ঢাকা ১০:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

ইজিবাইক-অটোরিকশার দখলে পঞ্চগড়, দুর্ভোগ চরমে

  • আপডেট সময় : ১২:১৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : উত্তরের ছোট্ট শহর পঞ্চগড়ের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গী মোড় ও শেরে বাংলা পার্ক যেন এখন ইজিবাইক আর অটোরিকশার রাজত্ব। অঘোষিত স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে শহরের সড়ক, মহাসড়কের দুইপাশ, বিভিন্ন দোকান ও শোরুমের সামনের খালি জায়গা। এতে করে প্রতিনিয়তই তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম যানজট। দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারী ও ব্যবসায়ীরা। প্রায় সাড়ে ৮ বর্গমাইলের এ পঞ্চগড় পৌরসভায় চলাচলকারী রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। এসব যানবাহনের স্ট্যান্ড বাবদ ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় ৪৬ লাখ টাকা আয় করেন পৌরসভা। আর ইজারাদার যানবাহন প্রতি টাকা তোলেন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি বছর মোটা অঙ্কের টাকা আয় করলেও এসব পরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে স্ট্যান্ড বা অন্য সুবিধা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। আর চাহিদা অনুযায়ী টাকা (টোল) দিয়েও স্ট্যান্ড না পেয়ে বাধ্য হয়ে যত্রতত্র পার্কিং করেন বলে দাবি অটোরিকশাচালকসহ শ্রমিক নেতাদের। তেঁতুলিয়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের শহর অংশ পাড় হয়ে একমাত্র ব্রিজ দিয়ে পঞ্চগড়-ঢাকা যাতায়াত করে বিভিন্ন যানবাহন। এছাড়া জেলা শহর থেকে টুনিরহাট হয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা সড়কটিও পঞ্চগড়-ঢাকা যাতায়াত সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নির্ধারিত কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইজিবাইক আর অটোরিকশার দখলে চলে যায়। অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকালে অটোরিকশা নিয়ে শহরে আসি। শহরের বিভিন্ন মহল্লায় যাত্রী নিয়ে যাই। সারাদিন শহরে থেকে রাতে বাড়ি ফিরি। আমাদের দাঁড়াবার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। এজন্য শহরের কোনো না কোন স্থানে দাঁড়াতে হয়। জেলা শহরের সিনেমাহল রোড এলাকার ব্যবসায়ী তাসফি ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক মো. রাজিউর রহমান রাজু বলেন, প্রতিদিন দোকান খোলার পর থেকেই দোকানের সামনে অটোরিকশা আর ইজিবাইক দাঁড়ায়। তাদের জন্য দোকানে ঠিকমতন গ্রাহক আসতে পারে না। আমাদের বেচাকেনার সমস্যা হলেও নানা কারণে তাদের কিছু বলা যায় না। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান শেখ মিলন বলেন, পঞ্চগড় শহরের প্রাণকেন্দ্র এবং এর আশপাশ এলাকা এখন ইজিবাইক ও অটোরিকশার দখলে। এ নিয়ে আমাদের পৌর মেয়রের জরুরি একটা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
জেলা রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ইজিবাইক, অটোরিকশা ভ্যানের ইজারাদার মো. ভূমিজ উদ্দিন বলেন, পঞ্চগড় একটি ছোট শহর। এখানে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার গাড়ি চলাচল করে। রিকশা নিয়ে দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই আমাদের। পৌর মেয়য় জাকিয়া খাতুন বলেন, তাদের স্ট্যান্ডের জন্য পৌরসভা থেকে ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের স্থান দেওয়ার মতো সামর্থ্য এখনও আমার হয়নি। অধিগ্রহণ বা পছন্দমত জায়গাও পাচ্ছি না। টাকারও প্রয়োজন আছে। তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকায় বিশেষ করে সদর হাসপাতাল থেকে বানিয়াপট্টি এবং ধাক্কামারা পর্যন্ত যানজটের বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করেছি। এনিয়ে পুলিশ বিভাগ, স্থানীয় বনিক সমিতি ও শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে গঠিত কমিটির মাধ্যমে আলাদা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং যানজটের সমস্যা সমাধানে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। এজন্য আমাদের শহরে আরেকটা সড়ক দরকার। এ নিয়ে কাজও চলছে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইজিবাইক-অটোরিকশার দখলে পঞ্চগড়, দুর্ভোগ চরমে

আপডেট সময় : ১২:১৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : উত্তরের ছোট্ট শহর পঞ্চগড়ের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গী মোড় ও শেরে বাংলা পার্ক যেন এখন ইজিবাইক আর অটোরিকশার রাজত্ব। অঘোষিত স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে শহরের সড়ক, মহাসড়কের দুইপাশ, বিভিন্ন দোকান ও শোরুমের সামনের খালি জায়গা। এতে করে প্রতিনিয়তই তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম যানজট। দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারী ও ব্যবসায়ীরা। প্রায় সাড়ে ৮ বর্গমাইলের এ পঞ্চগড় পৌরসভায় চলাচলকারী রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, অটোরিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। এসব যানবাহনের স্ট্যান্ড বাবদ ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় ৪৬ লাখ টাকা আয় করেন পৌরসভা। আর ইজারাদার যানবাহন প্রতি টাকা তোলেন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি বছর মোটা অঙ্কের টাকা আয় করলেও এসব পরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে স্ট্যান্ড বা অন্য সুবিধা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। আর চাহিদা অনুযায়ী টাকা (টোল) দিয়েও স্ট্যান্ড না পেয়ে বাধ্য হয়ে যত্রতত্র পার্কিং করেন বলে দাবি অটোরিকশাচালকসহ শ্রমিক নেতাদের। তেঁতুলিয়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের শহর অংশ পাড় হয়ে একমাত্র ব্রিজ দিয়ে পঞ্চগড়-ঢাকা যাতায়াত করে বিভিন্ন যানবাহন। এছাড়া জেলা শহর থেকে টুনিরহাট হয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা সড়কটিও পঞ্চগড়-ঢাকা যাতায়াত সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নির্ধারিত কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইজিবাইক আর অটোরিকশার দখলে চলে যায়। অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকালে অটোরিকশা নিয়ে শহরে আসি। শহরের বিভিন্ন মহল্লায় যাত্রী নিয়ে যাই। সারাদিন শহরে থেকে রাতে বাড়ি ফিরি। আমাদের দাঁড়াবার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। এজন্য শহরের কোনো না কোন স্থানে দাঁড়াতে হয়। জেলা শহরের সিনেমাহল রোড এলাকার ব্যবসায়ী তাসফি ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক মো. রাজিউর রহমান রাজু বলেন, প্রতিদিন দোকান খোলার পর থেকেই দোকানের সামনে অটোরিকশা আর ইজিবাইক দাঁড়ায়। তাদের জন্য দোকানে ঠিকমতন গ্রাহক আসতে পারে না। আমাদের বেচাকেনার সমস্যা হলেও নানা কারণে তাদের কিছু বলা যায় না। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান শেখ মিলন বলেন, পঞ্চগড় শহরের প্রাণকেন্দ্র এবং এর আশপাশ এলাকা এখন ইজিবাইক ও অটোরিকশার দখলে। এ নিয়ে আমাদের পৌর মেয়রের জরুরি একটা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
জেলা রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ইজিবাইক, অটোরিকশা ভ্যানের ইজারাদার মো. ভূমিজ উদ্দিন বলেন, পঞ্চগড় একটি ছোট শহর। এখানে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার গাড়ি চলাচল করে। রিকশা নিয়ে দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই আমাদের। পৌর মেয়য় জাকিয়া খাতুন বলেন, তাদের স্ট্যান্ডের জন্য পৌরসভা থেকে ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের স্থান দেওয়ার মতো সামর্থ্য এখনও আমার হয়নি। অধিগ্রহণ বা পছন্দমত জায়গাও পাচ্ছি না। টাকারও প্রয়োজন আছে। তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকায় বিশেষ করে সদর হাসপাতাল থেকে বানিয়াপট্টি এবং ধাক্কামারা পর্যন্ত যানজটের বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করেছি। এনিয়ে পুলিশ বিভাগ, স্থানীয় বনিক সমিতি ও শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে গঠিত কমিটির মাধ্যমে আলাদা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং যানজটের সমস্যা সমাধানে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। এজন্য আমাদের শহরে আরেকটা সড়ক দরকার। এ নিয়ে কাজও চলছে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।