ঢাকা ১০:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
শপথ না পড়ানো নিয়ে রিটের আদেশ বুধবার

ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে আল্টিমেটাম

  • আপডেট সময় : ০৮:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মঙ্গলবারের কর্মসূচি শেষ করেন আন্দোলনকারীরা -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এর মধ্য দিয়ে আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করেছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টার মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল চারটার দিকে নগর ভবনের সামনে অবস্থিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ আন্দোলনের সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান এ ঘোষণা দেন। মশিউর রহমান বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টায় নগর ভবনের সামনে আমরা হাজির হবো। দাবি না মানলে অবস্থা বুঝে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা জাতির সঙ্গে প্রতারণা, গণতন্ত্রের সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত সোমবার এই উপদেষ্টা ফেসবুক পোস্টে বলেন, গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে বিএনপি আন্দোলন করছে।

এ সময় কর্মসূচি ঘোষণার মঞ্চে এই আন্দোলন ও দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরের কর্মচারী ইউনিয়ন। ইউনিয়নগুলো মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে দাবি মানা না হলে এর পর থেকে পরিচ্ছন্নতাসেবা, ময়লা পরিবহনসেবা, বিদ্যুৎ-সেবাসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। সংগঠনগুলো হলো স্ক্যাভেঞ্জার অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, পরিবহন চালক ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি, ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি।

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে শপথের মাধ্যমে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত বুধবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁর সমর্থকেরা। এরই ধারাবহিকতায় মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এই আন্দোলনের ফলে বন্ধ রয়েছে ডিএসসিসির সব নাগরিক সেবা। সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেক মানুষ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার। অন্যদিকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে গত সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথ না পড়ানো নিয়ে রিটের আদেশ বুধবার: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার (২১ মে) দুপুর ১২টায় আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ।

এর আগে গত বুধবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।

সেই সঙ্গে বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও চাওয়া হয় রিটে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ। আবেদনকারীর আইনজীবী কাজী আকবর আলী।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

শপথ না পড়ানো নিয়ে রিটের আদেশ বুধবার

ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে আল্টিমেটাম

আপডেট সময় : ০৮:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এর মধ্য দিয়ে আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করেছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বুধবার (২১ মে) সকাল ১০টার মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল চারটার দিকে নগর ভবনের সামনে অবস্থিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ আন্দোলনের সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান এ ঘোষণা দেন। মশিউর রহমান বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টায় নগর ভবনের সামনে আমরা হাজির হবো। দাবি না মানলে অবস্থা বুঝে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা জাতির সঙ্গে প্রতারণা, গণতন্ত্রের সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত সোমবার এই উপদেষ্টা ফেসবুক পোস্টে বলেন, গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে বিএনপি আন্দোলন করছে।

এ সময় কর্মসূচি ঘোষণার মঞ্চে এই আন্দোলন ও দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরের কর্মচারী ইউনিয়ন। ইউনিয়নগুলো মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে দাবি মানা না হলে এর পর থেকে পরিচ্ছন্নতাসেবা, ময়লা পরিবহনসেবা, বিদ্যুৎ-সেবাসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়। সংগঠনগুলো হলো স্ক্যাভেঞ্জার অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, পরিবহন চালক ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি, ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী সমাজকল্যাণ সমিতি।

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে শপথের মাধ্যমে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত বুধবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁর সমর্থকেরা। এরই ধারাবহিকতায় মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এই আন্দোলনের ফলে বন্ধ রয়েছে ডিএসসিসির সব নাগরিক সেবা। সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেক মানুষ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার। অন্যদিকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে গত সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথ না পড়ানো নিয়ে রিটের আদেশ বুধবার: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার (২১ মে) দুপুর ১২টায় আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ।

এর আগে গত বুধবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।

সেই সঙ্গে বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও চাওয়া হয় রিটে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ। আবেদনকারীর আইনজীবী কাজী আকবর আলী।