আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইয়েমেনে কৌশলগত শহর মারিবের দক্ষিণে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট–সমর্থিত সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় ১৬০ হুতি বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। গত শনিবার চালানো বিভিন্ন হামলায় তারা নিহত হয় বলে দাবি করেছে সরকারি বাহিনী। তবে এ ব্যাপারে হুতি বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
উত্তর ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট-সমর্থিত সরকারি বাহিনীর সবশেষ শক্ত ঘাঁটি মারিব ছিনিয়ে নিতে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আভিযান শুরু করে হুতি বিদ্রোহীরা। সাময়িক বিরতির পর সম্প্রতি আবারও লড়াই জোরালো করে তারা।
সৌদি জোটকে উদ্ধৃত করে সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আবদিয়াতে আমরা ৩২টি হামলা চালিয়েছি। এতে ১১টি সামরিক যান ধ্বংস এবং সন্ত্রাসী কর্মকা-ে ব্যবহার করা ১৬০টির বেশি উপকরণ নির্মূল করা হয়েছে।’ এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে হুতি বিদ্রোহীরা সাধারণত কথা বলে না। আর সে কারণে হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আসলেই ১৬০ কি না, এর সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা যায়নি।
তবে সৌদি জোটের দাবি, মারিব দখলের জন্য ইয়েমেনের সরকারি বাহিনী ও হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ে শুধু গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত সাত শতাধিক বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
বিশ্বস্ত এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএফপি জানায়, চার সপ্তাহের অবরোধ শেষে আবদিয়া জেলার কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে বিদ্রোহীরা। মারিব থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে আবদিয়ার অবস্থান।
ইয়েমেনের সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, ইয়েমেনি আদিবাসীদের যারা সরকারি বাহিনীকে সমর্থন জানিয়েছে, তাদের বিদ্রোহীরা ‘অপহরণ করেছে, বন্দি করেছে ও নিপীড়ন’ চালিয়েছে। তারা আরও অভিযোগ করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ অনুগত সেনা ও আদিবাসী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৪৭ জন।’ ইয়েমেনের এক সামরিক কর্মকর্তাও একই রকম হতাহত মানুষের সংখ্যার কথা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রদেশটি থেকে হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে সরকার ও হুতিদের মধ্যে লড়াই চলছে। সে সময় রাজধানী সানা দখল করে মানসুর হাদির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে হুতি বিদ্রোহীরা। পরে ২০১৫ সালের মার্চে হাদি সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আনতে দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করে সৌদির নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। ইয়েমেনে গত কয়েক বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। ইয়েমেন পরিস্থিতিকে বিশ্বের সবচেয়ে শোচনীয় মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।
ইয়েমেনে সরকারি বাহিনীর হামলায় ১৬০ বিদ্রোহী নিহত
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ