ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল: গভর্নর

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, একটি পরিবারের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, দেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাতকে টেকসই ও শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে উন্নত হিসাবরক্ষণ, সুশাসন এবং উচ্চমানের অডিটিং প্রক্রিয়া অত্যন্ত জরুরি।

রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইসলামিক ফাইন্যান্স সামিট ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং আইন প্রণয়নে কাজ করছে, যেখানে বৈশ্বিক সেরা অনুশীলনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

গভর্নর বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকিং খাতের টেকসই উন্নয়নে দক্ষ অডিটিং ও শক্তিশালী সুশাসন অপরিহার্য। ইসলামী ও প্রচলিত— উভয় ধরনের ব্যাংককেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে উচ্চমানের অডিটিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হবে।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকিং খাত কিছু অস্থিরতার মুখোমুখি হলেও সামগ্রিকভাবে খাতটি এখনো শক্ত অবস্থানে আছে এবং আমানতকারীর আস্থা ফিরতে শুরু করেছে।

তিনি জানান, সমস্যাগ্রস্ত ইসলামী ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এবং এর ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (আইবিবিএল) উদাহরণ টেনে গভর্নর বলেন, একসময় তীব্র তারল্য সংকটের মুখোমুখি হওয়া ব্যাংকটি এখন স্থিতিশীল হয়েছে এবং এ বছর ইসলামি ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ আমানত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, একটি ব্যক্তিগত পরিবারের মাধ্যমে আইবিবিএল থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল— যা ব্যাংকটির ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করে। তবুও জনগণের আস্থা ব্যাংকটির প্রতি অটুট ছিল।

গভর্নর আরো জানান, তারল্য সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংকগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

‘আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা চাই, ইসলামী ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট আরও শক্তিশালী হোক, পরিশোধিত মূলধন বাড়ুক এবং পরিচালনা পর্ষদে যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা থাকুন,’ বলেন তিনি।

গভর্নর আশা প্রকাশ করেন, পরিকল্পিত ও সুশাসিত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাত আরো শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ইসলামী ব্যাংকিং খাত টেকসইভাবে এগিয়ে যাক এবং দেশের অর্থনীতিতে আরো বড় অবদান রাখুক।’

এসি/আপ্র/১৬/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল: গভর্নর

আপডেট সময় : ০৫:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, একটি পরিবারের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, দেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাতকে টেকসই ও শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে উন্নত হিসাবরক্ষণ, সুশাসন এবং উচ্চমানের অডিটিং প্রক্রিয়া অত্যন্ত জরুরি।

রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইসলামিক ফাইন্যান্স সামিট ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং আইন প্রণয়নে কাজ করছে, যেখানে বৈশ্বিক সেরা অনুশীলনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

গভর্নর বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকিং খাতের টেকসই উন্নয়নে দক্ষ অডিটিং ও শক্তিশালী সুশাসন অপরিহার্য। ইসলামী ও প্রচলিত— উভয় ধরনের ব্যাংককেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে উচ্চমানের অডিটিং স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হবে।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকিং খাত কিছু অস্থিরতার মুখোমুখি হলেও সামগ্রিকভাবে খাতটি এখনো শক্ত অবস্থানে আছে এবং আমানতকারীর আস্থা ফিরতে শুরু করেছে।

তিনি জানান, সমস্যাগ্রস্ত ইসলামী ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এবং এর ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (আইবিবিএল) উদাহরণ টেনে গভর্নর বলেন, একসময় তীব্র তারল্য সংকটের মুখোমুখি হওয়া ব্যাংকটি এখন স্থিতিশীল হয়েছে এবং এ বছর ইসলামি ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ আমানত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, একটি ব্যক্তিগত পরিবারের মাধ্যমে আইবিবিএল থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল— যা ব্যাংকটির ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করে। তবুও জনগণের আস্থা ব্যাংকটির প্রতি অটুট ছিল।

গভর্নর আরো জানান, তারল্য সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংকগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

‘আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা চাই, ইসলামী ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট আরও শক্তিশালী হোক, পরিশোধিত মূলধন বাড়ুক এবং পরিচালনা পর্ষদে যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা থাকুন,’ বলেন তিনি।

গভর্নর আশা প্রকাশ করেন, পরিকল্পিত ও সুশাসিত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাত আরো শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ইসলামী ব্যাংকিং খাত টেকসইভাবে এগিয়ে যাক এবং দেশের অর্থনীতিতে আরো বড় অবদান রাখুক।’

এসি/আপ্র/১৬/১১/২০২৫