ঢাকা ০১:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে ৫০ লাখ মানুষ

  • আপডেট সময় : ০২:০১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পক্ষ থেকে গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য জানানো হয়। জাতিসংঘের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের মুখে ইউরোপ।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৫ জন ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশ ছেড়েছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ছয়জন যারা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেন ছেড়েছে।
আর তৃতীয় বিশ্বের প্রায় দুই লাখ ১৫ হাজার নাগরিকও প্রতিবেশী দেশে পালিয়েছে। এ পর্যন্ত ২৭ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে পালিয়ে গেছে। এছাড়া সাত লাখ ২৫ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে রোমানিয়ায়। ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে- ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ছেড়েছে প্রায় ছয় লাখ ৪৫ হাজার ইউক্রেনীয়। মার্চ মাসে প্রায় লাখ এবং এপ্রিল মাসে এখনো পর্যন্ত সাত লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছে। যারা পালিয়ে গেছে তাদের ৯০ শতাংশ নারী ও শিশু।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৯০০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে সংস্থাটির দাবি, এই সংখ্যা বাস্তবে আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গত ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার নয়শ ৮২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১৬২ জন। সংস্থাটি আরও জানায়, হামলায় এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন দুই হাজার ছয়শ ৫১ জন। আহতদের মধ্যে শিশু রয়েছে ২৫৬ জন। তাদের বেশিরভাগই গোলার আঘাত ও বিমান হামলায় মারা যান। সংস্থাটির হাইকমিশনার মিশেল বেচলেট এর আগে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে, বুচা শহরে বেসামরিক লোকদের নিহত হওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিষয়টিও তুলে ধরে প্রমাণ সংরক্ষণের আহ্বান জানান।
কিয়েভ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের বুচা শহরটিতে তিনশ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি জানিয়েছে ইউক্রেন। এদিকে, রুশ সেনারা চলে যাওয়ার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশ থেকে আরও নয় শতাধিক বেসামরিক মানুষের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্থানীয় পুলিশ প্রধান। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা এক মাস ধরে উত্তেজনা চলার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। এক মাসের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। সূত্র: বিবিসি
যুদ্ধে আড়াই থেকে ৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছে: ইউক্রেন : ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সাত সপ্তাহের যুদ্ধে তার দেশের আড়াই থেকে ৩ হাজার সেনা নিহত এবং প্রায় ১০ হাজার আহত হয়েছে। এই সময়ে কতো বেসামরিক নিহত হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই বলে গত শুক্রবার সিএনএনকে জানিয়েছেন তিনি। এখন আট সপ্তাহে পড়া এ যুদ্ধে রাশিয়ার ১৯ হাজার থেকে ২০ হাজার সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি।
গত মাসে মস্কো জানিয়েছিল, ইউক্রেনের যুদ্ধে ১৩৫১ জন রুশ সেনা নিহত ও ৩৮২৫ জন সেনা আহত হয়েছে। দুপক্ষের জানানো এসব সংখ্যার কোনোটিই তারা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করে দেখতে পারেনি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইউক্রেইন জানিয়েছে, মারিউপোলে তারা রাশিয়ার অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরীটিতে লড়াই আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার আগে মারিউপোলে ৪ লাখ লোক বসবাস করলেও শহরটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবরুদ্ধ শহরটিতে কয়েক হাজার বেসামরিক নিহত এবং লাখখানেক বাসিন্দা আটকা পড়ে আছে। এক ব্রিফিংয়ে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেকজান্দার মোতুজেনিক বলেন, “মারিউপোলের পরিস্থিতি অত্যন্ত জাটিল ও কঠিন। এই মুহূর্তেও লড়াই চলছে। শহরটিতে তা-ব চালাতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত ইউনিটগুলোকে মোতায়েন করে চলছে।” রাশিয়া পুরোপুরিভাবে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বলে জানিয়েছে তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে ৫০ লাখ মানুষ

আপডেট সময় : ০২:০১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পক্ষ থেকে গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য জানানো হয়। জাতিসংঘের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের মুখে ইউরোপ।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৫ জন ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশ ছেড়েছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ছয়জন যারা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেন ছেড়েছে।
আর তৃতীয় বিশ্বের প্রায় দুই লাখ ১৫ হাজার নাগরিকও প্রতিবেশী দেশে পালিয়েছে। এ পর্যন্ত ২৭ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে পালিয়ে গেছে। এছাড়া সাত লাখ ২৫ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে রোমানিয়ায়। ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে- ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ছেড়েছে প্রায় ছয় লাখ ৪৫ হাজার ইউক্রেনীয়। মার্চ মাসে প্রায় লাখ এবং এপ্রিল মাসে এখনো পর্যন্ত সাত লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছে। যারা পালিয়ে গেছে তাদের ৯০ শতাংশ নারী ও শিশু।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৯০০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে সংস্থাটির দাবি, এই সংখ্যা বাস্তবে আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গত ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজার নয়শ ৮২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শিশু রয়েছে ১৬২ জন। সংস্থাটি আরও জানায়, হামলায় এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন দুই হাজার ছয়শ ৫১ জন। আহতদের মধ্যে শিশু রয়েছে ২৫৬ জন। তাদের বেশিরভাগই গোলার আঘাত ও বিমান হামলায় মারা যান। সংস্থাটির হাইকমিশনার মিশেল বেচলেট এর আগে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছে, বুচা শহরে বেসামরিক লোকদের নিহত হওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিষয়টিও তুলে ধরে প্রমাণ সংরক্ষণের আহ্বান জানান।
কিয়েভ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের বুচা শহরটিতে তিনশ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি জানিয়েছে ইউক্রেন। এদিকে, রুশ সেনারা চলে যাওয়ার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশ থেকে আরও নয় শতাধিক বেসামরিক মানুষের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্থানীয় পুলিশ প্রধান। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা এক মাস ধরে উত্তেজনা চলার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। এক মাসের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। সূত্র: বিবিসি
যুদ্ধে আড়াই থেকে ৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছে: ইউক্রেন : ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সাত সপ্তাহের যুদ্ধে তার দেশের আড়াই থেকে ৩ হাজার সেনা নিহত এবং প্রায় ১০ হাজার আহত হয়েছে। এই সময়ে কতো বেসামরিক নিহত হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই বলে গত শুক্রবার সিএনএনকে জানিয়েছেন তিনি। এখন আট সপ্তাহে পড়া এ যুদ্ধে রাশিয়ার ১৯ হাজার থেকে ২০ হাজার সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি।
গত মাসে মস্কো জানিয়েছিল, ইউক্রেনের যুদ্ধে ১৩৫১ জন রুশ সেনা নিহত ও ৩৮২৫ জন সেনা আহত হয়েছে। দুপক্ষের জানানো এসব সংখ্যার কোনোটিই তারা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করে দেখতে পারেনি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইউক্রেইন জানিয়েছে, মারিউপোলে তারা রাশিয়ার অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরীটিতে লড়াই আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার আগে মারিউপোলে ৪ লাখ লোক বসবাস করলেও শহরটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অবরুদ্ধ শহরটিতে কয়েক হাজার বেসামরিক নিহত এবং লাখখানেক বাসিন্দা আটকা পড়ে আছে। এক ব্রিফিংয়ে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেকজান্দার মোতুজেনিক বলেন, “মারিউপোলের পরিস্থিতি অত্যন্ত জাটিল ও কঠিন। এই মুহূর্তেও লড়াই চলছে। শহরটিতে তা-ব চালাতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত ইউনিটগুলোকে মোতায়েন করে চলছে।” রাশিয়া পুরোপুরিভাবে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বলে জানিয়েছে তিনি।