ঢাকা ০২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রপ্তানি নীতির খসড়া অনুমোদন

  • আপডেট সময় : ০২:৫৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে ২০২১-২৪ সালের রপ্তানি নীতির খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন সরকারপ্রধান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রপ্তানি খাতে চাহিদা ও বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রণয়নের জন্য তিন বছর পর পর রপ্তানি নীতি পরিবর্তন করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে পরবর্তী তিন বছরের জন্য এ নীতি করা হল।
“ডব্লিউটিওর বিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য সেবার বহুমুখীকরণে অগ্রধিকারমূলক পণ্যসেবা খাত চিহ্নিতকরণ, রপ্তানি শিল্পের পশ্চাৎ ও অগ্র সংযোজন শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা, শ্রমনির্ভর রপ্তানিখাতে গুরুত্ব প্রদান করা, দক্ষতা উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ সহজীকরণে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের প্রতি রপ্তানি নীতিতে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।”
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ (এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন) পরবর্তী চ্যালেঞ্জ নতুন রপ্তানি নীতিতে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান সচিব।
তিনি বলেন, “পার্টিকুলারলি গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়টি এখানে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোলিউশনে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০২৬ এবং আরও তিন বছর ইইউতে আমরা যে গ্রেস পাব, তা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ইকোনমিক ডিপ্লোমেসিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের অ্যাম্বাসেডররা যারা আছেন, তারা ডিপ্লোমেটিক কাজের পাশাপাশি ইকোনোমিক প্রমোশন, ক্যাম্পেইন এক্সপোর্ট ইমপোর্টে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।”
১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। গতবছর ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুমোদন পায়।
উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাবে। অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে। এলডিসি থেকে বের হলে বাংলাদেশের কিছু বাণিজ্য ও অন্যান্য সুবিধা যে বাতিল হয়ে যাবে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় খসড়া রপ্তানি নীতিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “প্রত্যেকটি টপিক আলাদা আলাদাভাবে আলোচনা করা হয়েছে। কীভাবে আরও বেশি বিদেশি ফান্ড আনা যায়, কীভাবে এক্সপোর্টকে বৃদ্ধি করা যায়- এটাকে রাখা হয়েছে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে কিছু সম্ভাবনাময় নতুন খাত যেমন কৃত্রিম ফাইবার, হালাল পণ্য ও ফ্যাশন, মেডিকেল ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী যেমন পিপিই, এটাতো আগে ছিল না। তারপর ফ্রিল্যন্সিং খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
পাশাপাশি দেশি কাঁচামাল ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে কীভাবে রপ্তানি বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে রপ্তানি নীতিতে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন বলেন, “সমস্ত খাত যেন সুবিধা পায়, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের রপ্তানিতে সম্পৃক্ত করতে সুনির্দিষ্ট নীতি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজীকরণে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। আমরা যেন সব প্রাইমারি গুডস যাতে দেশের বাইরে পাঠিয়ে না দিই।
“যেমন একটি উদাহরণ হচ্ছে তুরস্ক আমাদের কাছ থেকে র জুট নিয়ে যায়। তারা আবার ফাইনাল প্রডাক্ট বানিয়ে ইউরোপের বাজারে দেয়। আমরা অবশ্যই র জুট এক্সপোর্ট করব; কিন্তু ফাইনাল প্রডাক্ট যদি করতে পারি, তাহলে ভ্যালু অ্যাড কিন্তু বেশি হচ্ছে। এগুলোকে প্রটেকশন দেওয়ার জন্য কিছু বিধিবিধান এখানে আনা হয়েছে।”
নিয়মিতভাবে রপ্তানি নীতি পর্যালোচনা করার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, “রপ্তানি পণ্য নিষিদ্ধ তালিকাও হালনাগাদ করা হয়েছে। আরেকটি বিষয় তিন থেকে চার মাস পর কমার্স সেক্রেটারির তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের অবজার্ভেশন নিয়ে রপ্তানি নীতি মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজন হলে পরিবর্তন করা হবে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রপ্তানি নীতির খসড়া অনুমোদন

আপডেট সময় : ০২:৫৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে ২০২১-২৪ সালের রপ্তানি নীতির খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন সরকারপ্রধান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রপ্তানি খাতে চাহিদা ও বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রণয়নের জন্য তিন বছর পর পর রপ্তানি নীতি পরিবর্তন করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে পরবর্তী তিন বছরের জন্য এ নীতি করা হল।
“ডব্লিউটিওর বিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য সেবার বহুমুখীকরণে অগ্রধিকারমূলক পণ্যসেবা খাত চিহ্নিতকরণ, রপ্তানি শিল্পের পশ্চাৎ ও অগ্র সংযোজন শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা, শ্রমনির্ভর রপ্তানিখাতে গুরুত্ব প্রদান করা, দক্ষতা উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ সহজীকরণে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের প্রতি রপ্তানি নীতিতে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।”
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ (এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন) পরবর্তী চ্যালেঞ্জ নতুন রপ্তানি নীতিতে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান সচিব।
তিনি বলেন, “পার্টিকুলারলি গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়টি এখানে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভোলিউশনে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। তারপর ২০২৬ এবং আরও তিন বছর ইইউতে আমরা যে গ্রেস পাব, তা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ইকোনমিক ডিপ্লোমেসিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের অ্যাম্বাসেডররা যারা আছেন, তারা ডিপ্লোমেটিক কাজের পাশাপাশি ইকোনোমিক প্রমোশন, ক্যাম্পেইন এক্সপোর্ট ইমপোর্টে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।”
১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) সব শর্ত পূরণ করে ২০১৮ সালে। গতবছর ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুমোদন পায়।
উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাবে। অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে। এলডিসি থেকে বের হলে বাংলাদেশের কিছু বাণিজ্য ও অন্যান্য সুবিধা যে বাতিল হয়ে যাবে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় খসড়া রপ্তানি নীতিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “প্রত্যেকটি টপিক আলাদা আলাদাভাবে আলোচনা করা হয়েছে। কীভাবে আরও বেশি বিদেশি ফান্ড আনা যায়, কীভাবে এক্সপোর্টকে বৃদ্ধি করা যায়- এটাকে রাখা হয়েছে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে কিছু সম্ভাবনাময় নতুন খাত যেমন কৃত্রিম ফাইবার, হালাল পণ্য ও ফ্যাশন, মেডিকেল ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী যেমন পিপিই, এটাতো আগে ছিল না। তারপর ফ্রিল্যন্সিং খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
পাশাপাশি দেশি কাঁচামাল ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে কীভাবে রপ্তানি বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে রপ্তানি নীতিতে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন বলেন, “সমস্ত খাত যেন সুবিধা পায়, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের রপ্তানিতে সম্পৃক্ত করতে সুনির্দিষ্ট নীতি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজীকরণে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। আমরা যেন সব প্রাইমারি গুডস যাতে দেশের বাইরে পাঠিয়ে না দিই।
“যেমন একটি উদাহরণ হচ্ছে তুরস্ক আমাদের কাছ থেকে র জুট নিয়ে যায়। তারা আবার ফাইনাল প্রডাক্ট বানিয়ে ইউরোপের বাজারে দেয়। আমরা অবশ্যই র জুট এক্সপোর্ট করব; কিন্তু ফাইনাল প্রডাক্ট যদি করতে পারি, তাহলে ভ্যালু অ্যাড কিন্তু বেশি হচ্ছে। এগুলোকে প্রটেকশন দেওয়ার জন্য কিছু বিধিবিধান এখানে আনা হয়েছে।”
নিয়মিতভাবে রপ্তানি নীতি পর্যালোচনা করার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, “রপ্তানি পণ্য নিষিদ্ধ তালিকাও হালনাগাদ করা হয়েছে। আরেকটি বিষয় তিন থেকে চার মাস পর কমার্স সেক্রেটারির তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের অবজার্ভেশন নিয়ে রপ্তানি নীতি মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজন হলে পরিবর্তন করা হবে।”