ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

ইসরায়েলি হামলা বাড়ছে, গাজায় আরো ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

  • আপডেট সময় : ১১:৫০:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে আরো অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫১ জন। এর মধ্যে গাজা সিটিতেই ৩৭ জন নিহত হয়েছেন, যেখানে ইসরায়েল তাদের আরো বৃহত্তর হামলার পরিকল্পনা করছে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া, সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার শেখ রাদওয়ানের একটি স্কুল ভবনের উপর উড়ছে, যেখানে আশপাশের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন হয়ে দেখছেন। এর পর কোয়াডকপ্টারটি লক্ষ্যবস্তুতে একটি বিস্ফোরক ফেললে অন্তত ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ওই স্কুলে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিল।

আল-আহলি হাসপাতালের একটি চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আরো একজন নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনাহারে ও অপুষ্টিতে নতুন করে দুজন মারা গেছেন, যার মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। এর ফলে দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৭৩ হয়েছে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু। মন্ত্রণালয় বলেছে, অনেকেই এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। তারা আরো উল্লেখ করেছে, ইসরায়েলি বোমা হামলা ও সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকারী দলগুলো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে তাদের সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করার পর থেকে ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী মানবিক সহায়তা নিতে আসা বেসামরিক নাগরিকদের ওপরও হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এমন হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের মতে, ২৭ মে থেকে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ২ হাজার ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫ হাজার ১৯৭ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, হামাস যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইসরায়েলের শর্তে সম্মত না হলে গাজার বৃহত্তম শহরটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লিখেছেন, গাজায় হামাসের খুনি ও ধর্ষকদের মাথার ওপর খুব শিগগিরই নরকের দরজা খুলবে, যতক্ষণ না তারা যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইসরায়েলের শর্তে রাজি হচ্ছে।

কাটজ ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শর্তগুলো পুনরায় উল্লেখ করেন, যার মধ্যে সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেওয়া এবং হামাসের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত। হামাস জানিয়েছে যে, তারা যুদ্ধ শেষ করার বিনিময়ে বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত, তবে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন না হলে নিরস্ত্রীকরণে রাজি নয়।

গত মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধ গাজার ২৪ লাখ বাসিন্দার জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যার ফলে দুর্ভিক্ষ, ব্যাপক রোগ এবং জরুরি পরিষেবাগুলোর বিপর্যয় ঘটেছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’য় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়েছিল।

এসি/

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলি হামলা বাড়ছে, গাজায় আরো ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

আপডেট সময় : ১১:৫০:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে আরো অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫১ জন। এর মধ্যে গাজা সিটিতেই ৩৭ জন নিহত হয়েছেন, যেখানে ইসরায়েল তাদের আরো বৃহত্তর হামলার পরিকল্পনা করছে। খবর আনাদোলু এজেন্সি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া, সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার শেখ রাদওয়ানের একটি স্কুল ভবনের উপর উড়ছে, যেখানে আশপাশের বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন হয়ে দেখছেন। এর পর কোয়াডকপ্টারটি লক্ষ্যবস্তুতে একটি বিস্ফোরক ফেললে অন্তত ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ওই স্কুলে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিল।

আল-আহলি হাসপাতালের একটি চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আরো একজন নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনাহারে ও অপুষ্টিতে নতুন করে দুজন মারা গেছেন, যার মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। এর ফলে দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৭৩ হয়েছে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু। মন্ত্রণালয় বলেছে, অনেকেই এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। তারা আরো উল্লেখ করেছে, ইসরায়েলি বোমা হামলা ও সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকারী দলগুলো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে তাদের সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করার পর থেকে ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী মানবিক সহায়তা নিতে আসা বেসামরিক নাগরিকদের ওপরও হামলা অব্যাহত রেখেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এমন হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের মতে, ২৭ মে থেকে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ২ হাজার ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫ হাজার ১৯৭ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, হামাস যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইসরায়েলের শর্তে সম্মত না হলে গাজার বৃহত্তম শহরটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লিখেছেন, গাজায় হামাসের খুনি ও ধর্ষকদের মাথার ওপর খুব শিগগিরই নরকের দরজা খুলবে, যতক্ষণ না তারা যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইসরায়েলের শর্তে রাজি হচ্ছে।

কাটজ ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শর্তগুলো পুনরায় উল্লেখ করেন, যার মধ্যে সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেওয়া এবং হামাসের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত। হামাস জানিয়েছে যে, তারা যুদ্ধ শেষ করার বিনিময়ে বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত, তবে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন না হলে নিরস্ত্রীকরণে রাজি নয়।

গত মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধ গাজার ২৪ লাখ বাসিন্দার জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যার ফলে দুর্ভিক্ষ, ব্যাপক রোগ এবং জরুরি পরিষেবাগুলোর বিপর্যয় ঘটেছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’য় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়েছিল।

এসি/