নারী ও শিশু ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে প্রায় তিন বছর ধরে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় ৩৫ হাজার শিশুর কোনো হদিস নেই। এ দাবি করছে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের একটি দল। তাদের ধারণা, এই ৩৫ হাজারেরও বেশি শিশুকে এখনো রাশিয়া বা রুশ অধিকৃত অঞ্চলে আটকে রাখা হয়েছে। এদিকে শিশুদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, সন্তানদের উদ্ধারে তারা মরিয়া হয়ে উঠছেন। বাধ্য হচ্ছেন চরম ঝুঁঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হয়। এ সময় ইউক্রেন থেকে শিশুদের অপহরণ করে রুশ সৈন্যরা। কখনো অনাথ আশ্রমগুলো থেকে, কখনো মৃত মা-বাবার পাশ থেকে আবার কখনো পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে অনেক শিশুসন্তানকে। এই জোরপূর্বক অপহরণ করে নেওয়া শিশুদের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে রাশিয়া। চলতি মাসে তুরস্কে অনুষ্ঠিত যুদ্ধবিরতির আলোচনায় এক রুশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ‘ইউক্রেন হারিয়ে যাওয়া শিশুদের নিয়ে নাটক করছে।’
প্রায় ছয় মাস রাশিয়ার একটি ক্যাম্পে আটক থাকা দুই কিশোর ছেলেকে তাদের মা কীভাবে উদ্ধার করেছিলেন, সে নাটকীয় ঘটনা দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তের খেরসন শহর দখল করে নেয়। সে শহরের বাসিন্দা নাতালিয়াকে তার এক প্রতিবেশী পরামর্শ দেয়, ছেলেদের রাশিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী রিসোর্টের শহর আনাপার একটি শিশুশিবিরে পাঠানোর।
নাতালিয়া বলছিলেন, ‘২১ দিনের জন্য সেখানে থাকার কথা ছিল। কোনো খরচ দিতে হয়নি এর জন্য। কথা ছিল সফর শেষে তার ছেলেরা খেরসনে ফিরে আসবে। ছেলেরাও শুনে আগ্রহী হয়েছিল। আর আমি যেতে অনুমতি দিয়েছিলাম, যা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।’
২০২২ সালের শেষদিকে খেরসন মুক্ত করে ইউক্রেনের সেনারা। কিন্তু ফ্রন্টলাইনের অন্য পাশের ওই ক্যাম্পে এখনও নাতালিয়ার সন্তানরাসহ আরও কিছু শিশুরা রয়ে গিয়েছিল। রাশিয়া তাদের ফিরতে দিচ্ছিল না নিজ দেশে।
অ্যাক্টিভিস্ট ও গবেষকদের মতে, ইউক্রেনীয় শিশুদের জোরপূর্বক স্থানান্তর ও অপহরণ নতুন কিছু নয়। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের সময়ও তিনি একই ধরনের অপহরণ ও নির্বাসনের ঘটনা দেখেছেন বলে জানান কাসিয়ানোভা।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ