ঢাকা ১২:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

ইয়াবার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করছে মিয়ানমার!

  • আপডেট সময় : ০১:২৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমার বলছে ইয়াবার জন্য তাদের দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ এটি ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল-সিউডোফেড্রিন তাদের দেশে উৎপাদন হয় না। সিউডোফেড্রিন নাকি মিয়ানমারে যায় চীন, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে। তাই বাংলাদেশের উচিৎ হবে মিয়ানমারকে দোষারোপ না করে সেদিকে নজর দেওয়া! মিয়ানমারকে ইয়াবার উৎপাদনকারী হিসেবে অভিযুক্ত করার পর এভাবেই বাংলাদেশের কাছে দেশটি প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা ইয়াবা উৎপাদনের বিষয়টি কৌশলে অস্বীকার করে বাংলাদেশকে উল্টো অভিযুক্ত করে। তবে জবাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুইদেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ের চতুর্থ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে এরকম একটি অভিযোগ করে বাংলাদেশের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেয় মিয়ানমার। বাংলাদেশের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মিয়ানমারকে ইয়াবা উৎপাদন ও চোরাচালন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সীমান্তবর্তী অন্তত ৩৭টি কারখানার ঠিকানা দেয় মিয়ানমারকে। যেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হয়। জবাবে মিয়ানমার বাংলাদেশকে অভিযুক্ত করে লিখে, ‘মিয়ানমার কখনই ইয়াবার কাঁচামাল সিউডোফেড্রিন উৎপাদন করেনি, এখনো করে না। এটা চীন, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে যায়। চোরাচালানের মাধ্যমে এই কাঁচামাল তিনটি দেশ থেকে মিয়ানমারে যায়। বাংলাদেশের উচিৎ সেদিকে নজর দেওয়া।’
মিয়ানমারের এমন অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশও কড়া জবাব দিয়েছে, ‘মিয়ানমার সিউডোফেড্রিন উৎপাদন না করলেও তারা তাদের শিল্পকারখানার জন্য, ওষুধ প্রস্তুতের জন্য এটি আমদানি করে থাকে। কাশি ও ঠা-ার সিরাপ তৈরিতে মিয়ানমারে এটি ব্যবহৃত হয়। ইয়াবা প্রস্তুতকারীরা এটি মিয়ানমারে বসেই সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি ২০১৭ সাল থেকে আমদানি, প্রসেসিং, বিক্রি, ওষুধ থেকে সংগ্রহসহ সকলভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা এখনো নিষিদ্ধ অবস্থাতেই রয়েছে। তাই বাংলাদেশের মাধ্যমে চোরাচালান হয়ে সিউডোফেড্রিন মিয়ানমারে যাওয়ার অভিযোগ সঠিক হতে পারে না। নির্দিষ্ট কোনও তথ্য থাকলে মিয়ানমারকে জানাতে বলেছে বাংলাদেশ।’
মিয়ানমার আরও অভিযোগ করেছে, ‘বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নাকি বিপুল পরিমাণ গাঁজা যায়। এই বিষয়ে বাংলাদেশকে ব্যবস্থা নিতেও দেশটি অনুরোধ করেছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধারকৃত গাঁজা মিয়ানমারে প্রবেশ করানোর জন্যই নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করে দেশটি।’
জবাবে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মিয়ানমারকে জানায়, ‘বাংলাদেশের কোথাও গাঁজার উৎপাদন হয় না। এটি এখানে নিষিদ্ধ। মাঝে মাঝে কিছু গাঁজা ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাচালানের মাধ্যমে প্রবেশ করে। কক্সবাজার থেকে গাঁজা উদ্ধার হলেই সেটি মিয়ানমারে যাচ্ছিল বলে বিবেচনা করা অবান্তর।’
মিয়ানমার আরও একটি গুরুতর অভিযোগ করে, ‘মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ইনজেকশন ফেন্টানিল, ডায়াজিপ্যাম ও অ্যালপ্রাজোলাম চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নাকি মিয়ানমারে যায়। এসব বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের আরও মনযোগী হওয়া উচিৎ।’
জবাবে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মিয়ানমারকে জানায়, ‘বৈধ ড্রাগ হলেও ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ফেন্টানিল ‘এ’ ক্যাটাগরির ড্রাগ এবং ডায়াজিপ্যাম ও অ্যালপ্রাজোলাম ‘সি’ ক্যাটাগরির ড্রাগ হিসেবে রয়েছে। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমেই কেবল এসব ইনজেকশন ব্যবহার হয়। এছাড়া ফেন্টানিলের উৎপাদন বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বন্ধ। প্রয়োজন অনুযায় নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনজেকশন বিশেষ অনুমতি নিয়ে আমদানি হয়। ডায়াজিপ্যাম ও অ্যালপ্রাজোলাম উৎপাদন হলেও খুবই সামান্য পরিমাণ উৎপাদন হয়। ২০১৮ সালে টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার অ্যাম্পুল ডায়াজিপ্যাম ইনজেকশন এক মাদকপাচারকারীর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। এসব ইনজেকশন আমাদের নিজেদের ভোক্তা বা রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন হয়।’
মিয়ানমারের অভিযোগের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মিয়ানমার নিজেদের দায় এড়ানোর জন্য এসব অভিযোগ দিচ্ছে। তারা ইয়াবা উৎপাদন করে সেই অভিযোগের হাত থেকে বাঁচতে দায়সারা পাল্টা আজগুবি অভিযোগ তুলছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ইয়াবা প্রস্তুতির কোন কাঁচামাল পাওয়া যায় না। এসব কাঁচামাল চীন ও ভারত উৎপাদন করে। মিয়ানমারের সঙ্গে এই দুটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। ওইসব দেশে থেকে সহজেই মিয়ানমারে ইয়াবার কাঁচামাল প্রবেশ করছে। ভারতের মাদ্রাজে এসব কেমিক্যাল কারখানা রয়েছে। সেখান থেকে মিয়ানমারে সহজেই এসব কেমিক্যাল চলে যাচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশে আসতে হয় না চোরাকারীদের।’
তিনি জানান, ইয়াবা তৈরির মূল উপাদান সিউডোফেড্রিন আমদানি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়। আর এটা বাংলাদেশ উৎপাদন করার তো প্রশ্নই ওঠে না। ওই সম্মেলনে মিয়ানমারের যে প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছিলেন তারা সম্মেলনের কোনও রেজ্যুলেশনেও স্বাক্ষর করেনি। স্বাক্ষর করতে বলা হলে, প্রতিনিধি দল বলেন, ‘তাদের স্বাক্ষর করার অনুমতি নেই।’
মিয়ানমারের অভিযোগের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো: আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, ‘মিয়ানমার সবসময় বলে একটা, করে আরেকটা। তারা যে অভিযোগ বাংলাদেশকে দিয়েছে, সেটি সঠিক না। এটা তারা করতে পারে না। আমাদের পক্ষ থেকে তখনই এই বিষয়ে জবাব দেওয়া হয়েছে। তাদের এই বক্তেব্যের কোনও যৌক্তিকতা নেই।’ দুই দেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ডিজি পর্যায়ে সম্মেলন ২০২১ সাল ফের হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ডিজি আব্দুস সবুর মন্ডল জানিয়েছেন, শিগগিরই সম্মেলনের বিষয়ে মিয়ানমারকে বলা হবে। আমরা তাদের চিঠি দিবো।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইয়াবার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করছে মিয়ানমার!

আপডেট সময় : ০১:২৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমার বলছে ইয়াবার জন্য তাদের দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ এটি ইয়াবা তৈরির কাঁচামাল-সিউডোফেড্রিন তাদের দেশে উৎপাদন হয় না। সিউডোফেড্রিন নাকি মিয়ানমারে যায় চীন, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে। তাই বাংলাদেশের উচিৎ হবে মিয়ানমারকে দোষারোপ না করে সেদিকে নজর দেওয়া! মিয়ানমারকে ইয়াবার উৎপাদনকারী হিসেবে অভিযুক্ত করার পর এভাবেই বাংলাদেশের কাছে দেশটি প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা ইয়াবা উৎপাদনের বিষয়টি কৌশলে অস্বীকার করে বাংলাদেশকে উল্টো অভিযুক্ত করে। তবে জবাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুইদেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মহাপরিচালক পর্যায়ের চতুর্থ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে এরকম একটি অভিযোগ করে বাংলাদেশের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেয় মিয়ানমার। বাংলাদেশের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মিয়ানমারকে ইয়াবা উৎপাদন ও চোরাচালন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সীমান্তবর্তী অন্তত ৩৭টি কারখানার ঠিকানা দেয় মিয়ানমারকে। যেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হয়। জবাবে মিয়ানমার বাংলাদেশকে অভিযুক্ত করে লিখে, ‘মিয়ানমার কখনই ইয়াবার কাঁচামাল সিউডোফেড্রিন উৎপাদন করেনি, এখনো করে না। এটা চীন, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে যায়। চোরাচালানের মাধ্যমে এই কাঁচামাল তিনটি দেশ থেকে মিয়ানমারে যায়। বাংলাদেশের উচিৎ সেদিকে নজর দেওয়া।’
মিয়ানমারের এমন অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশও কড়া জবাব দিয়েছে, ‘মিয়ানমার সিউডোফেড্রিন উৎপাদন না করলেও তারা তাদের শিল্পকারখানার জন্য, ওষুধ প্রস্তুতের জন্য এটি আমদানি করে থাকে। কাশি ও ঠা-ার সিরাপ তৈরিতে মিয়ানমারে এটি ব্যবহৃত হয়। ইয়াবা প্রস্তুতকারীরা এটি মিয়ানমারে বসেই সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি ২০১৭ সাল থেকে আমদানি, প্রসেসিং, বিক্রি, ওষুধ থেকে সংগ্রহসহ সকলভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা এখনো নিষিদ্ধ অবস্থাতেই রয়েছে। তাই বাংলাদেশের মাধ্যমে চোরাচালান হয়ে সিউডোফেড্রিন মিয়ানমারে যাওয়ার অভিযোগ সঠিক হতে পারে না। নির্দিষ্ট কোনও তথ্য থাকলে মিয়ানমারকে জানাতে বলেছে বাংলাদেশ।’
মিয়ানমার আরও অভিযোগ করেছে, ‘বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নাকি বিপুল পরিমাণ গাঁজা যায়। এই বিষয়ে বাংলাদেশকে ব্যবস্থা নিতেও দেশটি অনুরোধ করেছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধারকৃত গাঁজা মিয়ানমারে প্রবেশ করানোর জন্যই নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করে দেশটি।’
জবাবে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মিয়ানমারকে জানায়, ‘বাংলাদেশের কোথাও গাঁজার উৎপাদন হয় না। এটি এখানে নিষিদ্ধ। মাঝে মাঝে কিছু গাঁজা ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাচালানের মাধ্যমে প্রবেশ করে। কক্সবাজার থেকে গাঁজা উদ্ধার হলেই সেটি মিয়ানমারে যাচ্ছিল বলে বিবেচনা করা অবান্তর।’
মিয়ানমার আরও একটি গুরুতর অভিযোগ করে, ‘মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ইনজেকশন ফেন্টানিল, ডায়াজিপ্যাম ও অ্যালপ্রাজোলাম চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নাকি মিয়ানমারে যায়। এসব বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের আরও মনযোগী হওয়া উচিৎ।’
জবাবে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মিয়ানমারকে জানায়, ‘বৈধ ড্রাগ হলেও ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ফেন্টানিল ‘এ’ ক্যাটাগরির ড্রাগ এবং ডায়াজিপ্যাম ও অ্যালপ্রাজোলাম ‘সি’ ক্যাটাগরির ড্রাগ হিসেবে রয়েছে। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমেই কেবল এসব ইনজেকশন ব্যবহার হয়। এছাড়া ফেন্টানিলের উৎপাদন বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বন্ধ। প্রয়োজন অনুযায় নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনজেকশন বিশেষ অনুমতি নিয়ে আমদানি হয়। ডায়াজিপ্যাম ও অ্যালপ্রাজোলাম উৎপাদন হলেও খুবই সামান্য পরিমাণ উৎপাদন হয়। ২০১৮ সালে টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার অ্যাম্পুল ডায়াজিপ্যাম ইনজেকশন এক মাদকপাচারকারীর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। এসব ইনজেকশন আমাদের নিজেদের ভোক্তা বা রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন হয়।’
মিয়ানমারের অভিযোগের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মিয়ানমার নিজেদের দায় এড়ানোর জন্য এসব অভিযোগ দিচ্ছে। তারা ইয়াবা উৎপাদন করে সেই অভিযোগের হাত থেকে বাঁচতে দায়সারা পাল্টা আজগুবি অভিযোগ তুলছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ইয়াবা প্রস্তুতির কোন কাঁচামাল পাওয়া যায় না। এসব কাঁচামাল চীন ও ভারত উৎপাদন করে। মিয়ানমারের সঙ্গে এই দুটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। ওইসব দেশে থেকে সহজেই মিয়ানমারে ইয়াবার কাঁচামাল প্রবেশ করছে। ভারতের মাদ্রাজে এসব কেমিক্যাল কারখানা রয়েছে। সেখান থেকে মিয়ানমারে সহজেই এসব কেমিক্যাল চলে যাচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশে আসতে হয় না চোরাকারীদের।’
তিনি জানান, ইয়াবা তৈরির মূল উপাদান সিউডোফেড্রিন আমদানি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়। আর এটা বাংলাদেশ উৎপাদন করার তো প্রশ্নই ওঠে না। ওই সম্মেলনে মিয়ানমারের যে প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছিলেন তারা সম্মেলনের কোনও রেজ্যুলেশনেও স্বাক্ষর করেনি। স্বাক্ষর করতে বলা হলে, প্রতিনিধি দল বলেন, ‘তাদের স্বাক্ষর করার অনুমতি নেই।’
মিয়ানমারের অভিযোগের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো: আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, ‘মিয়ানমার সবসময় বলে একটা, করে আরেকটা। তারা যে অভিযোগ বাংলাদেশকে দিয়েছে, সেটি সঠিক না। এটা তারা করতে পারে না। আমাদের পক্ষ থেকে তখনই এই বিষয়ে জবাব দেওয়া হয়েছে। তাদের এই বক্তেব্যের কোনও যৌক্তিকতা নেই।’ দুই দেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ডিজি পর্যায়ে সম্মেলন ২০২১ সাল ফের হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ডিজি আব্দুস সবুর মন্ডল জানিয়েছেন, শিগগিরই সম্মেলনের বিষয়ে মিয়ানমারকে বলা হবে। আমরা তাদের চিঠি দিবো।’