ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ

  • আপডেট সময় : ১০:০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : উচ্চ রক্তচাপের কোনো উপসর্গ থাকে না। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। তাই এই রোগ হওয়ার কারণগুলো জানা থাকলে আগেভাগেই সাবধান হওয়া যায়। কারণ রক্তচাপ স্বাভাবিক না থাকলে আর অবহেলা করলে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। রক্তনালী সরু হয়ে গেলে কিংবা এর স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে গেলে সেই রক্তনালীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত রক্ত স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গতিতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এতে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে রক্তচাপ, স্ট্রোক, ‘ডিমেনশা’ বা স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা
ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘কার্ডিওলজি কনসালট্যান্টস অফ ফিলাডেলফিয়া’র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিরাভ সেথ বলেন, ‘গড় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ হল অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। শরীরচর্চার অভাব, স্থূলতা, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান, ঘুমের ঘাটতি আর প্রচ- মাত্রায় মানসিক চাপ- এসব মিলেই জীবনযাত্রা হয়ে উঠছে অস্বাস্থ্যকর।”
বার্ধক্য
ডা. লিঅ্যান পোস্টন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইমপ্যাক্ট ফিটনেস’য়ের ‘মেডিকাল অ্যাডভাইজর’ বলেন, “শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো বয়স। ৪৫ বছর পার হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়া।” যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’য়ের করা জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সি পুরুষের মধ্যে ৬৪ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন। এজন্য রক্তচাপের দিকে প্রতিনিয়ত নজর রাখতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শের আওতায় থাকতে হবে এবং তাদের পরামর্শ শুনতে হবে।
অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ
‘কার্ডিওলজি কনসালট্যান্টস অফ ফিলাডেলফিয়া’র আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যালেক্সান্ডার মোর্স বলেন, “উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়া অন্যতম কারণ হল অতিরিক্ত লবণ খাওয়া। খাবার সংরক্ষণ করতে, সুস্বাদু করতে লবণ ব্যবহার হয়। অর্থাৎ লবণ সব খাবারেই আছে, এমনকি স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোতেও।” “আমারে রোগীদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস পর্যালোচনা করে দেখেছি সিংহভাগেরই প্রচুর লবণ খাওয়া হয় কিন্তু তারা নিজেও সেটা বোঝেন না। মানুষ মনে করে বাড়িতে কাঁচা লবণ খাওয়াই শুধু ক্ষতিকর। তবে পরোক্ষভাবে কতটা লবণ পেটে যাচ্ছে সেদিকে নজর থাকে না।”
অলস জীবন
যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্যাসিফিক অ্যানালিটিকস’য়ের ‘ফিজিশিয়ান’ ডা. মার্ক ডেভিস বলেন, “কোনো স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বা শুয়ে কাটালে রক্তচাপ বাড়বে। শারীরিক নড়াচড়া না থাকলে হৃদযন্ত্রের রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা কমে। ফলে সেগুলো শক্ত হতে থাকে আর রক্তচাপ বাড়ে।”
স্থূলতা
পোস্টন বলেন, “ওবেসিটি’ বা স্থূলতা শরীরের জন্য বিভিন্নভাবে ক্ষতিকর। এটি শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়ায়, ফলাফল হিসেবে বাড়ে রক্তচাপ। একজন মানুষের ওজন যদি মাত্র আট পাউন্ড কমানো সম্ভব হয় তবে তার উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা কমে যায় ৫০ শতাংশ।”
অতিরিক্ত মদ্যপান
জনস হপকিনস মেডিসিন’য়ের তথ্যানুসারে, সামান্য পরিমাণে মদ্যপান রক্তনালীকে শিথিল করে। তবে বেশি পান করলেই হয় উল্টোটা। তবে মদ্যপানের আরও অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। তাই এই বদভ্যাস ত্যাগ করতে পারলেই সুস্থ দীর্ঘজীবী হওয়া সম্ভব।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ

আপডেট সময় : ১০:০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : উচ্চ রক্তচাপের কোনো উপসর্গ থাকে না। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। তাই এই রোগ হওয়ার কারণগুলো জানা থাকলে আগেভাগেই সাবধান হওয়া যায়। কারণ রক্তচাপ স্বাভাবিক না থাকলে আর অবহেলা করলে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। রক্তনালী সরু হয়ে গেলে কিংবা এর স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে গেলে সেই রক্তনালীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত রক্ত স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গতিতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এতে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে রক্তচাপ, স্ট্রোক, ‘ডিমেনশা’ বা স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা
ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘কার্ডিওলজি কনসালট্যান্টস অফ ফিলাডেলফিয়া’র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিরাভ সেথ বলেন, ‘গড় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ হল অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। শরীরচর্চার অভাব, স্থূলতা, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান, ঘুমের ঘাটতি আর প্রচ- মাত্রায় মানসিক চাপ- এসব মিলেই জীবনযাত্রা হয়ে উঠছে অস্বাস্থ্যকর।”
বার্ধক্য
ডা. লিঅ্যান পোস্টন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইমপ্যাক্ট ফিটনেস’য়ের ‘মেডিকাল অ্যাডভাইজর’ বলেন, “শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো বয়স। ৪৫ বছর পার হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়া।” যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’য়ের করা জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সি পুরুষের মধ্যে ৬৪ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন। এজন্য রক্তচাপের দিকে প্রতিনিয়ত নজর রাখতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শের আওতায় থাকতে হবে এবং তাদের পরামর্শ শুনতে হবে।
অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ
‘কার্ডিওলজি কনসালট্যান্টস অফ ফিলাডেলফিয়া’র আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যালেক্সান্ডার মোর্স বলেন, “উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়া অন্যতম কারণ হল অতিরিক্ত লবণ খাওয়া। খাবার সংরক্ষণ করতে, সুস্বাদু করতে লবণ ব্যবহার হয়। অর্থাৎ লবণ সব খাবারেই আছে, এমনকি স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোতেও।” “আমারে রোগীদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস পর্যালোচনা করে দেখেছি সিংহভাগেরই প্রচুর লবণ খাওয়া হয় কিন্তু তারা নিজেও সেটা বোঝেন না। মানুষ মনে করে বাড়িতে কাঁচা লবণ খাওয়াই শুধু ক্ষতিকর। তবে পরোক্ষভাবে কতটা লবণ পেটে যাচ্ছে সেদিকে নজর থাকে না।”
অলস জীবন
যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্যাসিফিক অ্যানালিটিকস’য়ের ‘ফিজিশিয়ান’ ডা. মার্ক ডেভিস বলেন, “কোনো স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বা শুয়ে কাটালে রক্তচাপ বাড়বে। শারীরিক নড়াচড়া না থাকলে হৃদযন্ত্রের রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা কমে। ফলে সেগুলো শক্ত হতে থাকে আর রক্তচাপ বাড়ে।”
স্থূলতা
পোস্টন বলেন, “ওবেসিটি’ বা স্থূলতা শরীরের জন্য বিভিন্নভাবে ক্ষতিকর। এটি শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়ায়, ফলাফল হিসেবে বাড়ে রক্তচাপ। একজন মানুষের ওজন যদি মাত্র আট পাউন্ড কমানো সম্ভব হয় তবে তার উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা কমে যায় ৫০ শতাংশ।”
অতিরিক্ত মদ্যপান
জনস হপকিনস মেডিসিন’য়ের তথ্যানুসারে, সামান্য পরিমাণে মদ্যপান রক্তনালীকে শিথিল করে। তবে বেশি পান করলেই হয় উল্টোটা। তবে মদ্যপানের আরও অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। তাই এই বদভ্যাস ত্যাগ করতে পারলেই সুস্থ দীর্ঘজীবী হওয়া সম্ভব।