ঢাকা ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ট্রাম্প

  • আপডেট সময় : ০৭:০৩:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বলেছেন, ইরান তাদের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি তাদের এই অনুরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

মধ্য এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজে ট্রাম্প বলেন, সত্যি বলতে, ইরান জিজ্ঞাসা করে আসছে, নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া যায় কি না। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের খুবই কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটি পরিস্থিতিকে সত্যিই কঠিন করে তুলেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, আমি সেটা শুনতে প্রস্তুত এবং আমরা দেখব কী হয়। তবে আমি এর জন্য উন্মুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে আসছে। ইরান অবশ্য জোর দিয়ে বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে। কোনো পরমাণু অস্ত্র অর্জন তাদের উদ্দেশ্য নয়। তেহরান বছরের পর বছর ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর ইরানের ওপর আরো কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং আগের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হয়।

গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে, ইসরায়েল ইরানের ওপর নজিরবিহীন আগ্রাসন শুরু করে। দেশটির ওপর বোমা হামলা চালায়। এতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যায়। দুই দেশের ওই সংঘাত ১২ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ইসরায়েলের হামলার কারণে এপ্রিল মাসে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শুরু হওয়া পারমাণবিক আলোচনা ব্যাহত হয়েছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান একসময় ‘মধ্যপ্রাচ্যের দাপুটে শক্তি’ ছিল। কিন্তু এখন তাদের ‘পারমাণবিক অস্ত্র’ পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পুরো মাত্রা এখনো অজানা। সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি প্রক্রিয়াটি শুরু করার পর তথাকথিত ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থার অধীনে জাতিসংঘ তেহরানের বিরুদ্ধে আবার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। এসব ব্যবস্থা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকলাপ সংক্রান্ত যাবতীয় লেনদেন নিষিদ্ধ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার বেশ কয়েক দফা অনুষ্ঠিত হয়েছে ওমানে। এই দেশটি উভয় পক্ষকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে সীমিত করে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছানো।

সানা/ওআ/আপ্র/০৭/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০৭:০৩:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বলেছেন, ইরান তাদের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি তাদের এই অনুরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।

মধ্য এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজে ট্রাম্প বলেন, সত্যি বলতে, ইরান জিজ্ঞাসা করে আসছে, নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া যায় কি না। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের খুবই কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটি পরিস্থিতিকে সত্যিই কঠিন করে তুলেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, আমি সেটা শুনতে প্রস্তুত এবং আমরা দেখব কী হয়। তবে আমি এর জন্য উন্মুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে আসছে। ইরান অবশ্য জোর দিয়ে বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে। কোনো পরমাণু অস্ত্র অর্জন তাদের উদ্দেশ্য নয়। তেহরান বছরের পর বছর ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর ইরানের ওপর আরো কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং আগের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হয়।

গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে, ইসরায়েল ইরানের ওপর নজিরবিহীন আগ্রাসন শুরু করে। দেশটির ওপর বোমা হামলা চালায়। এতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যায়। দুই দেশের ওই সংঘাত ১২ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ইসরায়েলের হামলার কারণে এপ্রিল মাসে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শুরু হওয়া পারমাণবিক আলোচনা ব্যাহত হয়েছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান একসময় ‘মধ্যপ্রাচ্যের দাপুটে শক্তি’ ছিল। কিন্তু এখন তাদের ‘পারমাণবিক অস্ত্র’ পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পুরো মাত্রা এখনো অজানা। সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি প্রক্রিয়াটি শুরু করার পর তথাকথিত ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থার অধীনে জাতিসংঘ তেহরানের বিরুদ্ধে আবার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। এসব ব্যবস্থা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকলাপ সংক্রান্ত যাবতীয় লেনদেন নিষিদ্ধ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার বেশ কয়েক দফা অনুষ্ঠিত হয়েছে ওমানে। এই দেশটি উভয় পক্ষকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে সীমিত করে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছানো।

সানা/ওআ/আপ্র/০৭/১১/২০২৫