ঢাকা ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

ঈদে নারীরা খুঁজছেন গ্রীষ্মের পোশাক

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার যেন গরম একটু আগেই চলে এসেছে, রোজার ঈদও বছরের অন্যতম উষ্ণ মাস এপ্রিলের শুরুতে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঈদ কেনাকাটায় গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করছেন নারীরা, বিক্রেতারাও আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে পোশাক নিয়ে আসার কথা বলেছেন। রাজধানীর বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, ধানমণ্ডির শপিং মল রাপা প্লাজা, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট ও মিরপুরের বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেল, তীব্র গরমে হালকা কাজের সুতির পোশাক খুঁজছেন ক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, এবার অল্প বয়সীরা টপস, মধ্য বয়সীরা থ্রি পিস আর বেশি বয়সী নারীরা শাড়ি কিনছেন। তবে সব বয়সীরাই প্রাধান্য দিচ্ছেন আরামকে। ধানমন্ডির রাপা প্লাজার শাড়ির দোকান নীলআঁচল থেকে উপহারের শাড়ি কিনছিলেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সনিয়া আক্তার। তিনি বলেন, তার বয়স্ক আত্মীয়দের উপহার দেওয়ার জন্য সুতি শাড়ি কিনছেন তিনি। “গরম বেশি তো, এ কারণে কাতান বা অন্য শাড়ি নিইনি। উনারা সুতি কাপড়ে আরাম পাবেন। আর নিজের জন্য বুটিক্সের থ্রি পিস কিনব। ঈদে ডিউটি থাকবে, ক্যারি করতে সুবিধা হবে। এগুলো অনেক আরামদায়ক হয় গরমের মধ্যে।” দোকানটিতে শাড়ির পাশাপাশি থ্রি পিসও বিক্রি হয়। বিক্রেতা সুরুজ আলম বলেন, দোকানে খুব কম ক্রেতা আসছে; তবে যারা আসছেন, তারা শাড়ি, থ্রি পিস দুটো মিলিয়েই কেনা-কাটা করছেন। “এবার মেয়েরা থ্রি পিস কিনতেছে, দেশি আর পাকিস্তানি থ্রি পিস এবার বেশি চলতেছে। আর বয়স্কদের মধ্যে শাড়ি কেনার আগ্রহ বেশি। সবাই গরমটা মাথায় রেখে কাপড় কিনতেছে।” ‘ম্যাচিং ফেয়ারে’ বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নকশার থ্রি পিস আর গজ কাপড়। দোকানটিতে মধ্যবয়সী নারীদের থ্রি পিস কেনার জন্য ভিড় করতে দেখা গেল।

দোকানে পোশাক কিনতে আসা মাহমুদা আক্তার বলেন, “খুঁজে খুঁজে হালকা কাজের মধ্যে পাকিস্তানি থ্রি পিস কিনতেছি। কাপড়টা সফট, দেখতেও সুন্দর। অতিরিক্ত গর্জিয়াসও না, আবার সিম্পলও না। একটু বেশি সময় যাতে পরে থাকতে পারি সেজন্যই এমনটা কেনা।” ক্রেতাদের মধ্যে এবার পাকিস্তানি ও দেশি থ্রি পিসের চাহিদা বেশি থাকার কথা বললেন দোকানটির বিক্রেতা মো. ইমন। তিনি বলেন, “এখন গজ কাপড় কেউ কিনছে না, থ্রি পিসই নিচ্ছে সবাই। যাদের বয়স কম তারা পাকিস্তানি আর বয়স যাদের একটু দেশি তারা কটনের মধ্যে থ্রি পিস কিনতেছে। আমরাও গরমে পরতে কষ্ট হবে না এমন পোশাক নিয়ে আসছি।” ঈদের জন্য মিরপুর ১ নম্বরের আঙ্গিনা মেগামলে ওয়ান পিস, থ্রি পিস আনা হয়েছে। আঙ্গিনার একজন স্বত্বাধিকারী মিন্টু সরকার বলেন, “আমরা সবসময় আরামদায়ক পোশাক নিয়ে আসার চেষ্টা করি, এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

যে গরমৃ না হলেও তো উৎসবটা উপভোগ করতে পারবে না, স্বাচ্ছন্দ বোধ করেব না।” ঈদ উপলক্ষে ‘এমব্রেলা’ নারীদের জন্য নিয়ে এসেছে বিভিন্ন ডিজাইনের টিউনিক, টপস, টু পিস, থ্রি পিস, গাউন, শাড়ি। এমব্রেলার বসুন্ধরা শাখার বিক্রয়কর্মী রোজা রহমান রোকসানা বলেন, “আরামদায়ক হবে এমন বিবেচনা করেই পোশাকগুলো আনা হয়েছে।” বসুন্ধরা শপিং মল থেকে নিজের ও আত্মীয়দের জন্য পাকিস্তানি থ্রি পিস কিনেছেন মেহনাজ সুলতানা। তিনি বলেন, “এটা পরলে গরম লাগবে না, তবে সুন্দর আছে। কাপড় কোয়ালিটি ভালো, বহরেও অনেক বেশি থাকে।

কালারও ভালো, সব মিলিয়ে বানাতে সুবিধা। এসব কারণে কেনা আরকি।” মধ্যবয়সী নারীরা পাকিস্তানি থ্রি পিস ও কটনের মধ্যে ভারি কাজের থ্রি পিস কিনছে বলে জানান মহাখালীর এসকেএস শপিং মলের ইনসাফ ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড এর ব্যবস্থাপক মো. আবু ইউসুফ বলেন। তিনি বলেন, “সবাই আরামের পোশাকই খুঁজেতেছে। আর পাকিস্তানি প্রডাক্ট অ্যাভেইলেবল হওয়ার পর এগুলাই সবাই কিনছে।” জেন্টল পার্ক মেয়েদের জন্য নিয়ে এসেছে টপস, টু পিস ও থ্রি পিস। তাদের বসুন্ধরা শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, “শীত যেতে যেতেই রমজান চলে এসেছে; গরমও আগে চলে এসেছে। এজন্য প্রডাক্টের ভ্যারিয়েশন গরমকে মাথায় রেখে করা হয়েছে। আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের জন্য কেনাকাটা করতে এসে সাদিয়া রহমান জেরিন বললেন, স্বস্তিকে প্রাধান্য দিয়ে এবার তিনি ‘রুচিসম্মত’ পোশাক কিনবেন। “গরমে যে পোশাক পরা যাবে না সেই পোশাক কেনা মানে টাকা জলে ফেলা। এসব কারণে দেশি বুটিক্সের ওয়ান পিস কিনব ভাবছি।”

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঈদে নারীরা খুঁজছেন গ্রীষ্মের পোশাক

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার যেন গরম একটু আগেই চলে এসেছে, রোজার ঈদও বছরের অন্যতম উষ্ণ মাস এপ্রিলের শুরুতে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঈদ কেনাকাটায় গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করছেন নারীরা, বিক্রেতারাও আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে পোশাক নিয়ে আসার কথা বলেছেন। রাজধানীর বিপণিবিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স, ধানমণ্ডির শপিং মল রাপা প্লাজা, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট ও মিরপুরের বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেল, তীব্র গরমে হালকা কাজের সুতির পোশাক খুঁজছেন ক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, এবার অল্প বয়সীরা টপস, মধ্য বয়সীরা থ্রি পিস আর বেশি বয়সী নারীরা শাড়ি কিনছেন। তবে সব বয়সীরাই প্রাধান্য দিচ্ছেন আরামকে। ধানমন্ডির রাপা প্লাজার শাড়ির দোকান নীলআঁচল থেকে উপহারের শাড়ি কিনছিলেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সনিয়া আক্তার। তিনি বলেন, তার বয়স্ক আত্মীয়দের উপহার দেওয়ার জন্য সুতি শাড়ি কিনছেন তিনি। “গরম বেশি তো, এ কারণে কাতান বা অন্য শাড়ি নিইনি। উনারা সুতি কাপড়ে আরাম পাবেন। আর নিজের জন্য বুটিক্সের থ্রি পিস কিনব। ঈদে ডিউটি থাকবে, ক্যারি করতে সুবিধা হবে। এগুলো অনেক আরামদায়ক হয় গরমের মধ্যে।” দোকানটিতে শাড়ির পাশাপাশি থ্রি পিসও বিক্রি হয়। বিক্রেতা সুরুজ আলম বলেন, দোকানে খুব কম ক্রেতা আসছে; তবে যারা আসছেন, তারা শাড়ি, থ্রি পিস দুটো মিলিয়েই কেনা-কাটা করছেন। “এবার মেয়েরা থ্রি পিস কিনতেছে, দেশি আর পাকিস্তানি থ্রি পিস এবার বেশি চলতেছে। আর বয়স্কদের মধ্যে শাড়ি কেনার আগ্রহ বেশি। সবাই গরমটা মাথায় রেখে কাপড় কিনতেছে।” ‘ম্যাচিং ফেয়ারে’ বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নকশার থ্রি পিস আর গজ কাপড়। দোকানটিতে মধ্যবয়সী নারীদের থ্রি পিস কেনার জন্য ভিড় করতে দেখা গেল।

দোকানে পোশাক কিনতে আসা মাহমুদা আক্তার বলেন, “খুঁজে খুঁজে হালকা কাজের মধ্যে পাকিস্তানি থ্রি পিস কিনতেছি। কাপড়টা সফট, দেখতেও সুন্দর। অতিরিক্ত গর্জিয়াসও না, আবার সিম্পলও না। একটু বেশি সময় যাতে পরে থাকতে পারি সেজন্যই এমনটা কেনা।” ক্রেতাদের মধ্যে এবার পাকিস্তানি ও দেশি থ্রি পিসের চাহিদা বেশি থাকার কথা বললেন দোকানটির বিক্রেতা মো. ইমন। তিনি বলেন, “এখন গজ কাপড় কেউ কিনছে না, থ্রি পিসই নিচ্ছে সবাই। যাদের বয়স কম তারা পাকিস্তানি আর বয়স যাদের একটু দেশি তারা কটনের মধ্যে থ্রি পিস কিনতেছে। আমরাও গরমে পরতে কষ্ট হবে না এমন পোশাক নিয়ে আসছি।” ঈদের জন্য মিরপুর ১ নম্বরের আঙ্গিনা মেগামলে ওয়ান পিস, থ্রি পিস আনা হয়েছে। আঙ্গিনার একজন স্বত্বাধিকারী মিন্টু সরকার বলেন, “আমরা সবসময় আরামদায়ক পোশাক নিয়ে আসার চেষ্টা করি, এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

যে গরমৃ না হলেও তো উৎসবটা উপভোগ করতে পারবে না, স্বাচ্ছন্দ বোধ করেব না।” ঈদ উপলক্ষে ‘এমব্রেলা’ নারীদের জন্য নিয়ে এসেছে বিভিন্ন ডিজাইনের টিউনিক, টপস, টু পিস, থ্রি পিস, গাউন, শাড়ি। এমব্রেলার বসুন্ধরা শাখার বিক্রয়কর্মী রোজা রহমান রোকসানা বলেন, “আরামদায়ক হবে এমন বিবেচনা করেই পোশাকগুলো আনা হয়েছে।” বসুন্ধরা শপিং মল থেকে নিজের ও আত্মীয়দের জন্য পাকিস্তানি থ্রি পিস কিনেছেন মেহনাজ সুলতানা। তিনি বলেন, “এটা পরলে গরম লাগবে না, তবে সুন্দর আছে। কাপড় কোয়ালিটি ভালো, বহরেও অনেক বেশি থাকে।

কালারও ভালো, সব মিলিয়ে বানাতে সুবিধা। এসব কারণে কেনা আরকি।” মধ্যবয়সী নারীরা পাকিস্তানি থ্রি পিস ও কটনের মধ্যে ভারি কাজের থ্রি পিস কিনছে বলে জানান মহাখালীর এসকেএস শপিং মলের ইনসাফ ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড এর ব্যবস্থাপক মো. আবু ইউসুফ বলেন। তিনি বলেন, “সবাই আরামের পোশাকই খুঁজেতেছে। আর পাকিস্তানি প্রডাক্ট অ্যাভেইলেবল হওয়ার পর এগুলাই সবাই কিনছে।” জেন্টল পার্ক মেয়েদের জন্য নিয়ে এসেছে টপস, টু পিস ও থ্রি পিস। তাদের বসুন্ধরা শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, “শীত যেতে যেতেই রমজান চলে এসেছে; গরমও আগে চলে এসেছে। এজন্য প্রডাক্টের ভ্যারিয়েশন গরমকে মাথায় রেখে করা হয়েছে। আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের জন্য কেনাকাটা করতে এসে সাদিয়া রহমান জেরিন বললেন, স্বস্তিকে প্রাধান্য দিয়ে এবার তিনি ‘রুচিসম্মত’ পোশাক কিনবেন। “গরমে যে পোশাক পরা যাবে না সেই পোশাক কেনা মানে টাকা জলে ফেলা। এসব কারণে দেশি বুটিক্সের ওয়ান পিস কিনব ভাবছি।”