন অধ্যয়ন বিষয়ে পড়াশোনার মধ্য দিয়েই একজন শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন, জিডিপির সূচক ওঠানামা দিয়ে একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন মাপা যায় না। বরং দেশের উন্নয়নের সঙ্গে যে জনগণের সার্বিক অবস্থা, তাঁদের পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিকতাও জড়িত—সেটা শেখায় উন্নয়ন অধ্যয়ন। এই বিষয়ের গভীরে গেলেই বোঝা যায়, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রাষ্ট্রের জনগণ ও তাঁদের অবস্থা জানা কতটা জরুরি। আর উন্নয়ন অধ্যয়নে পড়ে এসব জানতে পারলেই একজন হয়ে উঠতে পারেন এ সময়ে কর্মক্ষেত্রের জন্য দক্ষ ও উপযোগী ব্যক্তি। তাঁর চাহিদা তখন দেশ ও দেশের বাইরে, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি কিংবা জাতিসংঘ থেকে শুরু করে যেকোনো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাতেই বাড়বে। বাড়বে কাজের সুযোগ।
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ চালু হয়েছে। এই সময়ে চাকরিক্ষেত্রের চাহিদা ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের ধারা অনুযায়ী যুগোপযোগী পাঠ্যসূচি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ পরিচালনা করছে। গত দশক থেকে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) সমাজবিজ্ঞান ও কলা অনুষদের অধীন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ পরিচালনা করছে। আইইউবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগটি এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমাদৃত বিভাগ। এখান থেকে স্নাতকোত্তর করে শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সঙ্গে দেশে ও দেশের বাইরের স্বনামধন্য সব প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। সমাজ, দেশ, সর্বোপরি বিশ্বের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশ নিতে পারছেন। এ বিষয়ে পড়াশোনা শুধু তত্ত্বীয় জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ নয়, ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও প্রত্যেককে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলছে। যার ফলে উন্নয়ন অধ্যয়নের শিক্ষার্থীরা ব্র্যাক, সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউএনডিপি, ইউনিসেফের মতো জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থা এবং সিপিডি, পিডব্লিউসির মতো গবেষণা সংস্থায় কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।