নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ভেতরে উচ্চ আদালতের বিচারকদের ভ্রমণ ভাতা বাড়াতে সংসদে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল শনিবার ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিল-২০২১’ সংসদে তোলেন। ১৯৭৬ সালের এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত ভাতা বাড়ানোর জন্য খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতের একজন বিচারক সুপ্রিক কোর্ট সদরদপ্তরের বাইরে দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক চারশ টাকা করে ভাতা পান। নতুন আইনের খসড়ায় তা এক হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো বিচারক দায়িত্ব পালনে সদর দপ্তরের বাইরে থাকলে ছুটির দিনসহ দৈনিক ১৪০০ টাকা হারে ভাতা পাবেন।
বিলে বলা হয়েছে, সড়ক পথে ভ্রমণের জন্য একজন বিচারক প্রতি কিলোমিটারে তিন টাকা ৭৫ পয়সা হারে ভাতা পাবেন। বর্তমানে এই ভাতার হার প্রতি কিলোমিটার এক টাকা। এছাড়া রেলপথ, নৌপথ ও আকাশপথে ভ্রমণের জন্যও বিভিন্ন হারে ভাতার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, যেক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য একাধিক যাত্রাপথ রয়েছে, সেক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত এবং স্বল্প ব্যয়ের ভ্রমণ ভাতা দাবি করতে হবে। কোনো বিচারক ছুটিতে গেলে, ছুটি থেকে ফিরে এলে কিংবা বিদেশে ছুটি কাটিয়ে আবার দায়িত্বে যোগ দেওয়ার জন্য ফিরলে, কিংবা অবসরের পর নিজের ঠিকানায় ফেরার সময় কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তাও বলা হয়েছে নতুন আইনের প্রস্তাবে।
পাবেন নিরাপত্তা ও কুক ভাতা : উচ্চ আদালতের বিচারকদের বেতন সংক্রান্ত সামরিক আমলের অধ্যাদেশ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে আরেকটি প্রস্তাব তোলা হয়েছে সংসদে। বিচারকদের বেতন না বাড়লেও কিছু ভাতা যোগ হয়েছে সেখানে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১ সংসদে তোলেন। ১৯৭৮ সালের ‘সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস)’ বাতিল করে নত্নু আইন করার জন্য বিলটি তোলা হয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিচারকদের বেতন ও ভাতা বাড়ান হয়। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি এক লাখ ১০ হাজার টাকা, আপিল বিভাগের বিচারক এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক ৯৫ হাজার বেতন পান। এছাড়া বেতনের ৫০ শতাংশ হারে বিশেষ ভাতা পান তারা, যা নতুন আইনেও বলবৎ থাকছে। বিলে প্রধান বিচারপতির ‘নিয়ামক ভাতা’ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রধানবিচারপতি মাসে ১২ হাজার টাকা হারে এই ভাতা পান। নতুন আইনে তা ২৫ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে। আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকরা আগের মতই আট হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা পাবেন। আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের একজন বিচারক তাদের বাসায় একজন বাবুর্চির পরিবর্তে প্রতি মাসে ১৬ হাজার টাকা করে ‘কুক ভাতা’ পাবেন। বর্তমান আইনে একজন বিচারক ‘ডমেস্টিক এইড’ ভাতা পান। খসড়া আইনে সেটা রাখা হয়নি। বিলে বলা হয়েছে, বিচারকরা তাদের তাদের ইয়ারমার্কড, স্বতন্ত্র, একক বাসা, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী পদের সুবিধার পরিবর্তে প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা সিকিউরিটি ভাতা প্রাপ্য হবেন।