নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : ইভিএমে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত মেয়র পদপ্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার ভবিষ্যতে এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচনের একদিন পর গতকাল সোমবার দুপুরে হাতি মার্কার স্বতন্ত্র এই প্রার্থী কয়েকটি টেলিভিশনকে বলেন, “সকল মানুষকে বলব, তারা যেন ইভিএমে ভোটে না যায়। আমি আগেও বলছি, ইভিএম একটা চুরির বাক্স, এখন বলতাছি এইটা ডাকাতির বাক্স।”
গত রোববার ভোটের সময় ইভিএমে ভোটগ্রহণে ‘স্লথ গতি’ এবং মেশিন অকেজো হওয়ার অভিযোগ এনে বলেন, “ভোটে মানুষ ছিল, কিন্তু ইভিএম মেশিন স্লো ছিল। এতই স্লো ছিল যে, ভোটার টানতে পারে নাই। মানুষ লাইনে দাঁড়াইয়া বিরক্ত হয়ে ভোটার স্লিপ ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে চলে গেছে।” “অনেক জায়গায় হ্যাঙ হইয়া পইড়া ছিল, অনেক জায়গায় ওপেন হয় নাই।”
বিএনপির পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া তৈমুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দুইবারের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে প্রায় ৬৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। নির্বাচনে আইভী পেয়েছেন এক লাখ ৫৯ হাজার ৯৭, আর তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট। নির্বাচনের পর রাতে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভোটে পরাজয়ের কারণ হিসেবে ‘প্রশাসনিক ও ইভিএমের কারচুপির’ কথা বলেন তিনি। গতকাল সোমবারও তিনি একই অভিযোগ করে সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বলেন, “আমি সকল রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব, আপনারা যে এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাননি, সেটা জাস্টিফায়েড। “এই সরকারের অধীনে এবং ইভিএম দিয়ে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। গণভবন থেকে, বঙ্গভবন থেকে যার নামে টিপ দেবে সেই নির্বাচিত হবে।”
গ্রেফতার নেতাকর্মীদের জামিন আবেদন নিয়ে আদালতে তৈমুর : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরাজিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ১০ নেতাকর্মীর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় আসামিদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ক অঞ্চলের বিচারক নুরুন নাহারের ইয়াসমিনের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তবে আদালত এখন পর্যন্ত কোনও আদেশ দেয়নি। রিমান্ড শুনানিতে আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার নিজেই অংশ নেন। এ সময় তিনি আসামিদের পাল্টা জামিনের আবেদন করে শুনানিতে অংশ নেন। আদালতে তার সঙ্গে সহযোগিতায় ছিলেন মেয়ে ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকারসহ আরও বেশ কয়েকজন আইনজীবী। রিমান্ড শুনানি শেষে তৈমুর আলম খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশ কয়েকদিনে তার প্রায় ৩০ নেতাকর্মীকে অযাচিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রেফতার করে হেফাজতের সহিংসতার মামলায় আসামি করেছে। নির্বাচনে ব্যাঘাত সৃষ্টির জন্য তার গাড়িচালকসহ ব্যক্তিগত কর্মচারিদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশপাশি দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আদালতের কোনও নির্দেশ আসেনি। তবে সন্তোষজনক না হলে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন। তৈমুর আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া অপরাধ হয়ে থাকলে তাকে গ্রেফতার করা হোক। তবু তার কর্মীদের যেন মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশের নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তিনি। নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, আজ জামিন শুনানি হয়েছে। আদালত আদেশের জন্য রেখেছেন।
ইভিএম ডাকাতির বাক্স: তৈমুর
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ