ঢাকা ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

ইউক্রেন সংকটের মুখে জার্মানির প্রতিরক্ষা নীতির আমূল পরিবর্তন

  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেনাবাহিনীর জন্য বিশাল বিনিয়োগ ও বাৎসরিক বাজেট বাড়ানোসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলো জার্মানির সরকার। রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিনের কড়া সমালোচনা করে চ্যান্সেলর শলৎস ইউরোপের নিরাপত্তার উপর জোর দেন। গত রোববার জার্মান সংসদের নি¤œ কক্ষ বুন্ডেসটাগের বিশেষ জরুরি অধিবেশনে চ্যান্সেলর শলৎস অতীতের সংশয় ঝেড়ে ফেলে একাধিক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের ঘোষণা করলেন। তাঁর মতে, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার ঘটনা ‘নতুন যুগের সূচনা’ করেছে। সেই বাস্তব সত্যের মুখে জার্মানির নিরাপত্তাও নতুন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে শলৎস সেনাবাহিনীর জন্য ১০ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের বিনিয়োগের ঘোষণা করলেন। সেইসঙ্গে এবার থেকে জার্মানির মোট দেশজ উৎপাদনের দুই শতাংশের বেশি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়েরও অঙ্গীকার করলেন তিনি। উল্লেখ্য, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জার্মানিসহ ন্যাটোর বেশ কিছু সদস্যের উপর এমন অঙ্গীকার আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।
সংসদে তার ভাষণে শলৎস বলেন, এই যুদ্ধ রাশিয়া নয় সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের যুদ্ধ। তার মতো যুদ্ধবাজের জন্য সীমারেখা স্থির করার ক্ষমতার উপর জোর দেন তিনি। রাশিয়ার এই আগ্রাসনের পক্ষে কোনো যুক্তিই থাকতে পারে না বলে তিনি মনে করেন। সংসদের বাইরে ইউক্রেনের পতাকা এবং দর্শকের আসনে সে দেশের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি রোববারের অধিবেশনকে প্রতীকী মাত্রা দিয়েছিল। সমবেত করতালির মাঝে জার্মানির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক তাকে আলিঙ্গন করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি সঙ্গত কারণেই সামরিক তৎপরতা থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে ন্যাটোসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মিলিত অভিযানে অংশ নেবার চাপ সামলাতে গিয়ে বুন্ডেসভেয়ারের দুর্বলতা আরও স্পষ্ট হয়ে গেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মুখে সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে বর্তমান সরকার অবশেষে প্রতিরক্ষা খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রবিবারের ঘোষণার ফল পেতে অনেক সময় লাগবে। তার আগেই কোনো অঘটন ঘটলে জার্মানিকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ন্যাটোর উপর আরও নির্ভর করতে হবে। উল্লেখ্য, এর আগে শনিবারই জার্মানি অতীতের নীতি ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে ইউনিয়ন শিবির সরকারের এই নীতির পক্ষে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ জার্মানির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইউরোপের নিরাপত্তার এমন গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এই পদক্ষেপ দেশগুলির নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইউক্রেন সংকটের মুখে জার্মানির প্রতিরক্ষা নীতির আমূল পরিবর্তন

আপডেট সময় : ১১:৫৫:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেনাবাহিনীর জন্য বিশাল বিনিয়োগ ও বাৎসরিক বাজেট বাড়ানোসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলো জার্মানির সরকার। রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিনের কড়া সমালোচনা করে চ্যান্সেলর শলৎস ইউরোপের নিরাপত্তার উপর জোর দেন। গত রোববার জার্মান সংসদের নি¤œ কক্ষ বুন্ডেসটাগের বিশেষ জরুরি অধিবেশনে চ্যান্সেলর শলৎস অতীতের সংশয় ঝেড়ে ফেলে একাধিক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের ঘোষণা করলেন। তাঁর মতে, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার ঘটনা ‘নতুন যুগের সূচনা’ করেছে। সেই বাস্তব সত্যের মুখে জার্মানির নিরাপত্তাও নতুন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে শলৎস সেনাবাহিনীর জন্য ১০ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের বিনিয়োগের ঘোষণা করলেন। সেইসঙ্গে এবার থেকে জার্মানির মোট দেশজ উৎপাদনের দুই শতাংশের বেশি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়েরও অঙ্গীকার করলেন তিনি। উল্লেখ্য, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জার্মানিসহ ন্যাটোর বেশ কিছু সদস্যের উপর এমন অঙ্গীকার আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।
সংসদে তার ভাষণে শলৎস বলেন, এই যুদ্ধ রাশিয়া নয় সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের যুদ্ধ। তার মতো যুদ্ধবাজের জন্য সীমারেখা স্থির করার ক্ষমতার উপর জোর দেন তিনি। রাশিয়ার এই আগ্রাসনের পক্ষে কোনো যুক্তিই থাকতে পারে না বলে তিনি মনে করেন। সংসদের বাইরে ইউক্রেনের পতাকা এবং দর্শকের আসনে সে দেশের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি রোববারের অধিবেশনকে প্রতীকী মাত্রা দিয়েছিল। সমবেত করতালির মাঝে জার্মানির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক তাকে আলিঙ্গন করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি সঙ্গত কারণেই সামরিক তৎপরতা থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে ন্যাটোসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মিলিত অভিযানে অংশ নেবার চাপ সামলাতে গিয়ে বুন্ডেসভেয়ারের দুর্বলতা আরও স্পষ্ট হয়ে গেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মুখে সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে বর্তমান সরকার অবশেষে প্রতিরক্ষা খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রবিবারের ঘোষণার ফল পেতে অনেক সময় লাগবে। তার আগেই কোনো অঘটন ঘটলে জার্মানিকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ন্যাটোর উপর আরও নির্ভর করতে হবে। উল্লেখ্য, এর আগে শনিবারই জার্মানি অতীতের নীতি ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে ইউনিয়ন শিবির সরকারের এই নীতির পক্ষে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ জার্মানির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইউরোপের নিরাপত্তার এমন গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এই পদক্ষেপ দেশগুলির নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ।