ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ও উদীয়মান তরুণ লেখক শফিক রিয়ান। তার পৈতৃক নিবাস কিশোরগঞ্জ হলেও জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই যান্ত্রিক শহর ঢাকাতেই। ১৯৯৯ সালের ১ মার্চের বৃষ্টিস্নাত রাতে পিতা-মাতার কোল আলোকিত করে মিরপুরে তার জন্ম। সেদিন বজ্রপাতের আওয়াজে ঢাকা পড়েছিল তার কান্নার স্বর। প্রকৃতির সেই অলিখিত নিয়মই যেন তাকে পরিণত করেছে সদা হাস্যোজ্জ্বল এক মানুষে। সাহিত্যজগতে তার আত্মপ্রকাশ ঔপন্যাসিক হিসেবে। উপন্যাসের ভেতর নিমগ্ন থাকতে তিনি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। শফিক রিয়ানের লেখাপড়ার সূচনা ঘটে সেনাপল্লী হাইস্কুল থেকে। এরপর বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ, ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যায়নরত আছেন। চারপাশে ঘটে চলা কাহিনি ও নিজের জীবনকেই দুই মলাটের মাঝখানে ছড়িয়ে দেওয়ার তীব্র বাসনা তার। অমর একুশে বইমেলা ২০২১ এ ঘাসফুল প্রকাশনী থেকে প্রথম উপন্যাস ‘আজ রাতে চাঁদ উঠবে না’ প্রকাশ হয়। সেখান থেকেই উত্থান। এরপর অন্যকিছু ভাবেননি। নিজেকে আপাদমস্তক লেখক হিসেবেই জাহির করেন পাঠকের সামনে। লেখালেখিটা ঠিক কতটা উপভোগ করেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাহিত্য আমার দিনযাপনের টনিক। কী একঘেয়ে এক জীবনকেই না যাপন করছিলাম এতদিন ধরে। তারপর যেদিন থেকে লিখতে শুরু করলাম, সেদিন থেকেই বোধহয় স্বতস্ফূর্ত নতুন এক জীবন লাভ করলাম।’
ঔপন্যাসিক হিসেবে যতটা সমাদৃত; কবিসত্তার উপস্থিতিটাও তেমনই প্রবল। লিখেছেন, ‘বিধ্বস্ত নক্ষত্র’, ‘নিষিদ্ধ করে দাও সূর্যাস্ত’র মতো পাঠকপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ। তার প্রকাশিতব্য নতুন উপন্যাস ‘দিগন্তের ওপারে’৷ যেখানে পাওয়া যাবে পূর্ণাঙ্গ এক জীবনবোধের দেখা। এছাড়া সামনের দিনগুলোতেও তিনি লিখে যাবেন পাঠকের জন্য, অনাগত শিশুটার জন্য আর নিজের জন্য। লেখালেখিতে ব্যস্ততার পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ, সাহিত্য সংঘের কো-অর্ডিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাহিত্যের জাগরণ ঘটানোই তার মূল উদ্দেশ্য। তিনি বিশ্বাস করেন, আজকের দিনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইপ্রেম বাড়লেই সমৃদ্ধ হবে দেশের সাহিত্য। লেখকজীবন ও সাধারণ জীবনের মধ্যকার পার্থক্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুটো জীবন মূলত একই বৃত্তের একটা সাধারণ বিন্দু। জীবনই সাহিত্য, জীবিকাই সাহিত্যের প্লট। চারপাশে যা ঘটে উদ্দেশ্য ছাড়া ঘটে না। প্রতিটা ছোট ঘটনারই কোনো বৃহৎ উদ্দেশ্য থাকে। লেখকের কাজ স্রেফ সেই উদ্দ্যেশ্যের অনুসন্ধান করা। এছাড়া আর কোনো পার্থক্য নেই। একটিমাত্র আশা নিয়েই হেঁটে চলি আমি, ‘নশ্বর জীবনের গল্পগুলো হয়ে উঠুক অবিনশ্বর।’