ক্রীড়া ডেস্ক : অভিষেক টেস্টে ৭ উইকেট, ক্যারিয়ারের দুর্দান্ত শুরু। অলিভার রবিনসনের চোখে-মুখে তখন সামনের দিনগুলোর রঙিন স্বপ্ন। হুট করেই যেন সব এলোমেলো হতে বসেছিল। ৮-৯ বছর আগের বর্ণবাদী ও ‘সেক্সিস্ট’ টুইট তার পথচলা থামিয়ে দিয়েছিল প্রথম টেস্টের পরই। ভড়কে গিয়েছিলেন ইংলিশ পেসার, দেখে ফেলেছিলেন ক্যারিয়ারের শেষও। গত জুনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট দিয়ে শুরু হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রবিনসনের যাত্রা। অভিষেকের দিনই তাকে নিয়ে বিতর্কের শুরু। বল হাতে যখন তিনি নজর কাড়া পারফরম্যান্স করছিলেন, তখনই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে তার পুরনো কিছু টুইট। ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত তার সেসব টুইটে ছিল সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে মুসলিমদের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত, এশিয়ান বংশোদ্ভূত ও নারীদের প্রতি ছিল অবমাননাকর মন্তব্য। রবিনসনের বয়স তখন ছিল ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। সেই সময়টায় তিনি খেলছিলেন লেস্টারশায়ার, কেন্ট ও ইয়র্কশায়ারের দ্বিতীয় দলের হয়ে।
ওই দিনের খেলা শেষে লিখিত ও ভিডিও বিবৃতিতে ক্ষমা চান রবিনসন। তাতে লাভ হয়নি। ম্যাচের পর ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত। রবিনসনকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সেসব থেকে নিস্তারের জন্য ক্রিকেট থেকে কিছু দিনের জন্য দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেন তিনি। সব কিছু মিলিয়ে দুঃসহ এক সময় কাটছিল তার। সেই দুঃসময় অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। অল্পতেই বেঁচে যান ইংলিশ পেসার। তদন্ত শেষে তাকে ৮ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করে ইসিবি, যেখানে পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দুই বছরের জন্য স্থগিত। বাকি তিনটি তখনই কাটিয়ে ফেলেন তিনি। অবশেষে ভারতের বিপক্ষে চলমান ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্ট দিয়ে আবারও রবিনসন ফেরেন ইংল্যান্ড দলে। ফেরার ম্যাচেই বল হাতে ছড়ান আলো। ম্যাচের তৃতীয় দিন ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে পান ৫ উইকেটের স্বাদ। শুক্রবার দিনের খেলা শেষে ২৭ বছর বয়সী রবিনসন তুলে ধরেন তার সেই কঠিন সময়ের কথা। দেশের হয়ে আর খেলতে না পারার ভয়ে থাকার কথা। ‘ক্যারিয়ার নিয়ে অবশ্যই আমি সংশয়ে ছিলাম। তখন আমি আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছিলাম এবং মনে হচ্ছিল, আমাকে কয়েক বছর নিষিদ্ধ করা হতে পারে। হয়তো নিষেধাজ্ঞা শেষে আমার বয়স হতে পারে ৩০ বছর। আর এই সময় অন্য কেউ এসে আমার জায়গাটি নিতে পারে। তাই হ্যাঁ, ক্যারিয়ার নিয়ে সংশয় ছিল। আমি ভেবেছিলাম, ইংল্যান্ডের হয়ে আর কখনও খেলতে পারব না।’ ‘সত্যি বলতে, ক্রিকেট বা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন কিছু সপ্তাহ ছিল ওই সময়। এটা শুধু আমাকেই নয়, আমার পরিবারের ওপরও প্রভাব ফেলেছিল। সৌভাগ্যবশত আজ সব সমস্যা মিটে গেছে।’
ইংল্যান্ড ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন রবিনসন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ