ঢাকা ০৫:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেনি ইসরায়েল

  • আপডেট সময় : ০৫:১৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • ০ বার পড়া হয়েছে

ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেনি ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা এখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বাতিল করা হয়নি। অথচ এই ধরনের কোনো পদক্ষেপে আপাতত সমর্থন দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুরো বিষয়টি নিয়ে অবগত এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং আরো দুই ব্যক্তির বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গত কয়েকমাস ধরেই ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইরানে হামলা করার কিছু পরিকল্পনা পেশ করে আসছে তেল আবিব। আসন্ন বসন্ত ও গ্রীষ্মকালকে প্রস্তাবিত হামলার সময় হিসেবে নির্ধারিত করা হয়েছে। বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযানের মিশেলে প্রস্তাবিত ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অন্তত এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেবে বলে বিশ্বাস করে ইসরায়েল।

ইরানকে যে কোনো মূল্যে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনার চূড়ান্ত ফল হতে হবে পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা। তবে তাদের এই প্রস্তাবে আপাতত সমর্থন দিতে অনীহা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। সেখানে এই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, কূটনৈতিক উপায়ে ইরানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সমাধানই আপাতত তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শনিবার আয়োজিত এক আলোচনা শেষে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি বলেছেন তাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়াই হামলার পরিকল্পনা এখনও বিবেচনায় রেখেছে ইসরায়েল। প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত পরিকল্পনার তুলনায় যথেষ্ট সীমিত পরিসরের একটি হামলা নিয়ে যাচাইবাছাই করেছে তারা, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামান্য সমর্থন পেলেই তারা কাজ চালিয়ে নিতে পারবে। অবশ্য, এই পরিকল্পনা কবে কার্যকরের চেষ্টা হবে অথবা আদৌ ইসরায়েল অগ্রসর হবে কিনা- সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। বিশেষত, আলোচনা এখনও ভেস্তে না যাওয়ায় এ ধরনের পদক্ষেপে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। মার্কিন প্রচেষ্টা চলাকালীন হামলা চালালে ট্রাম্পের বিরক্তির উদ্রেক হতে পারে, যার পরিণতি হতে পারে মার্কিন সমর্থন কমে যাওয়া।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তারা ট্রাম্পের মন্তব্যের উদ্ধৃতি টেনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তিনি ইসরায়েলের প্রস্তাব পুরোপুরি খারিজ করেননি ঠিকই কিন্তু তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক কোনো পদক্ষেপ নিতে তাড়াহুড়ো করতে চান না। ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি মনে করি, দুর্দান্ত একটি দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার এবং মৃত্যুর হাতছানি এড়িয়ে সুখেশান্তিতে বাস করার সুযোগে ইরানের রয়েছে। আমিও এটিই চাই, আমার প্রথম অগ্রাধিকার এটি। আর বিকল্প কোনো পন্থা ইরানের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এখনও ইরানের ওপর হামলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এদিকে, এক ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা অবগত এবং এ ধরনের হামলা হলে ইরানও পাল্টা কঠোর ও দৃঢ় ব্যবস্থা নেবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেনি ইসরায়েল

আপডেট সময় : ০৫:১৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা এখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বাতিল করা হয়নি। অথচ এই ধরনের কোনো পদক্ষেপে আপাতত সমর্থন দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুরো বিষয়টি নিয়ে অবগত এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং আরো দুই ব্যক্তির বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, গত কয়েকমাস ধরেই ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইরানে হামলা করার কিছু পরিকল্পনা পেশ করে আসছে তেল আবিব। আসন্ন বসন্ত ও গ্রীষ্মকালকে প্রস্তাবিত হামলার সময় হিসেবে নির্ধারিত করা হয়েছে। বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযানের মিশেলে প্রস্তাবিত ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অন্তত এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেবে বলে বিশ্বাস করে ইসরায়েল।

ইরানকে যে কোনো মূল্যে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনার চূড়ান্ত ফল হতে হবে পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা। তবে তাদের এই প্রস্তাবে আপাতত সমর্থন দিতে অনীহা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। সেখানে এই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, কূটনৈতিক উপায়ে ইরানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সমাধানই আপাতত তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শনিবার আয়োজিত এক আলোচনা শেষে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি বলেছেন তাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়াই হামলার পরিকল্পনা এখনও বিবেচনায় রেখেছে ইসরায়েল। প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত পরিকল্পনার তুলনায় যথেষ্ট সীমিত পরিসরের একটি হামলা নিয়ে যাচাইবাছাই করেছে তারা, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামান্য সমর্থন পেলেই তারা কাজ চালিয়ে নিতে পারবে। অবশ্য, এই পরিকল্পনা কবে কার্যকরের চেষ্টা হবে অথবা আদৌ ইসরায়েল অগ্রসর হবে কিনা- সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। বিশেষত, আলোচনা এখনও ভেস্তে না যাওয়ায় এ ধরনের পদক্ষেপে বরং হিতে বিপরীত হতে পারে। মার্কিন প্রচেষ্টা চলাকালীন হামলা চালালে ট্রাম্পের বিরক্তির উদ্রেক হতে পারে, যার পরিণতি হতে পারে মার্কিন সমর্থন কমে যাওয়া।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তারা ট্রাম্পের মন্তব্যের উদ্ধৃতি টেনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তিনি ইসরায়েলের প্রস্তাব পুরোপুরি খারিজ করেননি ঠিকই কিন্তু তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক কোনো পদক্ষেপ নিতে তাড়াহুড়ো করতে চান না। ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি মনে করি, দুর্দান্ত একটি দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার এবং মৃত্যুর হাতছানি এড়িয়ে সুখেশান্তিতে বাস করার সুযোগে ইরানের রয়েছে। আমিও এটিই চাই, আমার প্রথম অগ্রাধিকার এটি। আর বিকল্প কোনো পন্থা ইরানের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এখনও ইরানের ওপর হামলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এদিকে, এক ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা অবগত এবং এ ধরনের হামলা হলে ইরানও পাল্টা কঠোর ও দৃঢ় ব্যবস্থা নেবে।