আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে স্লোভাকিয়া। মধ্য ইউরোপের এই দেশটি বলেছে, তারা ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিকভাবে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেবে।
এমনকি ইউক্রেন কখনোই সামরিক শক্তির অবস্থান থেকে আলোচনার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয় বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি। রোববার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো শনিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, স্লোভাকিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইউক্রেনকে আর্থিক বা সামরিকভাবে সমর্থন করবে না। যদি অন্যরা এটি করতে চায় তবে আমরা সেটিকে সম্মান করব।
ফিকো বলেছেন, শক্তির (প্রয়োগের) মাধ্যমে শান্তি সম্পর্কে স্লোভাকিয়ার আপত্তি রয়েছে: ‘ইউক্রেন কখনোই সামরিক শক্তির অবস্থান বিবেচনায় আলোচনার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়’।
তিনি আরো বলেন, ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে স্লোভাকিয়া অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার প্রস্তাব করেছে, যা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং বিপুল সংখ্যক ইইউ সদস্য রাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে।
ফিকো বলেছেন, শীর্ষ সম্মেলনের উপসংহারে স্পষ্টভাবে ইউক্রেনের মাধ্যমে স্লোভাকিয়া এবং পশ্চিম ইউরোপে গ্যাসের ট্রানজিট পুনরায় চালু করার প্রয়োজনীয়তা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছে তার দেশ। তার মতে, ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহ পুনরায় শুরু করা না হলে ইউরোপের প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা অসম্ভব।
স্লোভাক এই প্রধানমন্ত্রী বলছেন, যদি এই শীর্ষ সম্মেলনটিতে কেবল যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য মতামতকে সম্মান না করা হয়, তবে ইউরোপীয় কাউন্সিল আগামী বৃহস্পতিবার ইউক্রেন সম্পর্কিত সিদ্ধান্তে একমত হতে পারবে না।
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর কাছ থেকে এসব মন্তব্য এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সাথে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার ঘটনাটি ঘিরে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে।
উত্তপ্ত সেই বাক্যবিনিময়ের সময় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মনোভাবের সমালোচনা করেন। আর অন্যদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তার দেশের প্রতি সমর্থনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন জেলেনস্কি। পরে ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, জেলেনস্কি এখনও শান্তির জন্য প্রস্তুত নয়।
এছাড়া উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার জেরে জেলেনস্কিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তবে ফক্স নিউজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি এমন কিছু করেননি যার জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।