বিশেষ সংবাদদাতা : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রকৃত দেনার পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বেপরোয়া ব্যবসার কারণে এই প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম শুরুর দেড় বছরের মাথায় ছয় হাজার কোটি টাকা দেনার মুখোমুখি হয়। এর পর গত এক বছরে তাদের সর্বমোট দেনা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ইভ্যালি-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, আকর্ষণীয় অফার দিয়ে কম মূল্যে পণ্য বিক্রির নামে সারাদেশের লাখ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ওই পরিমাণ অর্থ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে ব্যক্তি ও মার্চেন্ট পর্যায়ের গ্রাহকদের কাছে ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ৩৩৮ কোটি টাকা। এ অর্থ আত্মসাৎ করে তাদের ব্যাংক হিসাব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ই-কমার্স ব্যবসায় জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ইভ্যালির গ্রাহক অফার, গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ, ব্যাংক লেনদেন, ইভ্যালির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব নিরপেক্ষ একটি অডিট টিম দিয়ে তদন্ত করা হলে অস্বাভাবিক দেনা ছাড়াও অজানা অনেক কাহিনি বেরিয়ে আসবে। সূত্র জানায়, গত আড়াই বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি ই-কমার্সভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা দামি ব্র্যান্ডের ‘রেঞ্জ রোভার’, ‘পোরশে’, ‘অডি’ গাড়ি চালাচ্ছেন। বিলাসী তাদের জীবনযাপন। প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে তারা অর্থ-সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুবাইতে অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে। ইভ্যালির এমডি ও সিইও মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন একে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। জানা গেছে, ইভ্যালি ই-কমার্স ব্যবসার জন্য নিবন্ধন গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ১৪ মে। আনুষ্ঠানিক ব্যবসা শুরু করে একই বছরের ডিসেম্বরে। শুরুতেই তারা নানা ধরনের পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় অফার দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। বাজারের চেয়ে অস্বাভাবিক কম মূল্যে পণ্য বিক্রির একের পর এক অফার দিতে থাকে তারা। কিছু গ্রাহককে বড় অংকের ডিসকাউন্ট দিয়ে পণ্য সরবরাহ করে প্রচার চালানো হতো। দু’শ থেকে তিনশ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট অফারও ছিল তাদের। এ ধরনের অফারে গ্রাহক বিনামূল্যে অতিরিক্ত পণ্যও পেয়েছে। এতে গ্রাহকসাধারণের মধ্যে ইভ্যালির পণ্য কেনার ক্ষেত্রে দারুণ মোহ সৃষ্টি হয়। কম দামে আগে পণ্য কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে বুকিং দিয়েছেন গ্রাহকরা। ইভ্যালির ব্যবসায় জড়িত একটি সূত্র জানায়, মোটরসাইকেল বিক্রির অফারে এক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে একশ জনের মধ্যে সরবরাহ করা হতো। বাকি ৯০০ গ্রাহককে দিই-দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণ করা হতো। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, ওই এক হাজার জনের কাছ থেকে ইভ্যালি দুই লাখ টাকা মূল্যের প্রতিটি বাইকের দাম নিয়েছে এক লাখ টাকা। তাতে এক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় হয় ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যবসার কৌশল হিসেবে একশ গ্রাহককে বাইক সরবরাহ করা হয়। এই হিসাব অনুযায়ী একশ বাইকের দাম হয় এক কোটি ৮০ লাখ টাকা। বাকি ৯০০ গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া ৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ইভ্যালির অ্যাকাউন্টে থেকে যেত। ইভ্যালির কর্ণধারদের আখের গোছাতে ভোগ-বিলাসে খরচ করা হতো এই টাকা। এর পর আরও আকর্ষণীয় অফার প্রচার করা হতো। এ অফার থেকে একইভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া হতো মোটা অংকের টাকা। এ অফার থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করে আগের অফারে বঞ্চিত খুবই সামান্যসংখ্যক গ্রাহককে পণ্য দেওয়া হতো। এভাবে চলমান অফারে বঞ্চিত হতো সিংহভাগ গ্রাহক। বর্তমানে ইভ্যালির গ্রাহকসংখ্যা কম-বেশি ৭০ লাখ বলে জানা গেছে। ইভ্যালি-সংশ্নিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত বছর জুলাইতে এ প্রতিষ্ঠানের দেনার পরিমাণ ছিল ছয় হাজার কোটি টাকা। বর্তমান সময়ে এই দেনা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকায়। জানা গেছে, ইভ্যালির বিরুদ্ধে গ্রাহক প্রতারণার প্রথম অভিযোগ করেন অ্যামাজন বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ চৌধুরী। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংক, এনএসআইসহ সরকারের সাতটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। এর পরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক ইভ্যালির ওপর নজরদারি শুরু করে। আলাদা তদন্তে তারা গ্রাহক প্রতারণা ও গ্রাহকের অর্থ তছরুপের প্রমাণ পায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছরের শেষদিকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দুদকে পাঠায়। দুদক তখন অভিযোগটির প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে। পরে মন্ত্রণালয় গত ৭ জুলাই আরেকটি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠায় দুদকে। এর পর দুদক অভিযোগটির অনুসন্ধান জোরদার করে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও ইভ্যালির প্রতারণা সংক্রান্ত কিছু নথি দুদকে পাঠানো হয়। গ্রাহক প্রতারণার দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছর আগস্টে ইভ্যালির ব্যাংক লেনদেন বন্ধ করে দেয়। পরে ইভ্যালির কর্ণধাররা নানা পর্যায়ে তদবির করে শর্তসাপেক্ষে ব্যাংক লেনদেন চালুর ব্যবস্থা করেন। এ শর্তে গ্রাহকদের জন্য অস্বাভাবিক অফার না দেওয়াসহ অন্যান্য শর্ত ছিল।
ইভ্যালি অফিস বন্ধ, ভাউচারে মিলছে না পণ্য
বকেয়া টাকার জন্য পণ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং পণ্য না পেয়ে অর্থ ফেরতের জন্য গ্রাহকরা ছুটছেন ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস ইভ্যালির কার্যালয়ে। কিন্তু রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইভ্যালির কার্যালয়টি বন্ধ রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই। হটলাইনে ফোন করেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মীকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। এদিকে ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (মার্চেন্ট) কেউ কেউ গ্রাহকদের পণ্য দিচ্ছে না। ইভ্যালির দেওয়া ভাউচার দিলেও প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের বলছে ইভ্যালির কাছ থেকে পণ্য বুঝে নিতে। কারণ ভাউচারের বিপরীতে ইভ্যালি তাদের পাওনা পরিশোধ করেনি। আবার চেক দিলেও ওই চেক ব্যাংকে জমা না দিতে বলছে ইভ্যালি। কারণ তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে টাকা নেই। টাকা পাচ্ছে না বলে পণ্য সরবরাহকারীদের কেউ কেউ ইভ্যালির দেওয়া গিফট ভাউচারের বিপরীতে পণ্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এসব নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে কয়েক দিন ধরে। এত দিন মূল অভিযোগ ছিল, গ্রাহকদের একটা অংশ সময়মতো পণ্য পাচ্ছেন না। গত বুধবার দেশি পোশাকের ব্র্যান্ড ‘রঙ বাংলাদেশ’ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ইভ্যালি যে গিফট ভাউচারগুলো কিনেছিল, সেগুলো নিয়ে বিশেষ সমস্যায় পড়েছে তারা। গিফট ভাউচার নিলেও সিংহভাগ ক্ষেত্রেই টাকা পরিশোধ করেনি ইভ্যালি। অনেকবার যোগাযোগ করলেও ইভ্যালি এ ব্যাপারে সন্তোষজনক উত্তর দেয়নি। ফলে ইভ্যালির এই ভাউচার ব্যবহার করে তারা এখন কেনাকাটা করতে দিতে পারছে না। ইভ্যালির ফেসবুক পেইজে ক্রেতা ও বিক্রেতারা নানা অভিযোগ জানাচ্ছেন। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ইভ্যালির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিলে সেখানে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ ইভ্যালি ডটকমের মোট সম্পদ ছিল ৯১ কোটি ৬৯ লাখ ৪২ হাজার ৮৪৬ টাকা (চলতি সম্পদ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৬ টাকা) এবং মোট দায় ছিল ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৪ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকের কাছে ইভ্যালির দায় ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্টের কাছে দায় ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকা। ইভ্যালি অফিসের সামনের এক চা বিক্রেতা জানান, লকডাউন ঘোষণার তিন দিন আগে থেকে ওই অফিস বন্ধ। ভবনের নিচে দায়িত্বরত একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, কঠোর লকডাউন শুরুর আগে গত ২৭ জুন থেকে অফিস বন্ধ রেখেছে ইভ্যালি। ঈদের আগে আর খোলার সম্ভাবনা নেই।
ইভ্যালির চেয়ারম্যান-এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
এদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডটকমের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং এমডি মো. রাসেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি জানান, ১৫ জুলাই বৃহস্পতিবার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দিয়েছেন। এর আগে তারা যেন বিদেশ যেতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিয়েছিল দুদক। এই বিষয়ে উচ্চ আদালতের দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, দুদক যখন জানলো তারা বিদেশ চলে যেতে পারেন তখন দুদক ব্যবস্থা নেয়। তখন এখতিয়ার সম্পন্ন কোর্ট খোলা ছিল না। বৃহস্পতিবার এখতিয়ার সম্পন্ন কোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞার আদেশ এসেছে। জানা গেছে, দুদকের একজন সহকারী পরিচালক ও একজন উপসহকারী পরিচালককে ইভ্যালির দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ৪ জুলাই ইভ্যালির বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের চার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
ইভ্যালিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ই-ক্যাবের
এদিকে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির সদস্যপদ কেন স্থগিত করা হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। ইভ্যালির বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে ওঠা বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ- যেমন গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা, ব্যবসায়ীদের টাকা আটকে রাখা বা পরিশোধ না করাসহ অসংখ্য অভিযোগ আমলে নিয়ে ই-ক্যাব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার (১৪ জুলাই) ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয় ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলকে। মোহাম্মদ রাসেলকে নোটিশ ইস্যুর ৭ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ইভ্যালির বক্তব্য : কার্যক্রম চালু ছিল, আছে
এদিকে ইভ্যালি বলছে তাদের কার্যক্রম চালু আছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে ইভ্যালির কার্যালয় এবং হটলাইন সম্পর্কিত কয়েকটি সংবাদ কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। সেসব সংবাদে দাবি করা হয়েছে যে, ইভ্যালির কার্যালয়, কার্যক্রম এবং গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের হটলাইন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বিষয়টি মোটেও সত্য নয়। ফলে এসব বিষয়ে ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অবস্থান পরিষ্কার করতে চায়।
১. ইভ্যালির কার্যালয় বন্ধ না বরং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার নির্ধারিত বিধিনিষেধের আলোকে দাফতরিক কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। শুধু জরুরি সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভাগের লোকবলই অফিসে উপস্থিত হয়ে সরাসরি কাজ করছেন। আমাদের তিনটি ওয়্যারহাউস আছে। সেখানে কর্মীরা গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত আছেন এবং গ্রাহকরা নিয়মিতভাবে তাদের অর্ডার করা পণ্যের ডেলিভারি পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসেও যখন সরকার চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে বা লকডাউন দেয়, তখনও একই নিয়মে ইভ্যালির কর্মীরা ‘হোম অফিস’ করে এবং গ্রাহক সেবা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় সে সময়ও দেখভাল করা হয়।
২. সরকারি বিধিনিষেধের আলোকে ব্যাপক লোক সমাগম এড়াতে অফিস থেকে সশরীরে গ্রাহক সেবা দেয়া সাময়িক বন্ধ আছে। উপরন্তু লকডাউনের আগে এবং পরে একাধিক কর্মী কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এমতাবস্থায় কর্মীদের অফিসে এনে সবার জীবনকে আমরা ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারি না।
৩. তবে গ্রাহকেরা আমাদের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম এবং ফেসবুক থেকে নিয়মিত সেবা নিতে পারছেন। একই সঙ্গে আমাদের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র হটলাইন নম্বর প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সক্রিয় আছে। লকডাউন ব্যতীত এই সেবা ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহের ৭ দিন চালু থাকে।
৪. এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, ইভ্যালি একটি কঠিন সময় পার করছে। এমন সময়ে গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন হওয়াও স্বাভাবিক। ফলে গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে কলের সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে। অধিক সংখ্যক গ্রাহকদের সেবা দিতে গিয়ে কোনো কোনো গ্রাহককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এমনটা যেকোন প্রতিষ্ঠানের কল সেন্টারের জন্যই স্বাভাবিক একটি বিষয়।
৫. আমরা আশঙ্কা করছি যে, কোনো এক বা একাধিক স্বার্থান্বেষী মহল ইভ্যালির ব্যাপক ব্যবসায়িক সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, গুজব ও মিথ্যা তথ্য সম্বলিত প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি। ইভ্যালি সম্পর্কিত সকল সর্বশেষ তথ্য গ্রাহকদের সাথে বিনিময় করা হবে।
ইভ্যালির দেনা ১০ হাজার কোটি টাকার বেশী!
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ