বিদেশের খবর ডেস্ক : সোমবার রাতে ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ৬৬০ জন। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সর্বশেষ আপডেটে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় ৪১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচে আরও অনেক মানুষ আটকে আছেন। যাদের নাম আহত বা নিহতের তালিকায় যুক্ত করা হয়নি।
সোমবার রাত ২টার দিকে আকস্মিকভাবে গাজায় বোমা হামলা চালানো শুরু করে দখলদাররা। কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী এ হামলায় মুহূর্তের মধ্যে ঝরে যায় শত শত মানুষের প্রাণ। আহতের সংখ্যা এতটাই বেশি যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেখানকার সব হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে রক্তদানের অনুরোধ জানিয়েছে। রক্তের স্বল্পতার পাশাপাশি পেইনকিলার ও ব্যান্ডেজের সংকটেও পড়েছেন চিকিৎসকরা। গত ১৭ দিন ধরে গাজায় সবধরনের ত্রাণ ও সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলি দখলদাররা। আর সেখানকার মানুষকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে বর্বর ও কাপুরোষিত এ হামলা চালিয়েছে তারা।
দখলদার ইসরায়েল বলেছে, হামাস তাদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং তারা তাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এ কারণে সোমবার রাতে হামলা চালানো হয়েছে। যদিও হামাস জানিয়েছিল, পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী যদি ইসরায়েল গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করে তাহলে তারা সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিয়ে দেবে। কিন্তু দখলদার এতে সম্মত হয়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজায় যে নতুন করে আবারও নির্বিচার হামলা চালানো হবে সেটি কয়েক সপ্তাহ আগেই ঠিক করা হয়। অর্থাৎ হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় হামলা চালানো হয়েছে এটি সত্য নয়। সূত্র: আলজাজিরা
নেতানিয়াহুর ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে সন্দেহ
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে বন্দী দুই ইসরায়েলির মা তার দেশের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার ইসরায়েলি বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী নয়। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোরে এক তরফা যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল গাজায় নির্বিচারে হামলা চালানোর প্রেক্ষাপটে বন্দী ডেভিড ও অ্যারিয়েল কুনিওর মা বলেন, গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে হামলা শুরু করার পর তিনি ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, কারণ তিনি জানেন না এরপর কী হতে পারে। ইসরায়েলি পত্রিকা মারিভকে তিনি বলেন, আমি তাদের কাছে যুদ্ধ থামানোর জন্য কাকুতি-মিনতি করেছি, কিন্তু তারা শোনেনি।
আমার মনে হচ্ছে নেতানিয়াহুর সরকারের একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে এবং তারা বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে চায় না। অন্তত আমি তাই অনুভব করছি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কোনো মমতা নেই এবং তিনি গাজায় আরও ইসরায়েলি সেনার জীবন বিপন্ন করতেও পিছপা নন। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের নীর ওজ বসতি থেকে অ্যারিয়েল কুনিও এবং তার বড় ভাই ডেভিডকে অপহরণ করে। অপহরণের সময় অ্যারিয়েল তার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা আর্বেল ইয়াহুদ-এর সঙ্গে ছিলেন, যাকে এ বছরের জানুয়ারিতে মুক্তি দেওয়া হয়।