ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

ইসির সংলাপে যা বললেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা

  • আপডেট সময় : ১২:০৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনের (ইসির) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছেন দেশের ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার শীর্ষ ব্যক্তিরা। আমন্ত্রিত ৩৯ জন গণমাধ্যম ব্যক্তির মধ্যে ২৭ জন ইসির সংলাপে অংশ নিয়েছেন।
গতকাল সোমবার এই সংলাপে অংশ নিয়ে তারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা সংকটের কথা বলেছেন। একইসঙ্গে তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছেন। পরামর্শ দিয়েছেন সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
সিনিয়র সংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘আপনাদের নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, সেটিই আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম। আপনারা জানেন আপনাদের কাজটা কী? ডানে-বাঁয়ে কিছুই নেই ভালো নির্বাচন করা ছাড়া। সহিংসতা না ঘটানো নিশ্চিত করা, সকলেই যেন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয় সেটা নিশ্চিত করা। নির্বাচন কমিশন হতভাগা প্রতিষ্ঠান। যারাই হেরেছে, তারাই নির্বাচন কমিশনকে দোষ দিয়েছে। কাজেই আপনারা হতাভাগা প্রতিষ্ঠানে এসেছেন। সেটা একটা সাহসের জায়গা।’
ইসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আস্থার সংকট দূর করা দরকার। ইভিএম নিয়ে আস্থার সংকট দূর করা। এনআইডি যদি সংশোধন না করেন, তাহলে কিন্তু অসংখ্য মানুষ খুনের দায়ে দায়ী হবেন।’
একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আপনার নিয়োগ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। আপনার যদি ঠিকমতো কাজ করেন, তবে যে যাই বলুক তা ধোপে টিকবে না। ৫০ বছরে নির্বাচন কমিশন বিতর্তিক হয়েছে। কখনও কখনও দলগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ইসিকে বিতর্কিত করেছে। এটা একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। আপনাদের এটার ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। ড. শামসুল হুদা কমিশন বিএনপিকে ভাঙার জন্য মেজর হাফিজের নেতৃত্বাধীন অংশকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে চেয়েছিল। এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম নির্বাচন কমিশন ছিল। কাজেই পারসেপশন একটা অদ্ভূত খেলা। কাউকে নির্বাচনে আনা বা না আনা, দল ভাঙার কাজ তো আপানাদের না। চোখ-কান বন্ধ করে সোজা হাঁটেন। বড় দলগুলো না এলে একতরফা হয়ে যায়। এর বাইরে কাউকে আনা বা না আনা আপনাদের কাজ না।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএম ইজ দ্য সলিউশন, ইভিএম ইজ দ্য প্রবলেম। পেপার টেইল চালু করা গেলে ইভিএমের প্রতি আস্থা বাড়বে।’
গ্লে¬াবাল টিভির এডিটর ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘বিগত ইসির একজন কমিশনার সবসময় কমিশনের বাইরে এসে কথা বলেছেন। এটা সব সময় নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে মানুষের মনে ভালো বার্তা দেয় না। সুতরাং, নিজেদের ভেতরে সংহতি এবং ঐক্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। বেশকিছু নির্বাচন অত্যন্ত সহিংসতার মধ্যে হয়েছে। ক্ষমতার ব্যবহারে দৃঢ়তার অভাব দেখেছি। সংসদের উপ-নির্বাচনে জটিলতা হয়েছে। নির্বাচনে অনিয়ম হওয়ার পর গেজেট প্রকাশ না করার মনোভাবও দেখতে পাই।’
সরকারও চায় ভালোভাবে হোক, সবগুলো দলও অংশ নিক। সব চোখ কমিশনের দিকে থাকবে। যেটুকু করার ক্ষমতা আছে, আইনে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই জায়গা থেকে মানুষের ভাবনার প্রতিফলিত হয়, সেটাই হলো দেখবার জায়গা।’
নিউজ ২৪ এর এক্সিকিউটিভ এডিটর রাহুল রাহা বলেন, ‘নির্বাচনকালীন মিথ্যা প্রচার, অপপ্রচার রোধে নজরদারি করতে হবে।’ ভোট নিয়ে আস্থা ফেরাতে বড় দুই দলের মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কথায় কথায় ইসিকে পদত্যাগের কথা বলা হয়। পদত্যাগের পরামর্শ শুভচিন্তা নয়। পদত্যাগে বাহাদুরির কিছু নেই। ভোটে আসা না আসা দলগুলোর নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়। জামাই আদর করে কাউকে নির্বাচনে আনতে হবে না।’
এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন বলেন, ‘সোজা কথায় বলতে চাই— আওয়ামী লীগ ও বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। আপনারা চান একটি ভালো নির্বাচন হোক। আপনারা চেষ্টা করবেন বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। সেরকম একটি আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনও নির্বাচন কমিশনই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। সকলেই বলেছেন— যারা পরাজিত হন তারা নির্বাচনের সমালোচনা করেন। কিন্তু আপনারা অনেকেই বলেছেন, রাতে নির্বাচন হয় না। আসলে রাতে নির্বাচন হয় না। রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয় ব্যালট পেপার দিয়ে। রাতে ভোটের বাক্স ভরে রাখা হয়েছিল। ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে পরের দিন। এগুলোই ঘটেছে বাংলাদেশে। আমরা এই কথাগুলো জেনেশুনেও বলি না, কারণ আমরা বলতে ভয় পাই, লিখতে ভয় পাই।’
তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কতখানি তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এখন আমার স্বাধীনতা আর নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা যদি এক রকম হয়, তাহলে আমাদেরকে এখানে ডাকার কোনও মানে হয় না। আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন আমার চেয়ে স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়, স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়, তাহলে তাদের পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব। নির্বাচন কমিশনের মেরুদ- শক্ত থাকলে সরকারের খুব বেশিকিছু করার ক্ষমতা থাকে না। আপনারা চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের গণমাধ্যম আপনাদেরকে সহায়তা করবে।’
এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক বলেন, ‘আজকে সংলাপে আমার সহকর্মী, বন্ধু, ভাইদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছিল— আমি কোনও পলিটিক্যাল প্রোগ্রামে আসলাম নাকি! এখানে বিএনপির বক্তব্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বক্তব্য হচ্ছে। গণমাধ্যমেও এই ধরনের বিভক্তি আছে। আপনারা নিশ্চয় সেটি আগের থেকে জানেন। এখন আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভক্তি থাকবে, তবে আপনাদের মধ্যে যেন বিভক্তি না থাকে।’
নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, চাইলে সেই ক্ষমতা বলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে। তবে সেই ক্ষমতা তারা ব্যবহার করতে চায় কিনা, এটা একটা বড় প্রশ্ন? ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে কে থাকবে পুলিশ নাকি প্রিজাইডিং অফিসার। গণমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে বড় একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়, যখন পুলিশ ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকে।’ কাজেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কর্তৃত্ব নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরুজ খালিদী বলেন, ‘সবাই নির্বাচনে আসবে, সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে। আরেকটি কথা, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এটিই আপনাদের পেশাগত জীবনের শেষ অ্যাসাইনমেন্টে। এরপর হয়তো আর কোনও রাষ্ট্রীয় কাজ পাবেন না। এটি মাথায় রেখে কাজ করলে ভালো কাজ করতে পারবেন।’
বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব নিউজ মাসুদ কামাল নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মূল সংকটটি কোথায় তা ভালো বুঝেন বলেই আপনারা দায়িত্বটা নিয়েছেন। না বুঝলে হয়তো আপনারা দায়িত্ব নিতেন না। আরও কিছু বুঝার জন্য এই সংলাপ করছেন। নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় সংকট হলো আস্থার সংকট। মানুষ নির্বাচন কমিশনের কথাবার্তায় বিশ্বাস করে না। গত দুটি নির্বাচনে এই বিশ্বাস শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।’
এক ব্যক্তির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন নাগরিক বলেছেন, ৩০ বছর বয়সে তিনি একবারও ভোট দিতে পারেননি। ইসির জন্য এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। আপনারা কি নিশ্চয়তা দিতে পারবেন— এই লোক আগামী দুই বছর পর ৩২ বছর বয়সে ভোট দিতে পারবেন? যদি প্রত্যেক নাগরিককে আপনি ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে বুঝবো আপনি সফল। এ বিষয়টি আপনি অর্জন করতে পারবেন কিনা তাই মুখ্য বিষয়।’
গত দুটি সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মাসুদ কামাল বলেন, ‘ওই দুটি নির্বাচনের সময় যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা যেটা করেছিলেন, আপনি দায়িত্ব থাকলে যদি সেটাই করতেন, তাহলে বলবো সংলাপ করার দরকার নেই। আর যদি শেষ বয়সে এসে সেটা না করার মতো সাহস ও মনোবল থাকে, তাহলে করেন।’
সাধারণ মানুষের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা আছে কী আছে না, তাদের আস্থা অর্জন করতে পারলেন কিনা সেটা মূল্যায়ন করতে হবে। আপনাদের সৎসাহস থাকলে মূল্যায়ন করে বলেন— ২০১৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচন কেমন হয়েছিল। এটা করার মেরুদ- থাকলে আপনারা সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন। তা না-হলে এই সংলাপ সংলাপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। কাজের কাজ কিছু হবে না।’
এনটিভির বার্তা প্রধান জহুরুল আলম বলেন, ‘ভোটাররা এখন নির্বাচন বিমুখ। এজন্য নির্বাচন কমিশন সাংঘাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে যে মৌলিক বিষয়গুলো রয়েছে, ইসিকে তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা এলে ইসির পদত্যাগের প্রস্তুতি থাকতে হবে।’
মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন কমিশন অনেক শক্তিশালী। দরকার এর আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ। ইসির যে ক্ষমতা আছে তা দৃশ্যমান হতে হবে।’
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের চিফ নিউজ এডিটর আশিস সৈকত বলেন, ‘ইভিএম জাল ভোট কমিয়েছে এটা নিসন্দেহে সত্য। তবে ইভিএম নিয়ে যেসব বিতর্ক রয়েছে, তা নিরসন করতে হবে। প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিদের সামনে ইভিএম কাস্টমইজ করতে হবে।’ ইসিকে উদ্দেশ করে দেশ টিভির চিফ নিউজ এডিটর বোরহানুল হক সম্রাট বলেন, ‘আপনাদের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার রয়েছে। কিন্তু কেন ইসির দায়িত্ব নিয়ে বদনামের ভাগী হতে হয়। আমরা চাইবো, আপনাদের যেন বদনামের ভাগী না হতে হয়।’
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে অংশগ্রহণ করেন এনটিভির বার্তা প্রধান জহিরুল আলম, জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক, একুশে টিভির হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান, আরটিভি’র সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ আব্দুল হাই সিদ্দিক, মাইটিভির হেড অব নিউজ শেখ নাজমুল হক সৈকত, সময় টিভির হেড অব নিউজ মুজতবা দানিশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির চিফ নিউজ এডিটর আশিস সৈকত, মাছরাঙ্গা টিভির হেড অব নিউজ রেজোয়ানুল হক রাজা, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন, দেশ টিভির চিফ নিউজ এডিটর বোরহানুল হক সম্রাট, বাংলা ট্রিবিউনের বার্তা প্রধান মাসুদ কামাল, ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম, গে¬াবাল টিভির এডিটর সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ, যমুনা টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ, স্পাইস টিভির এডিটরিয়াল হেড তুষার আব্দুল্লাহ।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তারাও ইসিকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে দলগুলোর আস্থা অর্জনের পরামর্শ দেন। এছাড়া নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ এবং বিভাগভিত্তিক একাধিক দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুপারিশও করেন তারা। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নিয়েই সংলাপে আয়োজন করে। এর আগে শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ করেছে ইসি। আমন্ত্রিতরা ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের সীমিত ব্যবহার, নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেদের অধীন আনা, দলগুলোর আস্থা অর্জনসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব দেন। নির্বাচন কমিশন এরপর নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসতে পারে। সবশেষে বসবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইসির সংলাপে যা বললেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা

আপডেট সময় : ১২:০৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনের (ইসির) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছেন দেশের ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার শীর্ষ ব্যক্তিরা। আমন্ত্রিত ৩৯ জন গণমাধ্যম ব্যক্তির মধ্যে ২৭ জন ইসির সংলাপে অংশ নিয়েছেন।
গতকাল সোমবার এই সংলাপে অংশ নিয়ে তারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা সংকটের কথা বলেছেন। একইসঙ্গে তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছেন। পরামর্শ দিয়েছেন সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
সিনিয়র সংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘আপনাদের নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, সেটিই আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম। আপনারা জানেন আপনাদের কাজটা কী? ডানে-বাঁয়ে কিছুই নেই ভালো নির্বাচন করা ছাড়া। সহিংসতা না ঘটানো নিশ্চিত করা, সকলেই যেন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয় সেটা নিশ্চিত করা। নির্বাচন কমিশন হতভাগা প্রতিষ্ঠান। যারাই হেরেছে, তারাই নির্বাচন কমিশনকে দোষ দিয়েছে। কাজেই আপনারা হতাভাগা প্রতিষ্ঠানে এসেছেন। সেটা একটা সাহসের জায়গা।’
ইসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আস্থার সংকট দূর করা দরকার। ইভিএম নিয়ে আস্থার সংকট দূর করা। এনআইডি যদি সংশোধন না করেন, তাহলে কিন্তু অসংখ্য মানুষ খুনের দায়ে দায়ী হবেন।’
একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আপনার নিয়োগ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। আপনার যদি ঠিকমতো কাজ করেন, তবে যে যাই বলুক তা ধোপে টিকবে না। ৫০ বছরে নির্বাচন কমিশন বিতর্তিক হয়েছে। কখনও কখনও দলগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ইসিকে বিতর্কিত করেছে। এটা একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। আপনাদের এটার ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। ড. শামসুল হুদা কমিশন বিএনপিকে ভাঙার জন্য মেজর হাফিজের নেতৃত্বাধীন অংশকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে চেয়েছিল। এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম নির্বাচন কমিশন ছিল। কাজেই পারসেপশন একটা অদ্ভূত খেলা। কাউকে নির্বাচনে আনা বা না আনা, দল ভাঙার কাজ তো আপানাদের না। চোখ-কান বন্ধ করে সোজা হাঁটেন। বড় দলগুলো না এলে একতরফা হয়ে যায়। এর বাইরে কাউকে আনা বা না আনা আপনাদের কাজ না।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএম ইজ দ্য সলিউশন, ইভিএম ইজ দ্য প্রবলেম। পেপার টেইল চালু করা গেলে ইভিএমের প্রতি আস্থা বাড়বে।’
গ্লে¬াবাল টিভির এডিটর ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘বিগত ইসির একজন কমিশনার সবসময় কমিশনের বাইরে এসে কথা বলেছেন। এটা সব সময় নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে মানুষের মনে ভালো বার্তা দেয় না। সুতরাং, নিজেদের ভেতরে সংহতি এবং ঐক্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। বেশকিছু নির্বাচন অত্যন্ত সহিংসতার মধ্যে হয়েছে। ক্ষমতার ব্যবহারে দৃঢ়তার অভাব দেখেছি। সংসদের উপ-নির্বাচনে জটিলতা হয়েছে। নির্বাচনে অনিয়ম হওয়ার পর গেজেট প্রকাশ না করার মনোভাবও দেখতে পাই।’
সরকারও চায় ভালোভাবে হোক, সবগুলো দলও অংশ নিক। সব চোখ কমিশনের দিকে থাকবে। যেটুকু করার ক্ষমতা আছে, আইনে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই জায়গা থেকে মানুষের ভাবনার প্রতিফলিত হয়, সেটাই হলো দেখবার জায়গা।’
নিউজ ২৪ এর এক্সিকিউটিভ এডিটর রাহুল রাহা বলেন, ‘নির্বাচনকালীন মিথ্যা প্রচার, অপপ্রচার রোধে নজরদারি করতে হবে।’ ভোট নিয়ে আস্থা ফেরাতে বড় দুই দলের মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কথায় কথায় ইসিকে পদত্যাগের কথা বলা হয়। পদত্যাগের পরামর্শ শুভচিন্তা নয়। পদত্যাগে বাহাদুরির কিছু নেই। ভোটে আসা না আসা দলগুলোর নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়। জামাই আদর করে কাউকে নির্বাচনে আনতে হবে না।’
এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন বলেন, ‘সোজা কথায় বলতে চাই— আওয়ামী লীগ ও বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। আপনারা চান একটি ভালো নির্বাচন হোক। আপনারা চেষ্টা করবেন বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। সেরকম একটি আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনও নির্বাচন কমিশনই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। সকলেই বলেছেন— যারা পরাজিত হন তারা নির্বাচনের সমালোচনা করেন। কিন্তু আপনারা অনেকেই বলেছেন, রাতে নির্বাচন হয় না। আসলে রাতে নির্বাচন হয় না। রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয় ব্যালট পেপার দিয়ে। রাতে ভোটের বাক্স ভরে রাখা হয়েছিল। ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে পরের দিন। এগুলোই ঘটেছে বাংলাদেশে। আমরা এই কথাগুলো জেনেশুনেও বলি না, কারণ আমরা বলতে ভয় পাই, লিখতে ভয় পাই।’
তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কতখানি তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এখন আমার স্বাধীনতা আর নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা যদি এক রকম হয়, তাহলে আমাদেরকে এখানে ডাকার কোনও মানে হয় না। আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন আমার চেয়ে স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়, স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায়, তাহলে তাদের পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব। নির্বাচন কমিশনের মেরুদ- শক্ত থাকলে সরকারের খুব বেশিকিছু করার ক্ষমতা থাকে না। আপনারা চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের গণমাধ্যম আপনাদেরকে সহায়তা করবে।’
এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক বলেন, ‘আজকে সংলাপে আমার সহকর্মী, বন্ধু, ভাইদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছিল— আমি কোনও পলিটিক্যাল প্রোগ্রামে আসলাম নাকি! এখানে বিএনপির বক্তব্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বক্তব্য হচ্ছে। গণমাধ্যমেও এই ধরনের বিভক্তি আছে। আপনারা নিশ্চয় সেটি আগের থেকে জানেন। এখন আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভক্তি থাকবে, তবে আপনাদের মধ্যে যেন বিভক্তি না থাকে।’
নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, চাইলে সেই ক্ষমতা বলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে। তবে সেই ক্ষমতা তারা ব্যবহার করতে চায় কিনা, এটা একটা বড় প্রশ্ন? ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে কে থাকবে পুলিশ নাকি প্রিজাইডিং অফিসার। গণমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে বড় একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়, যখন পুলিশ ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকে।’ কাজেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কর্তৃত্ব নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরুজ খালিদী বলেন, ‘সবাই নির্বাচনে আসবে, সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে। আরেকটি কথা, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এটিই আপনাদের পেশাগত জীবনের শেষ অ্যাসাইনমেন্টে। এরপর হয়তো আর কোনও রাষ্ট্রীয় কাজ পাবেন না। এটি মাথায় রেখে কাজ করলে ভালো কাজ করতে পারবেন।’
বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব নিউজ মাসুদ কামাল নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মূল সংকটটি কোথায় তা ভালো বুঝেন বলেই আপনারা দায়িত্বটা নিয়েছেন। না বুঝলে হয়তো আপনারা দায়িত্ব নিতেন না। আরও কিছু বুঝার জন্য এই সংলাপ করছেন। নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় সংকট হলো আস্থার সংকট। মানুষ নির্বাচন কমিশনের কথাবার্তায় বিশ্বাস করে না। গত দুটি নির্বাচনে এই বিশ্বাস শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।’
এক ব্যক্তির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন নাগরিক বলেছেন, ৩০ বছর বয়সে তিনি একবারও ভোট দিতে পারেননি। ইসির জন্য এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। আপনারা কি নিশ্চয়তা দিতে পারবেন— এই লোক আগামী দুই বছর পর ৩২ বছর বয়সে ভোট দিতে পারবেন? যদি প্রত্যেক নাগরিককে আপনি ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে বুঝবো আপনি সফল। এ বিষয়টি আপনি অর্জন করতে পারবেন কিনা তাই মুখ্য বিষয়।’
গত দুটি সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মাসুদ কামাল বলেন, ‘ওই দুটি নির্বাচনের সময় যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা যেটা করেছিলেন, আপনি দায়িত্ব থাকলে যদি সেটাই করতেন, তাহলে বলবো সংলাপ করার দরকার নেই। আর যদি শেষ বয়সে এসে সেটা না করার মতো সাহস ও মনোবল থাকে, তাহলে করেন।’
সাধারণ মানুষের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা আছে কী আছে না, তাদের আস্থা অর্জন করতে পারলেন কিনা সেটা মূল্যায়ন করতে হবে। আপনাদের সৎসাহস থাকলে মূল্যায়ন করে বলেন— ২০১৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচন কেমন হয়েছিল। এটা করার মেরুদ- থাকলে আপনারা সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন। তা না-হলে এই সংলাপ সংলাপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। কাজের কাজ কিছু হবে না।’
এনটিভির বার্তা প্রধান জহুরুল আলম বলেন, ‘ভোটাররা এখন নির্বাচন বিমুখ। এজন্য নির্বাচন কমিশন সাংঘাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে যে মৌলিক বিষয়গুলো রয়েছে, ইসিকে তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা এলে ইসির পদত্যাগের প্রস্তুতি থাকতে হবে।’
মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন কমিশন অনেক শক্তিশালী। দরকার এর আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ। ইসির যে ক্ষমতা আছে তা দৃশ্যমান হতে হবে।’
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের চিফ নিউজ এডিটর আশিস সৈকত বলেন, ‘ইভিএম জাল ভোট কমিয়েছে এটা নিসন্দেহে সত্য। তবে ইভিএম নিয়ে যেসব বিতর্ক রয়েছে, তা নিরসন করতে হবে। প্রার্থী ও তাদের প্রতিনিধিদের সামনে ইভিএম কাস্টমইজ করতে হবে।’ ইসিকে উদ্দেশ করে দেশ টিভির চিফ নিউজ এডিটর বোরহানুল হক সম্রাট বলেন, ‘আপনাদের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার রয়েছে। কিন্তু কেন ইসির দায়িত্ব নিয়ে বদনামের ভাগী হতে হয়। আমরা চাইবো, আপনাদের যেন বদনামের ভাগী না হতে হয়।’
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে অংশগ্রহণ করেন এনটিভির বার্তা প্রধান জহিরুল আলম, জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক, একুশে টিভির হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান, আরটিভি’র সিইও সৈয়দ আশিক রহমান, বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ আব্দুল হাই সিদ্দিক, মাইটিভির হেড অব নিউজ শেখ নাজমুল হক সৈকত, সময় টিভির হেড অব নিউজ মুজতবা দানিশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির চিফ নিউজ এডিটর আশিস সৈকত, মাছরাঙ্গা টিভির হেড অব নিউজ রেজোয়ানুল হক রাজা, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন, দেশ টিভির চিফ নিউজ এডিটর বোরহানুল হক সম্রাট, বাংলা ট্রিবিউনের বার্তা প্রধান মাসুদ কামাল, ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম, গে¬াবাল টিভির এডিটর সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ, যমুনা টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ, স্পাইস টিভির এডিটরিয়াল হেড তুষার আব্দুল্লাহ।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তারাও ইসিকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে দলগুলোর আস্থা অর্জনের পরামর্শ দেন। এছাড়া নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের পরিবর্তে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ এবং বিভাগভিত্তিক একাধিক দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুপারিশও করেন তারা। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নিয়েই সংলাপে আয়োজন করে। এর আগে শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ করেছে ইসি। আমন্ত্রিতরা ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের সীমিত ব্যবহার, নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেদের অধীন আনা, দলগুলোর আস্থা অর্জনসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব দেন। নির্বাচন কমিশন এরপর নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসতে পারে। সবশেষে বসবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে।