ঢাকা ০২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

ঈদযাত্রায় ৪০ লাখ মানুষের চাপ নিতে হবে সরদঘাটকে

  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২
  • ১৪২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত দুই বছর মহামারির কারণে ঈদযাত্রায় মানুষের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী দুই মহানগরীসহ তিন জেলা থেকে বাড়ি ফেরার প্রবণতা ছিল কম। এবার করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির মতে, এবার ঈদ উপলক্ষে ঢাকার সদরঘাটে ৪০ লাখ মানুষের চাপ থাকবে এবং এই চাপ সামালানোর মতো নৌযান না থাকায় ঈদ যাত্রায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা হতে পারে।জাতীয় কমিটি বলছে, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরসহ এ তিন জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ নৌপথে ঘরে ফিরবে। মাত্র ১২ দিনে উপকূলীয় জেলামুখী এত যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক নৌযান না থাকায় এই চাপ সৃষ্টি হবে। এর ফলে লঞ্চের ডেকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ছাড়াও ছাদে যাত্রী বহন করতে হবে। আর এতেই বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা হতে পারে।
গত মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। এতে বলা হয়, প্রতি ঈদে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের চারটি সিটি করপোরেশনসহ এ তিন জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্বজনদের কাছে যায়। তাদের ২৫ শতাংশ যায় নৌপথে আর সড়ক ও রেলপথে যায় যথাক্রমে ৫৫ ও ২০ শতাংশ। এই হিসাবে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ লঞ্চসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযানে যাতায়াত করে। তবে নিয়মিত দুর্ঘটনা, দূরপাল্লার সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বেহাল দশা, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের প্রধান দুটি মাধ্যম শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরিস্বল্পতা ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকেই সড়কপথ এড়ানোর চেষ্টা করবেন। এতে নৌপথে যাত্রীসংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০ লাখ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআইডব্লিউটিএ গত ২১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ থেকে ছয়টি নৌপথের ৭০টি ছোট লঞ্চ চলাচল স্থগিত রেখেছে। তাই এবার ঈদে ৪০ লাখ ঘরমুখী নৌযাত্রীর একমাত্র রুট হবে সদরঘাট টার্মিনাল। বিলাসবহুল ও বড় আয়তনের লঞ্চ চলাচলের জন্য ঢাকা থেকে বিভিন্ন উপকূলের বৈধ নৌপথের সংখ্যা ৪২টি হলেও যাত্রীস্বল্পতা ও নাব্যতা সংকটের কারণে মাত্র ৩৩টি নৌপথ ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন ৮০-৮৫টি লঞ্চ এসব নৌপথ দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২৯ এপ্রিল থেকে ছুটি শুরু হলেও ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দিন থেকেই ঈদ যাত্রা শুরু হবে। তাই ওইদিন থেকে ২ মে পর্যন্ত ১২ দিনে ৪০ লাখ যাত্রী সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার সক্ষমতা নৌখাতের নেই। এতে টার্মিনালে যেমন মারাত্মক অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হবে, তেমনি লঞ্চের ছাদসহ ডেকে মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হবে। এ ছাড়া এবার দুর্যোগ মৌসুমেই উদ্যাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ কারণে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তির পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে। তাই নৌপথে নিরাপদ ঈদ যাত্রার জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ঈদযাত্রায় ৪০ লাখ মানুষের চাপ নিতে হবে সরদঘাটকে

আপডেট সময় : ০১:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত দুই বছর মহামারির কারণে ঈদযাত্রায় মানুষের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী দুই মহানগরীসহ তিন জেলা থেকে বাড়ি ফেরার প্রবণতা ছিল কম। এবার করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির মতে, এবার ঈদ উপলক্ষে ঢাকার সদরঘাটে ৪০ লাখ মানুষের চাপ থাকবে এবং এই চাপ সামালানোর মতো নৌযান না থাকায় ঈদ যাত্রায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা হতে পারে।জাতীয় কমিটি বলছে, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরসহ এ তিন জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ নৌপথে ঘরে ফিরবে। মাত্র ১২ দিনে উপকূলীয় জেলামুখী এত যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক নৌযান না থাকায় এই চাপ সৃষ্টি হবে। এর ফলে লঞ্চের ডেকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ছাড়াও ছাদে যাত্রী বহন করতে হবে। আর এতেই বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা হতে পারে।
গত মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। এতে বলা হয়, প্রতি ঈদে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের চারটি সিটি করপোরেশনসহ এ তিন জেলা থেকে প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্বজনদের কাছে যায়। তাদের ২৫ শতাংশ যায় নৌপথে আর সড়ক ও রেলপথে যায় যথাক্রমে ৫৫ ও ২০ শতাংশ। এই হিসাবে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ লঞ্চসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযানে যাতায়াত করে। তবে নিয়মিত দুর্ঘটনা, দূরপাল্লার সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বেহাল দশা, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের প্রধান দুটি মাধ্যম শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরিস্বল্পতা ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকেই সড়কপথ এড়ানোর চেষ্টা করবেন। এতে নৌপথে যাত্রীসংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০ লাখ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআইডব্লিউটিএ গত ২১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ থেকে ছয়টি নৌপথের ৭০টি ছোট লঞ্চ চলাচল স্থগিত রেখেছে। তাই এবার ঈদে ৪০ লাখ ঘরমুখী নৌযাত্রীর একমাত্র রুট হবে সদরঘাট টার্মিনাল। বিলাসবহুল ও বড় আয়তনের লঞ্চ চলাচলের জন্য ঢাকা থেকে বিভিন্ন উপকূলের বৈধ নৌপথের সংখ্যা ৪২টি হলেও যাত্রীস্বল্পতা ও নাব্যতা সংকটের কারণে মাত্র ৩৩টি নৌপথ ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন ৮০-৮৫টি লঞ্চ এসব নৌপথ দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২৯ এপ্রিল থেকে ছুটি শুরু হলেও ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দিন থেকেই ঈদ যাত্রা শুরু হবে। তাই ওইদিন থেকে ২ মে পর্যন্ত ১২ দিনে ৪০ লাখ যাত্রী সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার সক্ষমতা নৌখাতের নেই। এতে টার্মিনালে যেমন মারাত্মক অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হবে, তেমনি লঞ্চের ছাদসহ ডেকে মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হবে। এ ছাড়া এবার দুর্যোগ মৌসুমেই উদ্যাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ কারণে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তির পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে। তাই নৌপথে নিরাপদ ঈদ যাত্রার জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।