ঢাকা ০২:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

ইসি গঠন আইনের খসড়ায় আসছে পরিবর্তন

  • আপডেট সময় : ০২:০৭:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে করা আইনের খসড়ায় সামান্য কিছু পরিবর্তন আসছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার শর্তে দুটি পরিবর্তন আনার সুপারিশ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
গতকাল সোমবার সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল–২০২২ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। আগামী বুধবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হতে পারে।
গতকাল সোমবার সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে বিলে পরিবর্তন আনার কথা সাংবাদিকদের জানান আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার। গতকাল রোববার বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতাসংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছিল, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তাঁর অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় কিছুটা সংশোধনী এনে সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
এ ছাড়া অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬(ঘ) ধারায়ও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ ধারায় বলা হয়েছিল, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদ-ে দ-িত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে দুই বছরের কারাদ- উঠিয়ে শুধু ‘কারাদ-’ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে যেকোনো মেয়াদে কারাদ-ে দ-িত কোনো ব্যক্তি সিইসি বা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিস্তারিত আলোচনা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। যোগ্যতা ও অযোগত্যার জায়গায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেভাবেই সংসদে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘দুই বছরের কারাদ-ের জায়গাটা পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই বছর উঠিয়ে কারাদ- করে দেওয়া হয়েছে। আর সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছি।’
সার্চ কমিটির মাধ্যমে করা আগের দুটি কমিশনকে আইনি বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, অনেকে এটাকে ইনডেমনিটি বলছেন, তবে এটা ইনডেমনিটি নয়। বিলের ৯ দফায় আগের দুটি সার্চ কমিটিকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা কমিটির বৈঠকে বিলটিতে কিছু সংযোজনীর প্রস্তাব করেছিলেন। তবে তাঁর প্রস্তাবগুলো গৃহীত হয়নি। জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বৈঠকে বলেছেন, আইনটির খসড়া নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলাপ–আলোচনা করা হয়নি। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের জন্য যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই খসড়ার কোনো পার্থক্য নেই। যে কারণে অনেকে এটাকে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলছেন। তিনি প্রস্তাব করেছেন, সার্চ কমিটি কাদের নাম প্রস্তাব করল, সেটা প্রকাশ করতে হবে, তার ওপর আলোচনা হবে, তারা আসলেই যোগ্য কি না, সে ব্যাপারে আইনে কিছু বলা হয়নি। আইনের ৯ ধারায় ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। এটা আইনের ‘বেসিক কনসেপ্টের’ পরিপন্থী। রেস্ট্রোসপেকটিভ ইফেক্ট দেওয়া আইনের চোখে কখনো ভালো চোখে দেখা হয় না। তবে তাঁর প্রস্তাব আমলে নেওয়া হয়নি।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, শামসুল হক, আবদুল মজিদ খান, শামিম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝরনা সরকার, রুমিন ফারহানা ও সেলিম আলতাফ অংশ নেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসি গঠন আইনের খসড়ায় আসছে পরিবর্তন

আপডেট সময় : ০২:০৭:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে করা আইনের খসড়ায় সামান্য কিছু পরিবর্তন আসছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার শর্তে দুটি পরিবর্তন আনার সুপারিশ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
গতকাল সোমবার সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল–২০২২ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। আগামী বুধবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হতে পারে।
গতকাল সোমবার সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে বিলে পরিবর্তন আনার কথা সাংবাদিকদের জানান আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার। গতকাল রোববার বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতাসংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছিল, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তাঁর অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় কিছুটা সংশোধনী এনে সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
এ ছাড়া অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬(ঘ) ধারায়ও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ ধারায় বলা হয়েছিল, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদ-ে দ-িত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে দুই বছরের কারাদ- উঠিয়ে শুধু ‘কারাদ-’ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থাৎ নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে যেকোনো মেয়াদে কারাদ-ে দ-িত কোনো ব্যক্তি সিইসি বা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিস্তারিত আলোচনা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। যোগ্যতা ও অযোগত্যার জায়গায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেভাবেই সংসদে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘দুই বছরের কারাদ-ের জায়গাটা পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই বছর উঠিয়ে কারাদ- করে দেওয়া হয়েছে। আর সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছি।’
সার্চ কমিটির মাধ্যমে করা আগের দুটি কমিশনকে আইনি বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, অনেকে এটাকে ইনডেমনিটি বলছেন, তবে এটা ইনডেমনিটি নয়। বিলের ৯ দফায় আগের দুটি সার্চ কমিটিকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা কমিটির বৈঠকে বিলটিতে কিছু সংযোজনীর প্রস্তাব করেছিলেন। তবে তাঁর প্রস্তাবগুলো গৃহীত হয়নি। জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বৈঠকে বলেছেন, আইনটির খসড়া নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলাপ–আলোচনা করা হয়নি। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের জন্য যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই খসড়ার কোনো পার্থক্য নেই। যে কারণে অনেকে এটাকে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন বলছেন। তিনি প্রস্তাব করেছেন, সার্চ কমিটি কাদের নাম প্রস্তাব করল, সেটা প্রকাশ করতে হবে, তার ওপর আলোচনা হবে, তারা আসলেই যোগ্য কি না, সে ব্যাপারে আইনে কিছু বলা হয়নি। আইনের ৯ ধারায় ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। এটা আইনের ‘বেসিক কনসেপ্টের’ পরিপন্থী। রেস্ট্রোসপেকটিভ ইফেক্ট দেওয়া আইনের চোখে কখনো ভালো চোখে দেখা হয় না। তবে তাঁর প্রস্তাব আমলে নেওয়া হয়নি।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, শামসুল হক, আবদুল মজিদ খান, শামিম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝরনা সরকার, রুমিন ফারহানা ও সেলিম আলতাফ অংশ নেন।