প্রত্যাশা ডেস্ক: ইসরায়েলের ওপর সাম্প্রতিক হামলায় ইরান খায়বার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করেছে। কিছুক্ষণ আগে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের জারি করা একটি বিবৃতিতে ইসরায়েলের সাথে সাম্প্রতিক সংঘাতে প্রথমবারের মতো ‘খাইবার’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা জানানো হয়েছে।
এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য তুলে ধরা হল: খাইবার ক্ষেপণাস্ত্রটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারের সর্বশেষ মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি। আনুষ্ঠানিকভাবে খোররামশহর-৪ নামে পরিচিত। এটি দেশীয়ভাবে উৎপন্ন খোররামশাহর ক্ষেপণাস্ত্র সিরিজের ফোর্থ জেনারেশন।
২০০০ কিলোমিটার পাল্লার খায়বার ক্ষেপণাস্ত্র দেড় হাজার কেজি ওজনের ওয়ারহেড বহনে সক্ষম, যা ইরানের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভারী ওয়ারহেডগুলোর একটি। তরল জ্বালানিচালিত এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে উড়ন্ত অবস্থাতেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর পাশাপাশি বায়ুমণ্ডলের বাইরে ওয়ারহেডের গতিপথ সামঞ্জস্য করার সক্ষমতাও রয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্রটির। ইরানে নির্মিত এর আগের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর তুলনায় অনেকটাই নির্ভুলভাবে লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এটি। প্রযুক্তিগতভাবে খাইবারের সর্বোচ্চ গতি বায়ুমণ্ডলের বাইরে আনুমানিক ম্যাক ১৬। যা শব্দের গতির ১৬ গুণ এবং এর ভেতরে আনুমানিক ম্যাক ৮। প্রযুক্তিগতভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই শক্তিশালী যে প্রচলিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্র আটকানো বেশ কঠিন। সূত্র: বিবিসি।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তেল আবিব ও হাইফায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি: ইসরায়েলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলজুড়ে বেশ কিছু লক্ষ্যবস্তুকে উদ্দেশ্য করে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে দেশটি। ইরানের এই হামলার মধ্যে জেরুজালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। এছাড়া তেল আবিব ও হাইফায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোববার (২২ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে দুটি দফায় মোট ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে। প্রথম দফায় ২২টি এবং দ্বিতীয় দফায় ৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়। হামলার লক্ষ্যবস্তুও ছিল বেশ বিস্তৃত— সিরিয়ার দখলীকৃত গোলান হাইটস অঞ্চল থেকে শুরু করে আপার গ্যালিলি, আবার উত্তর ও মধ্য উপকূলীয় এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত অংশে হামলা চালানো হয়। এ পর্যন্ত ১০টি ভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি বা বড় আকারের শার্পনেলের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে তেল আবিব ও হাইফা শহরে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেশি। তবে ঠিক কোন ধরনের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের মেডিকেল সার্ভিস প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, এই হামলায় ১৬ জন পর্যন্ত আহত হতে পারে। চিকিৎসা দলগুলো এখনো ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাচ্ছে, যেন কেউ চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় পড়ে না থাকে।
এদিকে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে, এমন সতর্কবার্তার পরই জেরুজালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা হুগো বাছেগা জেরুজালেম থেকে এ তথ্য জানিয়েছেন।