প্রত্যাশা ডেস্ক: ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে শুক্রবার (২৭ জুন) কঙ্গো-রুয়ান্ডা চুক্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, তাঁর বিশ্বাস, গাজায় এখন একটি যুদ্ধবিরতি খুব কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে। এ সংঘাত বন্ধে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে সদ্যই তাঁর কথা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি বিষয়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বলেছে, যুদ্ধ শেষ করার যেকোনো চুক্তির আওতায় গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধ তখনই শেষ হবে, যখন হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ও বিলুপ্ত করা যাবে। অবশ্য হামাস অস্ত্র সমর্পণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালান। ইসরায়েলের দাবি, হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ হামলা গাজায় ভয়াবহ খাদ্যসংকট সৃষ্টি ও পুরো জনসংখ্যাকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত করেছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলা হয়েছে; যদিও দেশটি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণের পর গাজা সংঘাত সমাধানের আগ্রহ নতুন করে জোর পেয়েছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে তাদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে।
গাজা যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মনে করি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা একটি যুদ্ধবিরতিতে উপনীত হতে পারব।’
গাজায় একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ট্রাম্প কার সঙ্গে কথা বলেছেন, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। তবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত চলাকালীন তিনি প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
ট্রাম্প এমন এক সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন, যখন যুদ্ধে জড়িত কোনো পক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা আবার শুরু করার কোনো লক্ষণ প্রায় নেই।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির একটি চুক্তি হয়েছিল। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের ঠিক এক দিন আগে গত ১৯ জানুয়ারি সেই চুক্তি কার্যকর হয়। কিন্তু তা বেশি দিন টেকেনি, দ্রুতই ভেঙে পড়ে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের পর এ বিষয়ে জানতে রয়টার্স থেকে মন্তব্যের অনুরোধ জানিয়ে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।
বিষয়টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের কৌশলগত পরিকল্পনাবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার গাজা, ইরান ও নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য হোয়াইট হাউস সফর নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সোমবার থেকে ওয়াশিংটন সফর শুরু করবেন। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলাফল হিসেবে শান্তি প্রতিষ্ঠার যেসব সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, তাঁর দেশ সেগুলো কোনোভাবেই নষ্ট করবে না।