ঢাকা ১২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

ইনটেল সহ-প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুরের জীবনাবসান

  • আপডেট সময় : ১১:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : বিদায় নিলেন চিপ নির্মাতা কোম্পানি ইনটেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী গর্ডন মুর। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। বিশ্বের শীর্ষ চিপ নির্মাতা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা এবং এর নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কম্পিউটারের মূল উপাদান মাইক্রোপ্রসেসরের উন্নয়ন নিয়েও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তিনি, যেটি পরে ‘মুর’স ল’ নামে পরিচিতি পায়।
পাশাপাশি, ‘ইনটেল ট্রিনিটি’ নামে পরিচিত বইটি লেখা সর্বশেষ জীবিত সদস্যও ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে এই বই লেখেন ইনটেলের আরেক প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট নইস ও তাদের কোম্পানির সর্বপ্রথম নিয়োগ পাওয়া কর্মী অ্যান্ডি গ্রোভ। এর আগে মুর ও নইস ইনটেল ট্রানজিস্টরের সহ-উদ্ভাবক উইলিয়াম শকলি’র সঙ্গেও কাজ করেন। পরবর্তীতে ‘ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর’ নামের সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি প্রতিষ্ঠাতেও তাদের ভূমিকা ছিল। ১৯৬৮ সালে এই দুই সহকর্মী ‘এনএম ইলেকট্রনিক্স’ নামে নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ‘ইনটেল’ হয়ে ওঠে। এর কয়েক বছর আগে ১৯৬৫ সালে মুর এক গবেষণাপত্র লেখেন, যেখানে সময়ের সঙ্গে কম্পিউটারের আকার ছোট হয়ে আসার ধারণাটি উঠে আসে। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, প্রতি বছরে একটি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটে আঁটানো ট্রানজিস্টরের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে থাকবে। এর ফলে, তুলনামূলক ছোট ও শক্তিশালী চিপ নকশা ও উৎপাদিত হবে, যা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয়।
তার এই অনুমান পরবর্তীতে ‘মুর’স ল’ নামে পরিচিতি পায়, যা এর পরবর্তী বছরগুলোয় সঠিক হিসেবে প্রমাণিত হয়। ১৯৭৫ সাল নাগাদ নিজের অনুমান কিছুটা সংশোধন করে প্রতি দুই বছরে ট্রানজিস্টর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার কথা বলেন তিনি। এখন অবশ্য সেই সময়ের ব্যবধান ১৮ মাসে নেমে এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট। মুরের জীবনাবসানে ইনটেলের বর্তমান সিইও প্যাট গেলসিঙ্গার বলেন, “গর্ডন মুর তার অন্তর্দৃষ্টি এবং দূরদৃষ্টির মাধ্যমে প্রযুক্তি শিল্পের সংজ্ঞা তৈরি করে দিয়েছেন। ট্রানজিস্টরের সম্ভাবনা বিকাশে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পশপাশি দশকের পর দশক ধরে প্রযুক্তিবিদ এবং উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন।”
১৯৭৯ সালে কোম্পানির পর্ষদ চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ইনটেলের ‘সিইও’র দায়িত্ব পান মুর। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে তিনি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব থেকে সরে আসেন। মূলত নইস ও গ্রোভের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করতেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি ও গ্রোভ সিদ্ধান্ত নেন, ইনটেল নিজস্ব মেমরি ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বদলে মাইক্রোপ্রসেসরের দিকে মনযোগ দেবে। তাদের ভাষ্যমতে, এর পর বাকিটা ইতিহাস। ২০০৬ সালে ইনটেলের দায়িত্ব থেকে পুরোপুরিভাবে সরে আসার আগে তিনি ও তার স্ত্রী পাঁচশ কোটি ডলারের তহবিল’সহ ‘গর্ডন অ্যান্ড বেটি মুর ফাউন্ডেশন’ নামের দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাউন্ডেশন বিভিন্ন পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টায় সমর্থন দেয়, যার বেশিরভাগই স্যান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায়। এ ছাড়া, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগেও অনুদান দেয় সংস্থাটি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচন ভণ্ডুল করার অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ইনটেল সহ-প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুরের জীবনাবসান

আপডেট সময় : ১১:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

প্রযুক্তি ডেস্ক : বিদায় নিলেন চিপ নির্মাতা কোম্পানি ইনটেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী গর্ডন মুর। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। বিশ্বের শীর্ষ চিপ নির্মাতা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা এবং এর নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কম্পিউটারের মূল উপাদান মাইক্রোপ্রসেসরের উন্নয়ন নিয়েও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তিনি, যেটি পরে ‘মুর’স ল’ নামে পরিচিতি পায়।
পাশাপাশি, ‘ইনটেল ট্রিনিটি’ নামে পরিচিত বইটি লেখা সর্বশেষ জীবিত সদস্যও ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে এই বই লেখেন ইনটেলের আরেক প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট নইস ও তাদের কোম্পানির সর্বপ্রথম নিয়োগ পাওয়া কর্মী অ্যান্ডি গ্রোভ। এর আগে মুর ও নইস ইনটেল ট্রানজিস্টরের সহ-উদ্ভাবক উইলিয়াম শকলি’র সঙ্গেও কাজ করেন। পরবর্তীতে ‘ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর’ নামের সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি প্রতিষ্ঠাতেও তাদের ভূমিকা ছিল। ১৯৬৮ সালে এই দুই সহকর্মী ‘এনএম ইলেকট্রনিক্স’ নামে নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ‘ইনটেল’ হয়ে ওঠে। এর কয়েক বছর আগে ১৯৬৫ সালে মুর এক গবেষণাপত্র লেখেন, যেখানে সময়ের সঙ্গে কম্পিউটারের আকার ছোট হয়ে আসার ধারণাটি উঠে আসে। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, প্রতি বছরে একটি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটে আঁটানো ট্রানজিস্টরের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে থাকবে। এর ফলে, তুলনামূলক ছোট ও শক্তিশালী চিপ নকশা ও উৎপাদিত হবে, যা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয়।
তার এই অনুমান পরবর্তীতে ‘মুর’স ল’ নামে পরিচিতি পায়, যা এর পরবর্তী বছরগুলোয় সঠিক হিসেবে প্রমাণিত হয়। ১৯৭৫ সাল নাগাদ নিজের অনুমান কিছুটা সংশোধন করে প্রতি দুই বছরে ট্রানজিস্টর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার কথা বলেন তিনি। এখন অবশ্য সেই সময়ের ব্যবধান ১৮ মাসে নেমে এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট। মুরের জীবনাবসানে ইনটেলের বর্তমান সিইও প্যাট গেলসিঙ্গার বলেন, “গর্ডন মুর তার অন্তর্দৃষ্টি এবং দূরদৃষ্টির মাধ্যমে প্রযুক্তি শিল্পের সংজ্ঞা তৈরি করে দিয়েছেন। ট্রানজিস্টরের সম্ভাবনা বিকাশে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পশপাশি দশকের পর দশক ধরে প্রযুক্তিবিদ এবং উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন।”
১৯৭৯ সালে কোম্পানির পর্ষদ চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ইনটেলের ‘সিইও’র দায়িত্ব পান মুর। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে তিনি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব থেকে সরে আসেন। মূলত নইস ও গ্রোভের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করতেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি ও গ্রোভ সিদ্ধান্ত নেন, ইনটেল নিজস্ব মেমরি ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বদলে মাইক্রোপ্রসেসরের দিকে মনযোগ দেবে। তাদের ভাষ্যমতে, এর পর বাকিটা ইতিহাস। ২০০৬ সালে ইনটেলের দায়িত্ব থেকে পুরোপুরিভাবে সরে আসার আগে তিনি ও তার স্ত্রী পাঁচশ কোটি ডলারের তহবিল’সহ ‘গর্ডন অ্যান্ড বেটি মুর ফাউন্ডেশন’ নামের দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাউন্ডেশন বিভিন্ন পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টায় সমর্থন দেয়, যার বেশিরভাগই স্যান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায়। এ ছাড়া, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগেও অনুদান দেয় সংস্থাটি।