ঢাকা ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইউক্রেনের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে রাশিয়ার পাশে যুক্তরাষ্ট্র

  • আপডেট সময় : ০৮:০৯:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ ৩ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে ভোটাভুটি হয়েছে এবং জাতিসংঘে দুটি ভিন্ন ভোটে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান মার্কিন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এদিন ইউরোপ সমর্থিত একটি প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহিত হয়েছে। ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়া যেন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, প্রস্তাবে সেই দাবিও করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র দুবার রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান টানা তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানের পরিবর্তনের বিষয়টিই তুলে ধরছে। প্রথমে দুটি দেশ মস্কোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে একটি ইউরোপীয় খসড়া প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তারপরও ওই প্রস্তাটি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়। সংবাদমাধ্যম বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ৩ বছর সম্পন্ন হয়েছে। এই আবহে জাতিসংঘে সোমবার ইউরোপ সমর্থিত একটি প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে। সেই প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে যেন সেনা প্রত্যাহার করে নেয় রাশিয়া। এই প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহিত হওয়াটা মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে জাতিসংঘের মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও একটি প্রস্তাব সামনে আনা হয়। সেখানে যুদ্ধের সমাপ্তির কথা বলা হয়েছে।

তবে স্পষ্ট করে রাশিয়ার আগ্রাসনের কথা উল্লেখ ছিল না। সেই প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রত্যাখ্যাত হয়। এটা নিঃসন্দেহে ট্রাম্প সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নিন্দা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে ভোটাভুটিতে রাশিয়ার সঙ্গেই এক সুর ছিল আমেরিকার। এই প্রস্তাবে রাশিয়ার সঙ্গে শুধু আমেরিকাই ছিল না, রাশিয়া পাশে পেয়েছে বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া এবং সুদানকেও। এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় মার্কিন প্রস্তাবের পাশে থাকতে ইউক্রেনকে তার প্রস্তাব তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত আমেরিকার প্রতিনিধি। তবে নিজের অবস্থানে অনড় ছিল ইউক্রেন। এছাড়া মার্কিন প্রস্তাবের খসড়ায় ইউরোপ পক্ষের কিছু সংস্কারের দাবিকেও মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়। যেখানে উল্লেখ করা ছিল— প্রতিবেশী দেশে হামলা করে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। অন্যদিকে জাতিসংঘে এদিনের ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের পক্ষে সমর্থন ছিল বেশ কম। ভোটাভুটিতে ৯৩ টি দেশ তাদের প্রস্তাবের সমর্থন করে। ১৮ টি দেশ বিরোধিতা করে। আর ৬৫ টি দেশ ভোটাভুটি থেকে বিরত ছিল।

প্রসঙ্গত, এর আগে জাতিসংঘে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নিয়ে বৈশ্বিক সমর্থন ছিল চোখে পড়ার মতো। এর আগে বিশ্বের ১৪০ টি রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেছিল। সেই জায়গা থেকে সর্বশেষ এই ভোটাভুটিতে কিয়েভের পক্ষে পড়া ভোটের সংখ্যা কমে যাওয়াকে বেশ তাৎপর্যের বলে মনে করা হচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইউক্রেনের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে রাশিয়ার পাশে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৮:০৯:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ ৩ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে ভোটাভুটি হয়েছে এবং জাতিসংঘে দুটি ভিন্ন ভোটে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান মার্কিন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এদিন ইউরোপ সমর্থিত একটি প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহিত হয়েছে। ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়া যেন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, প্রস্তাবে সেই দাবিও করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র দুবার রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান টানা তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানের পরিবর্তনের বিষয়টিই তুলে ধরছে। প্রথমে দুটি দেশ মস্কোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে একটি ইউরোপীয় খসড়া প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তারপরও ওই প্রস্তাটি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়। সংবাদমাধ্যম বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ৩ বছর সম্পন্ন হয়েছে। এই আবহে জাতিসংঘে সোমবার ইউরোপ সমর্থিত একটি প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে। সেই প্রস্তাবে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে যেন সেনা প্রত্যাহার করে নেয় রাশিয়া। এই প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহিত হওয়াটা মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে জাতিসংঘের মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও একটি প্রস্তাব সামনে আনা হয়। সেখানে যুদ্ধের সমাপ্তির কথা বলা হয়েছে।

তবে স্পষ্ট করে রাশিয়ার আগ্রাসনের কথা উল্লেখ ছিল না। সেই প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রত্যাখ্যাত হয়। এটা নিঃসন্দেহে ট্রাম্প সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নিন্দা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে ভোটাভুটিতে রাশিয়ার সঙ্গেই এক সুর ছিল আমেরিকার। এই প্রস্তাবে রাশিয়ার সঙ্গে শুধু আমেরিকাই ছিল না, রাশিয়া পাশে পেয়েছে বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া এবং সুদানকেও। এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় মার্কিন প্রস্তাবের পাশে থাকতে ইউক্রেনকে তার প্রস্তাব তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত আমেরিকার প্রতিনিধি। তবে নিজের অবস্থানে অনড় ছিল ইউক্রেন। এছাড়া মার্কিন প্রস্তাবের খসড়ায় ইউরোপ পক্ষের কিছু সংস্কারের দাবিকেও মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়। যেখানে উল্লেখ করা ছিল— প্রতিবেশী দেশে হামলা করে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। অন্যদিকে জাতিসংঘে এদিনের ভোটাভুটিতে ইউক্রেনের পক্ষে সমর্থন ছিল বেশ কম। ভোটাভুটিতে ৯৩ টি দেশ তাদের প্রস্তাবের সমর্থন করে। ১৮ টি দেশ বিরোধিতা করে। আর ৬৫ টি দেশ ভোটাভুটি থেকে বিরত ছিল।

প্রসঙ্গত, এর আগে জাতিসংঘে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নিয়ে বৈশ্বিক সমর্থন ছিল চোখে পড়ার মতো। এর আগে বিশ্বের ১৪০ টি রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেছিল। সেই জায়গা থেকে সর্বশেষ এই ভোটাভুটিতে কিয়েভের পক্ষে পড়া ভোটের সংখ্যা কমে যাওয়াকে বেশ তাৎপর্যের বলে মনে করা হচ্ছে।