ঢাকা ০৬:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসি গঠনের দায়িত্ব মির্জা ফখরুলকে দিলেই কেবল বিএনপি খুশি হবে : তথ্যমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৩৯:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের দায়িত্ব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে দিলেই কেবল বিএনপি খুশি হবে, অন্যথায় নয়।’
বিএনপি কোনো কিছুতেই খুশি হবে না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে বিএনপি চায় বাংলাদেশে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি হোক। বিএনপি কোনো কিছুতেই খুশি হবে না, যদি তিন মাস সময় নিয়ে আইন করা হয়, এরপরও বিএনপি খুশি হবে না। বিএনপি খুশি হবে যদি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাদের খুশি হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’
গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। এ সময় ইসি গঠন আইনের খসড়া নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান যা দেশের সর্বোচ্চ আইন, সেখানে একটি আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা আছে। যদিও ৫০ বছরে সেই আইন হয়নি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন এবং বেশিরভাগ দলই বলেছিল সংবিধান অনুযায়ী একটি আইনের মাধ্যমে যাতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
বিএনপির সংশোধনী প্রস্তাবের অনেক কিছুই নেওয়া হয়েছে : হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপে যায়নি কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা, মিছিল, টক শো এবং অন্যান্য জায়গায় তারা বলেছিল, আইন করতে সময় লাগে না, দুই দিনেই করা যায়, দেশে অনেক কিছুই প্রয়োজনের নিরিখে হয়েছে এটি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, এ জন্য তারা আইন করতে তাগাদা দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ যখন আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তখন তারা বিরোধিতা করছে। আইন কিন্তু এখনো হয়নি, প্রস্তাবটি সংসদে উঠেছে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে গেছে, বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিফ করেছেন; বিএনপির প্রতিনিধিদের পক্ষেও ব্রিফ করা হয়েছে এবং আইনের খসড়ায় তারা যে সংশোধনীগুলো প্রস্তাব করেছিলেন, তার অনেক কিছুই গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটি বলেছে। অর্থাৎ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইন করা হচ্ছে।’
তাদের উদ্দেশ্যটা কী : ‘সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বদিউল আলম মজুমদার সাহেব, শাহদীন মালিক সাহেবসহ বেশ কয়েকজন আমাদের আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ আইন করার তাগাদা দিয়েছিলেন, একটি রূপরেখাও হস্তান্তর করেছিলেন এবং তখন তারা এই পরামর্শও দিয়েছিলেন, আইন করতে যদি তাড়াহুড়া করা হয়, রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে অন্তত আইনটি করা হোক, দেশে দুই দিনেও আইন হয়েছে, সুতরাং চাইলে এক দিনেও পারা যায়’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে যখন ভালো উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করেছে, তখন যাঁরা আইনমন্ত্রীকে সে কথা বলে এসেছিলেন, এখন আবার দেখলাম, একটি অনলাইন মিটিংয়ে তাঁরা বলেছেন তাড়াহুড়া করে আইন করা সমীচীন হচ্ছে না। নিজেরা যে অবস্থানে ছিলেন, নিজেরা যে দাবি দিয়েছিলেন, সেটার বিপরীতে কথা বলা শুরু করে দিয়েছেন। তাহলে তাদের উদ্দেশ্যটা কী।’
সুশীল সমাজের এই প্রতিনিধি যাঁরা আইনের জন্য তাগাদা দিয়েছেন, আবার সরকার যখন পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে, তখন তাঁরা আবার অন্য কথা বলছেন। তাহলে তাঁদের উদ্দেশ্য মহৎ নয়, তাঁরা আসলে পানি ঘোলা করতে চায় এবং তাঁরাও রাজনীতির ক্রীড়নকে পরিণত হচ্ছে এটিই স্পষ্ট হয়, উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া আন্দোলনের অংশ হতে পারে না : এ সময় সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান এবং সন্তানের মতো। তাদের দাবিদাওয়ার প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল। আমরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছি। ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট আমরাও করেছি। কিন্তু আমরা কখনো বাড়ির বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি। আজ শুনলাম ভিসির বাংলোতে পানি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিসির জন্য খাবার পাঠানো হয়েছিল, সে খাবারও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। জেলখানায় কয়েদিরাও খাবার পায়, পানি পায়। খাবার বন্ধ করে দেওয়া, ভিসির বাংলো কিংবা ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া বা কেটে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা, এগুলো আন্দোলনের অংশ হতে পারে না, এগুলো প্রতিহিংসামূলক। আমি ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানাব, রাজনৈতিক ক্রীড়নক হিসেবে তাদের যেন কেউ ব্যবহার না করে। আমি আশা করব, এর একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইসি গঠনের দায়িত্ব মির্জা ফখরুলকে দিলেই কেবল বিএনপি খুশি হবে : তথ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৩৯:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের দায়িত্ব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে দিলেই কেবল বিএনপি খুশি হবে, অন্যথায় নয়।’
বিএনপি কোনো কিছুতেই খুশি হবে না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে বিএনপি চায় বাংলাদেশে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি হোক। বিএনপি কোনো কিছুতেই খুশি হবে না, যদি তিন মাস সময় নিয়ে আইন করা হয়, এরপরও বিএনপি খুশি হবে না। বিএনপি খুশি হবে যদি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাদের খুশি হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’
গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। এ সময় ইসি গঠন আইনের খসড়া নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান যা দেশের সর্বোচ্চ আইন, সেখানে একটি আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা আছে। যদিও ৫০ বছরে সেই আইন হয়নি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন এবং বেশিরভাগ দলই বলেছিল সংবিধান অনুযায়ী একটি আইনের মাধ্যমে যাতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
বিএনপির সংশোধনী প্রস্তাবের অনেক কিছুই নেওয়া হয়েছে : হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপে যায়নি কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা, মিছিল, টক শো এবং অন্যান্য জায়গায় তারা বলেছিল, আইন করতে সময় লাগে না, দুই দিনেই করা যায়, দেশে অনেক কিছুই প্রয়োজনের নিরিখে হয়েছে এটি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, এ জন্য তারা আইন করতে তাগাদা দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ যখন আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তখন তারা বিরোধিতা করছে। আইন কিন্তু এখনো হয়নি, প্রস্তাবটি সংসদে উঠেছে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে গেছে, বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিফ করেছেন; বিএনপির প্রতিনিধিদের পক্ষেও ব্রিফ করা হয়েছে এবং আইনের খসড়ায় তারা যে সংশোধনীগুলো প্রস্তাব করেছিলেন, তার অনেক কিছুই গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটি বলেছে। অর্থাৎ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইন করা হচ্ছে।’
তাদের উদ্দেশ্যটা কী : ‘সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বদিউল আলম মজুমদার সাহেব, শাহদীন মালিক সাহেবসহ বেশ কয়েকজন আমাদের আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ আইন করার তাগাদা দিয়েছিলেন, একটি রূপরেখাও হস্তান্তর করেছিলেন এবং তখন তারা এই পরামর্শও দিয়েছিলেন, আইন করতে যদি তাড়াহুড়া করা হয়, রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে অন্তত আইনটি করা হোক, দেশে দুই দিনেও আইন হয়েছে, সুতরাং চাইলে এক দিনেও পারা যায়’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে যখন ভালো উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করেছে, তখন যাঁরা আইনমন্ত্রীকে সে কথা বলে এসেছিলেন, এখন আবার দেখলাম, একটি অনলাইন মিটিংয়ে তাঁরা বলেছেন তাড়াহুড়া করে আইন করা সমীচীন হচ্ছে না। নিজেরা যে অবস্থানে ছিলেন, নিজেরা যে দাবি দিয়েছিলেন, সেটার বিপরীতে কথা বলা শুরু করে দিয়েছেন। তাহলে তাদের উদ্দেশ্যটা কী।’
সুশীল সমাজের এই প্রতিনিধি যাঁরা আইনের জন্য তাগাদা দিয়েছেন, আবার সরকার যখন পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে, তখন তাঁরা আবার অন্য কথা বলছেন। তাহলে তাঁদের উদ্দেশ্য মহৎ নয়, তাঁরা আসলে পানি ঘোলা করতে চায় এবং তাঁরাও রাজনীতির ক্রীড়নকে পরিণত হচ্ছে এটিই স্পষ্ট হয়, উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া আন্দোলনের অংশ হতে পারে না : এ সময় সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান এবং সন্তানের মতো। তাদের দাবিদাওয়ার প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল। আমরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছি। ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট আমরাও করেছি। কিন্তু আমরা কখনো বাড়ির বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি। আজ শুনলাম ভিসির বাংলোতে পানি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিসির জন্য খাবার পাঠানো হয়েছিল, সে খাবারও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। জেলখানায় কয়েদিরাও খাবার পায়, পানি পায়। খাবার বন্ধ করে দেওয়া, ভিসির বাংলো কিংবা ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া বা কেটে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা, এগুলো আন্দোলনের অংশ হতে পারে না, এগুলো প্রতিহিংসামূলক। আমি ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানাব, রাজনৈতিক ক্রীড়নক হিসেবে তাদের যেন কেউ ব্যবহার না করে। আমি আশা করব, এর একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।’