ঢাকা ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

ইউক্রেনকে ন্যাটো ও ক্রিমিয়ার আশা ছাড়তে বললেন ট্রাম্প

  • আপডেট সময় : ০৯:২৭:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে যোগদান ও রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়া পুনরুদ্ধারের আশা ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এ অবস্থান জানালেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় বৈঠকের পর ট্রাম্প এবার চাপ দিচ্ছেন ইউক্রেনকে। ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের অবসানে কিয়েভকে শান্তিচুক্তি মেনে নিতে উদ্বুদ্ধ করতে চান তিনি। যুদ্ধটিতে এখন পর্যন্ত লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, নিহত হয়েছেন দশ হাজারেরও বেশি।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রথমে জেলেনস্কির সঙ্গে এবং পরে ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ইউরোপীয় নেতারা একযোগে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দাবি করতে ওয়াশিংটনে গেছেন।

রোববার (১৭ আগস্ট) নিজের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, জেলেনস্কি চাইলে যুদ্ধ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শেষ করতে পারেন, অথবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, ওবামার আমলে কোনো গুলি ছাড়াই ক্রিমিয়া হারানো হয়েছে, আর ইউক্রেনের জন্য ন্যাটো নয়।

ইউক্রেন ও এর মিত্ররা আশঙ্কা করছে, ট্রাম্প হয়তো মস্কো-সমর্থিত সমঝোতার জন্য চাপ দেবেন। তবে তারা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন, কারণ ট্রাম্প যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পুতিনের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনকে ডনেস্ক অঞ্চলের বাকি অংশ ছাড়তে হবে। ইতোমধ্যে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও পরবর্তীতে শান্তি আলোচনা চান। কিন্তু পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর ট্রাম্প সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়ার দেওয়া দাবির প্রতিই সমর্থন জানিয়েছেন।

জেলেনস্কি রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে ওয়াশিংটনে পৌঁছে বলেন, আমরা সবাই চাই এই যুদ্ধ দ্রুত ও স্থায়ীভাবে শেষ হোক। রাশিয়াই এই যুদ্ধ শুরু করেছে, রাশিয়ারই শেষ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বন্ধুদের সঙ্গে এক হয়ে আমরা শান্তি আনতে চাই।

এদিকে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাত জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আবাসিক ভবনে হামলায় একাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকে তাদের দূরে রাখা হয়েছে। তাই তারা আগেভাগেই জেলেনস্কির সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াদেফুল বলেছেন, যদি বলি এখন পুরো বিশ্বের চোখ ওয়াশিংটনের দিকে তাহলে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। ট্রাম্পের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে কিয়েভ-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় জেলেনস্কি বাধ্য হচ্ছেন ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউক্রেনকে ন্যাটো ও ক্রিমিয়ার আশা ছাড়তে বললেন ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০৯:২৭:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে যোগদান ও রাশিয়ার দখল করা ক্রিমিয়া পুনরুদ্ধারের আশা ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এ অবস্থান জানালেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় বৈঠকের পর ট্রাম্প এবার চাপ দিচ্ছেন ইউক্রেনকে। ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের অবসানে কিয়েভকে শান্তিচুক্তি মেনে নিতে উদ্বুদ্ধ করতে চান তিনি। যুদ্ধটিতে এখন পর্যন্ত লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, নিহত হয়েছেন দশ হাজারেরও বেশি।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রথমে জেলেনস্কির সঙ্গে এবং পরে ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ইউরোপীয় নেতারা একযোগে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দাবি করতে ওয়াশিংটনে গেছেন।

রোববার (১৭ আগস্ট) নিজের প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, জেলেনস্কি চাইলে যুদ্ধ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শেষ করতে পারেন, অথবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, ওবামার আমলে কোনো গুলি ছাড়াই ক্রিমিয়া হারানো হয়েছে, আর ইউক্রেনের জন্য ন্যাটো নয়।

ইউক্রেন ও এর মিত্ররা আশঙ্কা করছে, ট্রাম্প হয়তো মস্কো-সমর্থিত সমঝোতার জন্য চাপ দেবেন। তবে তারা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন, কারণ ট্রাম্প যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পুতিনের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনকে ডনেস্ক অঞ্চলের বাকি অংশ ছাড়তে হবে। ইতোমধ্যে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ও পরবর্তীতে শান্তি আলোচনা চান। কিন্তু পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর ট্রাম্প সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়ার দেওয়া দাবির প্রতিই সমর্থন জানিয়েছেন।

জেলেনস্কি রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে ওয়াশিংটনে পৌঁছে বলেন, আমরা সবাই চাই এই যুদ্ধ দ্রুত ও স্থায়ীভাবে শেষ হোক। রাশিয়াই এই যুদ্ধ শুরু করেছে, রাশিয়ারই শেষ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বন্ধুদের সঙ্গে এক হয়ে আমরা শান্তি আনতে চাই।

এদিকে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাত জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আবাসিক ভবনে হামলায় একাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকে তাদের দূরে রাখা হয়েছে। তাই তারা আগেভাগেই জেলেনস্কির সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াদেফুল বলেছেন, যদি বলি এখন পুরো বিশ্বের চোখ ওয়াশিংটনের দিকে তাহলে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। ট্রাম্পের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে কিয়েভ-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় জেলেনস্কি বাধ্য হচ্ছেন ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে।