বিদেশের খবর ডেস্ক: ইরানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’-এর হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
ইরানের বিচার বিভাগ জানায়, অভিযুক্ত ৪১ বছর বয়সি পেদরাম মাদানিকে তেহরানে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
বার্তা সংস্থা ইরনার প্রতিবেদন অনুযায়ী পেদরাম মাদানি প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের গ্রেফতার হন। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে রাজধানী তেহরানের এভিন কারাগারে আটক ছিলেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতে তাকে কারাজে স্থানান্তর করা হয় এবং বুধবার সকালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তাকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো সম্পর্কে গোপন তথ্য ফাঁসের চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়, তিনি অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করেছিলেন এবং জার্মানিতে একাধিকবার ভ্রমণ করে গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
পূর্ণাঙ্গ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে মামলা, আপিল এবং চূড়ান্তভাবে ইরানের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক রায় অনুমোদিত হয়।
ওই রায় কার্যকর করার মাধ্যমে ইরান আবারো বার্তা দিল যে, দেশীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নিরাপত্তা রক্ষার প্রশ্নে তারা কোনো ধরনের ছাড় দেবে না।
ইরান অতীতেও একাধিকবার দাবি করেছে, ইসরায়েল বিভিন্ন সময় দেশটির অভ্যন্তরে গুপ্তচর নেটওয়ার্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে এবং তেহরান নিয়মিতভাবে এমন নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার কথা জানিয়ে থাকে।
এদিকে ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোর জানিয়েছে, মাদানির মৃত্যুদণ্ড এমন এক সময়ে কার্যকর করা হলো- যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা তীব্রতর হচ্ছে।
ইরানের বিচার বিভাগ জানায়, মাদানি ‘জায়োনিস্ট ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন’ এবং দেশের সংবেদনশীল তথ্য বিদেশে পাচার করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্রাসেলস ও ইসরায়েল অধিকৃত ভূখণ্ডে মোসাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের কাছ থেকে ইউরো ও বিটকয়েনের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করেন। তিনি হলেন গত দুই মাসে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি। এর আগে এপ্রিলে মোহসেন লাংগারনেশিন নামে আরেকজনকে মোসাদের সহায়তায় ২০২২ সালে এক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে ফাঁসি দেওয়া হয়।
এদিকে মাদানির মা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমার ছেলে তার দেশ ও পরিবারকে ভালোবাসে। তার মামলাটি ত্রুটিপূর্ণ এবং মৃত্যুদণ্ড বাতিল হওয়া উচিত ছিল’।
ইরানের হিউম্যান রাইটস জানায়, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৭৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে শেষ ১০ দিনেই ৬০ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ