ঢাকা ০৫:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

উন্নয়নে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আছে: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

  • আপডেট সময় : ১২:৪৫:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আমরা এখন উন্নয়নের নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছি। বিশ্ব অর্থনীতিও বদলে যাচ্ছে। উন্নয়নের পর্যায়ে আমাদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, উপযুক্ত শিক্ষা, অগ্রশিক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ তৈরি, যাতে জনমিতিক সুবিধার সুযোগ নিতে পারি। ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের দক্ষতা ও জবাবদিহি বাড়ানো, বিশ্ব আর্থিক অস্থিরতা সামাল দেওয়ার জন্য উন্নতমানের আর্থিক খাত গড়ে তোলা এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বিশ্ব বাণিজ্যের প্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতা শক্তি টিকিয়ে রাখতে বা আরও শক্তিশালী হতে এই চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের সামনে আছে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মৌলিক অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০২০’ দেওয়া হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের গলায় স্বর্ণপদক পরিয়ে দেন এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর তাকে নগদ ৫ লাখ টাকা তুলে দেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা এখন ঋণ করছি। তবে সময় বেশি বাকি নেই, ইনশাআল্লাহ, অল্প সময়ের মাঝে আমরা সারাবিশ্বে ঋণ দেবো। আমরা কিন্তু সেভাবে এগোতে শুরু করেছি। আমাদের গভর্নর সব সময় আমাদের কো-অপারেট করছেন। আমরা মেগা প্রকল্পেও অর্থায়ন করছি। চলতি অর্থবছরের মধ্যে, অর্থাৎ জুন মাসের মধ্যে রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলার হবে। টার্গেট অনুযায়ী ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে।’ অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার ২০২০’ স্মারক বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুশাসনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘১৯৯০ দশকের শেষ ভাগের কথা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রথম টার্মে তখন উন্নয়ন বাজেটের আকার কী হবে, তা নিয়ে তখনকার ভারপ্রাপ্ত পরিকল্পনামন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী— এই দুজনে দুই ধরনের মতামত দিয়েছিলেন। এবং তা ছিল লিখিত আকারে। যুক্তি সহকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যখ্যা করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন।’ ‘পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যাখ্যাটা ছিল কিছুটা সাপ্লাই সাইড ইকোনমিকসের তত্ত্বের মতো। বেশি খরচ করলে আয় বাড়বে, চাহিদা বাড়বে, প্রবৃদ্ধি বাড়বে। আর অর্থমন্ত্রীর বাজেটের বক্তব্য এবং যুক্তি ছিল যে, বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি হলে, বড় ঘাটতি অর্থায়ন হলে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী উভয় ব্যাখ্যা মনোযোগ সহকারে পড়ে আমার পরামর্শ চেয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘কী পরামর্শ আমরা দিয়েছিলাম সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু আমি তখন খুব চমকিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে, এ ধরনের অর্থনীতির তাত্ত্বিক বিতর্ক নিয়ে একজন সরকার প্রধান নিজে পর্যালোচনা করেন। ওই দিন খুব সকালে নাকি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) উঠেছিলেন। উঠে তিনি (দুই মন্ত্রীর) প্রতিবেদন পড়ে আত্মস্থ করতে চেয়েছিলেন। এরপর আমার কাছ থেকে আবার নিরপেক্ষ একটা মতামতও চাইলেন। আমার তখন মনে হয়েছিল, আমরা সুশাসন যেটা বলি সেটার একটা আদর্শ দৃষ্টান্ত এটি।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উন্নয়নে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আছে: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

আপডেট সময় : ১২:৪৫:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আমরা এখন উন্নয়নের নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছি। বিশ্ব অর্থনীতিও বদলে যাচ্ছে। উন্নয়নের পর্যায়ে আমাদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, উপযুক্ত শিক্ষা, অগ্রশিক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ তৈরি, যাতে জনমিতিক সুবিধার সুযোগ নিতে পারি। ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের দক্ষতা ও জবাবদিহি বাড়ানো, বিশ্ব আর্থিক অস্থিরতা সামাল দেওয়ার জন্য উন্নতমানের আর্থিক খাত গড়ে তোলা এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বিশ্ব বাণিজ্যের প্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতা শক্তি টিকিয়ে রাখতে বা আরও শক্তিশালী হতে এই চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের সামনে আছে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মৌলিক অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০২০’ দেওয়া হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের গলায় স্বর্ণপদক পরিয়ে দেন এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর তাকে নগদ ৫ লাখ টাকা তুলে দেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা এখন ঋণ করছি। তবে সময় বেশি বাকি নেই, ইনশাআল্লাহ, অল্প সময়ের মাঝে আমরা সারাবিশ্বে ঋণ দেবো। আমরা কিন্তু সেভাবে এগোতে শুরু করেছি। আমাদের গভর্নর সব সময় আমাদের কো-অপারেট করছেন। আমরা মেগা প্রকল্পেও অর্থায়ন করছি। চলতি অর্থবছরের মধ্যে, অর্থাৎ জুন মাসের মধ্যে রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলার হবে। টার্গেট অনুযায়ী ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে।’ অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার ২০২০’ স্মারক বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুশাসনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘১৯৯০ দশকের শেষ ভাগের কথা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রথম টার্মে তখন উন্নয়ন বাজেটের আকার কী হবে, তা নিয়ে তখনকার ভারপ্রাপ্ত পরিকল্পনামন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী— এই দুজনে দুই ধরনের মতামত দিয়েছিলেন। এবং তা ছিল লিখিত আকারে। যুক্তি সহকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যখ্যা করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন।’ ‘পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যাখ্যাটা ছিল কিছুটা সাপ্লাই সাইড ইকোনমিকসের তত্ত্বের মতো। বেশি খরচ করলে আয় বাড়বে, চাহিদা বাড়বে, প্রবৃদ্ধি বাড়বে। আর অর্থমন্ত্রীর বাজেটের বক্তব্য এবং যুক্তি ছিল যে, বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি হলে, বড় ঘাটতি অর্থায়ন হলে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী উভয় ব্যাখ্যা মনোযোগ সহকারে পড়ে আমার পরামর্শ চেয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘কী পরামর্শ আমরা দিয়েছিলাম সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু আমি তখন খুব চমকিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে, এ ধরনের অর্থনীতির তাত্ত্বিক বিতর্ক নিয়ে একজন সরকার প্রধান নিজে পর্যালোচনা করেন। ওই দিন খুব সকালে নাকি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) উঠেছিলেন। উঠে তিনি (দুই মন্ত্রীর) প্রতিবেদন পড়ে আত্মস্থ করতে চেয়েছিলেন। এরপর আমার কাছ থেকে আবার নিরপেক্ষ একটা মতামতও চাইলেন। আমার তখন মনে হয়েছিল, আমরা সুশাসন যেটা বলি সেটার একটা আদর্শ দৃষ্টান্ত এটি।’