সৈয়দ ফারুক হোসেন
দুর্ঘটনা মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটু অসাবধানতার আভাস পেলেই হুটহাট করে সামনে চলে আসে। তখন আর কিছুই করার থাকে না। কিন্তু যার যা করণীয় তা নিয়ে যদি দুর্ঘটনার আগেই কিছু ভাবা যায় তা হলো সচেতনতা। একটু সচেতনতা আমাদের বাঁচাতে পারে অনাকাক্সিক্ষত এসব দুর্ঘটনার হাত থেকে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের একটু অসাবধানতা কেড়ে নিতে পারে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের প্রাণ। দুর্ঘটনায় যারা মারা যান তারা একেবারেই চলে যান, যারা আহত হন তারা হয়তো পরবর্তীতে সুস্থ হন। সারা বছর গ্রামের বাড়ি যেতে না পারলেও ঈদে মানুষ ঘরমুখো হয় নাড়ির টানে, শেকড়ের সন্ধানে- যা এক অনির্বাণ আবেদন। এ দেশের প্রায় প্রতিটি উৎসবই ধর্মপ্রাণ মানুষ সবাইকে নিয়ে উদযাপন করে, অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে। কিন্তু বিধিবাম হয়ে যায়, সড়কে বেহাল দশার কারণে মøান হয় আনন্দ-উৎসব। আমাদের সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ হওয়া সত্ত্বেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবের কারণে মানুষের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি আদৌ কমাতে পারেনি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশজুড়ে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে অন্তত দেশের ছয় জেলায় বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষের এবার ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন। সড়ক সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবেই নির্বিঘ্ন যাত্রা সম্ভব। এবারের ঈদযাত্রা হোক সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত। একটি প্রাণও যেন অকালে ঝরে না যায় এমনটিই প্রত্যাশা আমাদের। ঈদ সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন নগরবাসী। শ্রেণি, ধর্ম-বর্ণ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব মানুষ ভাগাভাগি করে নেয় ঈদের আনন্দ। দীর্ঘ সময় পরিবার থেকে আলাদা থাকার পর ঈদেই তো কাছের মানুষদের কাছে যাওয়া হয়, আনন্দে কাটানো হয় কয়েকটা দিন। ঈদে সবারই থাকে বাড়ি ফেরার তাড়াহুড়া। ঈদ মানেই প্রিয়জনের সঙ্গে মিলন। আর সেই মিলনের প্রথম ধাপ হলো ঈদে বাড়ি ফেরা। শহরের ব্যস্ত জীবন ছেড়ে গ্রামের বাড়ি বা পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার আনন্দ অনেকের জন্যই ঈদের সবচেয়ে বড় উপহার। এবার সরকার ঈদুল আজহার ছুটি ১০ দিন করেছে। স্বাভাবিক কারণেই অনেক আগে থেকেই মহাসড়কে চাপ বাড়বে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে বের হওয়ার রাস্তায় চাপ থাকবে সবচেয়ে বেশি। ঈদে যানজটপ্রবণ স্থান হিসেবে ঢাকার মহাখালী, আব্দুল্লাহপুর, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, ডেমরা, সায়েদাবাদ, শ্যামপুর, কদমতলী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজ, চট্টগ্রামের মিরসরাই, ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি, ফতুল্লা, কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, যমুনা সেতুর পূর্বপাড়, এলেঙ্গা, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, ঢাকা-মাওনা ফেরিঘাটসহ অন্তত ৩০টি স্পটকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুপরিকল্পিতভাবে যানজট কন্ট্রোল করা সম্ভব হলে মানুষের কষ্ট অনেক কমে যাবে। এই ঈদে নগরবাসীর গ্রামমুখী হওয়ার সামাজিক, পারিবারিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বেশ কিছু কারণ রয়েছে। মুসলমানের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ। স্বাভাবিকভাবেই এ উৎসব ঘিরে থাকে আবেগ। সে আবেগের টানেই মানুষের ঘরে ফেরা।
ঈদ মানেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা। কর্মব্যস্ত জীবনের একঘেয়েমি কাটিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গ পাওয়ার জন্য সারা দেশের মানুষ অপেক্ষা করে থাকে এই বিশেষ মুহূর্তের জন্য। কিন্তু সেই স্বপ্নময় যাত্রা যদি দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়, যদি বাড়ি ফেরার পথ হয় অনিশ্চয়তার আরেক নাম, তা হলে ঈদের আনন্দ পূর্ণতা পায় না। নিরাপদে বাড়ি ফেরার প্রত্যাশা থাকে সবার। এই আনন্দকে আরও পূর্ণতা দিতে এবং দুর্ভোগ কমানোর জন্য টিকেট কেনাবেচা ও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই, নৌপথে অনিরাপদ যাত্রা- এসব মিলিয়ে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরা যেন আতঙ্কের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজটের পাশাপাশি সড়ক মহাসড়কের অপরাধ রোধে বাস, লঞ্চ ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, ছুপার্টি ও ছিনতাইকারীদের তৎপরতা রোধে সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রীদের সচেতনতা বাড়াতেও টার্মিনালগুলোতে নানামুখী প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মহাসড়কে পরিবহন ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানি বন্ধে টহল জোরদার করতে হবে। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে বাস ও ট্রেনের টিকেট কাউন্টারগুলোয়। বাড়তি চাপ আর ঝুঁকি এড়াতে যারাই সুযোগ পেয়েছেন, ছুটছেন বাড়ির পথে। আমাদের সবার চাওয়া একটাই- বাড়ি ফেরা হোক স্বস্তির, নয় আতঙ্কের। ঈদের ছুটিতে দেশের মহাসড়কগুলোতে গাড়ির চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। শহর থেকে লাখ লাখ মানুষ গ্রামের পথে ছুটে যায়। ফলে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর ঈদের সময় দেশের সড়ক, রেল ও নৌপথে ব্যাপক ভোগান্তি দেখা যায়। যানজট, বাস-ট্রেন-লঞ্চের অতিরিক্ত ভিড়, সড়ক দুর্ঘটনা, চড়া ভাড়া আদায়, ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা- এসব যেন ঈদযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লঞ্চ সড়ক ও নৌপথ থেকে সরানো জরুরি।
নাড়ির টানে ব্যস্ততম নগর ছেড়ে রেল, নৌ ও সড়ক পথে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন সবাই। এ ছাড়া প্রতি বছর দেখা যায়, ঈদের সময় বিভিন্ন চক্র যেমন ছিনতাইকারী, মলম পার্টি, গামছা পার্টির আবির্ভাব হয়। বিশেষ করে মলম পার্টির প্রাদুর্ভাব ঈদের সময় বেশি দেখা যায়। তারা খাবারের মধ্যে নেশাজাতীয় বা চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে অর্থ, ফোন এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়াই তাদের কাজ। ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিয়মমাফিক অতিরিক্ত পরিবহন সেবা চালু করা বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এত মানুষের একসঙ্গে ঘরে ফেরার জন্য প্রয়োজন নিরাপদ সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থা। প্রতি বছরই ঈদে নগরবাসী মানুষের বাড়ি ফেরার সময় পড়তে হয় নানা রকম ভোগান্তিতে। অনেকের তো বাড়িই ফেরা হয় না। এক্ষেত্রে যানজটের উল্লেখযোগ্য মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামানো, যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো, অনেক সময় সড়কগুলোর দুরবস্থা এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন চলাচল দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যানজট কমাতে গাড়ি চলাচল পরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মহাসড়কে ছোট যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধ করতে হবে। হাইওয়ে পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ঈদের সময় লঞ্চ ও ফেরিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী ওঠানো হয়। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জামের অভাব, নৌযানের অপ্রতুলতা, আবহাওয়া উপেক্ষা করে লঞ্চ ছেড়ে যাওয়া। এতে নৌপথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই নৌযান প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ফলে বহু প্রাণহানি ঘটে।
এদিকে অনেকে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই নদীপথে যাত্রা করে; যা বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। চালকদের অশুভ প্রতিযোগিতা, নৌপথে বিরাজমান নৈরাজ্য দূর না করা, নৌযান চালকদের দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলা, অদক্ষতা, ফিটনেসবিহীন নৌযান চলাচল করার সুযোগ পাওয়াসহ বিভিন্ন নৌযানে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করাই হচ্ছে এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। এ ছাড়া নজর রাখতে হবে রেলপথের দিকেও। রেলপথ তুলনামূলক নিরাপদ হলেও ঈদের সময় টিকেট পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেক যাত্রী টিকেট ছাড়াই ট্রেনে উঠে অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাতায়াত করে। ফলে অনেক সময় ছাদে যাত্রা করার মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রয়োজনে বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। টিকেট কালোবাজারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ট্রেনের সময়সূচি যথাযথভাবে মানতে হবে। চালক, যাত্রী ও পরিবহন মালিকদেরও সচেতন হতে হবে। ঈদের আনন্দ তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন সবাই নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারবে এবং পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে পারবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঈদের ছুটিতে সড়ক-মহাসড়কে যেসব মর্মান্তিক দুঘটনা ঘটনা ঘটে থাকে, তা মূলত যানবাহনের দ্রুতগতির জন্য হয়ে থাকে। চালকদের পেশাগত দক্ষতারও অভাব রয়েছে, যা উন্নয়ন করা অপরিহার্য। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছিল ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, মৃত্যু বেড়েছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, আর আহতের সংখ্যা বেড়েছিল ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ। দুর্ঘটনা মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটু অসাবধানতার আভাস পেলেই হুটহাট করে সামনে চলে আসে। তখন আর কিছুই করার থাকে না। কিন্তু যার যা করণীয়টুকু নিয়ে যদি দুর্ঘটনার আগেই কিছু ভাবা যায় তা হলো সচেতনতা। একটু সচেতনতা আমাদের বাঁচাতে পারে অনাকাক্সিক্ষত এসব দুর্ঘটনার হাত থেকে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমাদের একটু অসাবধানতা কেড়ে নিতে পারে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের প্রাণ। দুর্ঘটনায় যারা মারা যান তারা একেবারেই চলে যান, যারা আহত হন তারা হয়তো পরে সুস্থ হন। কিন্তু যাদের অঙ্গহানি ঘটছে তাদের বাকি জীবনে আর সুস্থ হওয়ার বা হারানো অঙ্গ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাদের জীবনটা নির্মম হয়ে পড়ে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে নিরাপদ ঈদযাত্রা শুধু সরকারের একার দায়িত্ব নয়। এটি আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্ভব। তাই আমাদের সবাইকে আরও সচেতন, দায়িত্বশীল হতে হবে যেন বাড়ি ফেরা হয় স্বস্তিতে, আতঙ্কে নয়।
বাংলাদেশের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হলো সড়ক পথ। অধিকাংশ মানুষ সড়ক পথেই যাতায়াত করতে পছন্দ করেন। অথচ এই ঈদের সময় আমাদের দেশের সড়কগুলো যেন হয়ে উঠছে একেকটি মৃত্যুফাঁদ। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। কর্মব্যস্ত নগরী থেকে কয়েক দিনের জন্য হলেও প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে চিরচেনা সেই নিজ বাড়িতে ছুটে যায় সব স্তরের মানুষ। মূলত নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষের আসল যুদ্ধ শুরু হয় পবিত্র ঈদ এলেই। এ সময় আনন্দযাত্রা ভোগান্তি দিয়েই শুরু হয় মানুষের। যত কষ্টই হোক না কেন নিজের জন্মস্থান, গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপনে উদগ্রীব মানুষগুলো ছুটে আসছেন নিজ গন্তব্যে। পথে যতই ভোগান্তি ও দুর্ভোগ হোক না কেন পরিবার-স্বজনদের দেখা মিললে নিমিষেই মুছে যায় সব ব্যথা।
লেখক: কলামিস্ট
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ