আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিইভকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে তারা কী অবদান রাখতে পারবে, ইউরোপীয় দেশগুলোকে ওয়াশিংটন এমন প্রশ্নাবলীয় পাঠানোর পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক দূত কিথ কেলগ জানিয়েছেন, ইউক্রেন শান্তি আলোচনার টেবিলে ইউরোপের জন্য কোনো আসন থাকছে না।
ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই আর কিইভকে আগেভাগে কিছু না জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করায় এবং অবিলম্বে শান্তি আলোচনা শুরু করার ঘোষণা দিয়ে ইউরোপকে হতবাক করে দেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সম্প্রতি পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, তারা নেটোর ইউরোপীয় মিত্রদের কাছে আশা করে যে তারা ওই অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রাথমিক দায়িত্ব গ্রহণ করবে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এখন সীমান্ত নিরাপত্তা ও চীনকে প্রতিরোধ করার মতো অন্যান্য অগ্রাধিকার আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপে ইউক্রেন শান্তি চুক্তির প্রক্রিয়া থেকে তাদের বাদ দেওয়া হতে পারে, ইউরোপীয়দের মধ্যে এমন শঙ্কা তৈরি হয়। শান্তি চুক্তি রাশিয়ার প্রতি খুব অনুকূল হয়েছে, বিশেষভাবে এমনটি হলে সেটি ইউরোপের নিরাপত্তাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে ভেবে শঙ্কিত ইউরোপ।
জার্মানির মিউনিখে বৈশ্বিক এক নিরাপত্তা সম্মেলনে শনিবার কেলগ বলেছেন, ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে আর রাশিয়া ও ইউক্রেন প্রধান দুই পক্ষ হবে।
আলোচনার টেবিলে ইউরোপীয়দের থাকার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নে কেলগ বলেন, আমি বাস্তববাদের একটি স্কুল (থেকে) এসেছি। আমার মনে হয়, এটি হতে যাচ্ছে না।
সম্মেলনের পরবর্তী এক অনুষ্ঠানে কেলগ ইউরোপীয়দের আশ্বস্ত করতে ঘোষণা করেন, এর মানে এই নয় যে তাদের স্বার্থ ‘বিবেচনা করা হচ্ছে না’।
কিন্তু ইউরোপীয় নেতারা জানিয়েছেন, তারা আলোচনার বাইরে থাকা মেনে নেবেন না।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টুব মিউনিখে সাংবাদিকদের বলেন, ইউরোপকে বাদ দিয়ে, ইউক্রেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ও ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে কোনো আলোচনা বা মধ্যস্থতার কোনো উপায় নেই। কিন্তু এটির অর্থ ইউরোপের একযোগে কাজ করা দরকার। ইউরোপের কথা কম বলে কাজ বেশি করা দরকার।
স্টুব জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয়দের কাছে যে প্রশ্নাবলী পাঠিয়েছে তা ‘ইউরোপীয়দের ভাবতে বাধ্য করবে’।
ইউরোপীয় একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো নথিতে ছয়টি প্রশ্ন আছে, সেগুলোর মধ্যে একটি শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য।
ওই কূটনীতিক বলেছেন, আমেরিকানরা ইউরোপীয় রাজধানীগুলোর কাছে জানতে চাইছে তারা কতো সংখ্যাক সেনা মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত আছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য ফ্রান্স ইউরোপীয় নেতাদের নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করছে, তবে এই পর্যায়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লভ সিকোরস্কি জানিয়েছেন, সোমবার বৈঠকটি হতে পারে। নেটোর মহাসচিব মার্ক রুটে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

























