ঢাকা ০৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

ই-অরেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ পরিদর্শক সোহেল রানা ভারতে আটক

  • আপডেট সময় : ০১:৫৭:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযোগ ওঠা ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। গত শুক্রবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফের) সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্দা সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁকে আটক করেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান গতকাল শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ঢাকার বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল আটক হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। হয়তো পরে বিএসএফ বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের কথা পুলিশ সদর দপ্তরকে জানাবে। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান শনিবার বিকেলে বলেন, গত বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন সোহেল রানা। শুক্র ও শনিবার তিনি থানায় আসেননি। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে থেকে জেনেছেন, তিনি নেপাল-ভারত সীমান্তে বিএসএফর হাতে আটক হয়েছেন। তবে এখনো তা নিশ্চিত হতে পারেননি। গুলশান ও বনানী থানার কর্মকর্তারা বলছেন, বিএসএফের হাতে আটক হওয়া ব্যক্তি বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা।
১ লাখ গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত জুলাইয়ে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় ভুক্তভোগী ২৯ জন গ্রাহকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের তরফ থেকে ভুক্তভোগী তাহেরুল ইসলাম মামলার বাদী হন। ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন এবং তাঁর স্বামী মাশুকুর রহমানসহ তিনজন এখন কারাগারে। এজাহারভুক্ত বীথি আক্তারসহ দুজন পালিয়ে গেছেন। মামলার বাদী বলেছেন, বীথি আক্তার পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানার চতুর্থ স্ত্রী।
পুলিশ পরিদর্শক সোহেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা : গ্রাহকের ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ, নাজনিন নাহার বিথি, কাওসার, কামরুল হাসান, আব্দুল কাদের, নূরজাহান ইসলাম সোনিয়া ও রুবেল খান।
গতকাল শনিবার গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে ইসতিয়াক হোসেন টিটু নামে এক ব্যক্তি সোহেল রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার আবেদন করেন। আদালত গুলশান থানাকে আবেদনটি এফএআর হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। আমরা আদালতের নির্দেশে আবেদনটি এফএআর হিসেবে গ্রহণ করি। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিরা ই-অরেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মচারী ও সহযোগী। তারা ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ ও বিক্রি করেন। মামলার বাদী ও সাক্ষীরা প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে পণ্য কেনার জন্য নগদ/বিকাশ/ক্রেডিট কার্ড/ডেবিট কার্ড/ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ও তারিখে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে ভাউচার গ্রহণ করেন। পরে ক্রেতাদের নিজ নিজ ই-অরেঞ্জ অ্যাকাউন্টে বাদীসহ আম-মোক্তারনামা ১০ জন ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ১০২ টাকা টাকা প্রদান করেন। টাকা প্রদানের পর পণ্য না দিয়ে এ অর্থ আসামিরা আত্মসাৎ করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, মামলার বাদী ও সাক্ষীরা পণ্য কেনার পর তাদের পণ্য সরবরাহ এবং ডেলিভারি প্রদান করেনি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছুদিনের মধ্যে মালামাল সরবরাহ করবে বলে জানায়। পরে বাদী ও সাক্ষীরা জানতে পারেন যে, ই-অরেঞ্জ নামের প্রতিষ্ঠানটি তাদের মালিকানা পরিবর্তন করেছে। বর্তমান মালিক মালামাল সরবরাহ করতে অনীহা প্রকাশ করাসহ আগের মালিকদের নাম ও ঠিকানা সম্পর্কে কিছুই জানাচ্ছেন না। এতে বাদী ও আম-মোক্তারনামারা আসামিদের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। গত ২৮ এপ্রিল মামলার বাদী ও সাক্ষীরা বিভিন্ন সময় ই-অরেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে আসছেন। গত ১৮ আগস্ট থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলার পরামর্শ দেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ই-অরেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ পরিদর্শক সোহেল রানা ভারতে আটক

আপডেট সময় : ০১:৫৭:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযোগ ওঠা ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। গত শুক্রবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফের) সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্দা সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁকে আটক করেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান গতকাল শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ঢাকার বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল আটক হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। হয়তো পরে বিএসএফ বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের কথা পুলিশ সদর দপ্তরকে জানাবে। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান শনিবার বিকেলে বলেন, গত বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন সোহেল রানা। শুক্র ও শনিবার তিনি থানায় আসেননি। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে থেকে জেনেছেন, তিনি নেপাল-ভারত সীমান্তে বিএসএফর হাতে আটক হয়েছেন। তবে এখনো তা নিশ্চিত হতে পারেননি। গুলশান ও বনানী থানার কর্মকর্তারা বলছেন, বিএসএফের হাতে আটক হওয়া ব্যক্তি বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা।
১ লাখ গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত জুলাইয়ে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় ভুক্তভোগী ২৯ জন গ্রাহকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের তরফ থেকে ভুক্তভোগী তাহেরুল ইসলাম মামলার বাদী হন। ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন এবং তাঁর স্বামী মাশুকুর রহমানসহ তিনজন এখন কারাগারে। এজাহারভুক্ত বীথি আক্তারসহ দুজন পালিয়ে গেছেন। মামলার বাদী বলেছেন, বীথি আক্তার পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানার চতুর্থ স্ত্রী।
পুলিশ পরিদর্শক সোহেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা : গ্রাহকের ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ, নাজনিন নাহার বিথি, কাওসার, কামরুল হাসান, আব্দুল কাদের, নূরজাহান ইসলাম সোনিয়া ও রুবেল খান।
গতকাল শনিবার গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে ইসতিয়াক হোসেন টিটু নামে এক ব্যক্তি সোহেল রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার আবেদন করেন। আদালত গুলশান থানাকে আবেদনটি এফএআর হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। আমরা আদালতের নির্দেশে আবেদনটি এফএআর হিসেবে গ্রহণ করি। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিরা ই-অরেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মচারী ও সহযোগী। তারা ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ ও বিক্রি করেন। মামলার বাদী ও সাক্ষীরা প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে পণ্য কেনার জন্য নগদ/বিকাশ/ক্রেডিট কার্ড/ডেবিট কার্ড/ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় ও তারিখে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে ভাউচার গ্রহণ করেন। পরে ক্রেতাদের নিজ নিজ ই-অরেঞ্জ অ্যাকাউন্টে বাদীসহ আম-মোক্তারনামা ১০ জন ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ১০২ টাকা টাকা প্রদান করেন। টাকা প্রদানের পর পণ্য না দিয়ে এ অর্থ আসামিরা আত্মসাৎ করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, মামলার বাদী ও সাক্ষীরা পণ্য কেনার পর তাদের পণ্য সরবরাহ এবং ডেলিভারি প্রদান করেনি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছুদিনের মধ্যে মালামাল সরবরাহ করবে বলে জানায়। পরে বাদী ও সাক্ষীরা জানতে পারেন যে, ই-অরেঞ্জ নামের প্রতিষ্ঠানটি তাদের মালিকানা পরিবর্তন করেছে। বর্তমান মালিক মালামাল সরবরাহ করতে অনীহা প্রকাশ করাসহ আগের মালিকদের নাম ও ঠিকানা সম্পর্কে কিছুই জানাচ্ছেন না। এতে বাদী ও আম-মোক্তারনামারা আসামিদের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। গত ২৮ এপ্রিল মামলার বাদী ও সাক্ষীরা বিভিন্ন সময় ই-অরেঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে আসছেন। গত ১৮ আগস্ট থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলার পরামর্শ দেন।