সুলতান আল এনাম, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইউনিয়ন পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ পাওয়া একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে কোনো ধরনের বাস্তব কাজ না করেই তিনি সরকারি অর্থ তুলে নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র ও সরকারি নথিপত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যান অন্তত ১১টি প্রকল্পে আংশিক কাজ দেখিয়ে এবং আরও ৫টির অধিক প্রকল্পে একেবারেই কোনো কাজ না করেই বিল উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ৪০ দিনের কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত ২৩৭ শ্রমিকের নামে প্রায় ৭০ লাখ টাকা কাজের নামে আত্মসাৎ করা হয়েছে; যা সরকারি তহবিল লুটের এক জঘন্য দৃষ্টান্ত।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, কোথাও সামান্য ধুলোমাটি ফেলে দায়সারা কাজের প্রহসন চালানো হয়েছে, কোথাও কোনো কাজই হয়নি। আবার কোথাও ছয় ইঞ্চি রাস্তার জায়গায় মাত্র তিন ইঞ্চি করে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। একই রাস্তা একাধিক প্রকল্পে দেখিয়ে একাধিকবার বিল তোলার প্রমাণও মিলেছে।
দখলপুর, রামচন্দ্রপুর, দৌলতপুর, মৃর্গিবাথান, সোনাতনপুর, কেষ্টপুর, রিশখালী ও গোবড়াপাড়া এলাকার অন্তত ১৫টির অধিক প্রকল্পে কাজ না করেই গম, চাল ও নগদ অর্থ তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রভাষক আনিচুর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যান জনগণের অর্থ নয়ছয় করেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে কোটি টাকার দুর্নীতি করে চলেছেন। তাকে শুধু সাময়িক নয়, স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে জেল-জরিমানার আওতায় আনতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি.এম. তারিখ-উজ-জামান বলেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। আমি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, চেয়ারম্যান বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে কাজ করেননি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু না হলে তাকে অর্থ ফেরত দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে ইউনিয়ন পরিষদে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গার্মেন্টস শ্রমিকের বিকৃত লাশ উদ্ধার
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারের একটি ভবন থেকে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবকের বিকৃত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে ঘরের দরজা ভেঙ্গে পুলিশ তার গলিত লাশ উদ্ধার করে। পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক তরিকুল পার্শ্ববর্তী কেশবপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
সিরাজুলের ভাই আজিজুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহ ধরে তার ছোট ভাইয়ের খোঁজ ছিল না। রোববার তার স্ত্রীর তালাকনামা বাড়িতে পৌঁছালে বাড়িতে গিয়ে দেখে মৃতদেহ বিছানার ওপর পড়ে আছে। লাশটি বিকৃত হয়ে গেছে।
তরিকুলের মা আইজান নেছা অভিযোগ করেন, তার ছেলের মৃত্যু নিয়ে রহস্য আছে। তার স্ত্রী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, তার রহস্য পুলিশ উদ্ধার করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুক।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, লাশটি চেনার উপায় নেই। হয়তো এক সপ্তাহের বেশি সময় মারা গেছে। এ কারণে শরীরের চামড়া পঁচে গেছে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ