নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে ‘চরম ব্যর্থতার দায়ভার’ নিয়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া এবং বিএনপির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপিনেতা বলেন, “তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির পেছনে বিএনপি জড়িত এবং আমার নামসহ বলেছেন। আমি কখনও ব্যবসা করিনি, আমি শিক্ষক ছিলাম। “এখনও যদি বিএনপি এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাহলে আওয়ামী লীগ সরকারে আছে কেন? তাহলে আওয়ামী লীগের উচিত পদত্যাগ করা এবং ক্ষমতা বিএনপির কাছে হস্তান্তর করা।”
গতকাল রোববার সকাল ১১টায় ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ী এলাকায় বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন। বিএনপির মহাসচিব বলেন, “জনগণের প্রতি এই সরকার তামাশা করছে। যেখানে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, খেতে পারছে না; মানুষ চাল, ডাল, লবণ কিনতে পারছে না, সে জায়গায় আওয়ামী লীগ সরকার এগুলো নিয়ে হাস্যকর কথা, উদ্ভট কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।”
গোটা বাংলাদেশে বিস্ফোরণের মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। প্রত্যেকটি জিনিসের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এজন্য সরকারের উদাসীনতা, চরম ব্যর্থতা দায়ী।”
“আওয়ামী লীগ সরকারের সমস্যাটা হচ্ছে, এই সরকার যেহেতু জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, যেহেতু জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই; সেই কারণেই তারা এসব কথা বলার সাহস করে। মানুষের সঙ্গে মশকারি করা, এটা ঠিক নয়।”
আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকারে টিকে আছে মন্তব্য করে বিএনপিনেতা বলেন, “তারা রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করছে অন্যায়ভাবে। বিচার বিভাগকে তারা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তারা নিয়ন্ত্রণ করে, প্রশাসনকে তারা সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “সংবাদকর্মীরা যেন কথা বলতে না পারেন, লিখতে না পারেন সেজন্য সরকার অনেকগুলো আইন তৈরি করেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে এরই মধ্যে প্রায় ছয়শর মতো সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা আছে। ২০০ সংবাদকর্মীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।”
সরকারের নতুন একটি খসড়া আইন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “সরকার যে নীতিমালা করতে যাচ্ছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, সরকার যে কারো কথা শুনতে পারবে এবং সেটার প্রচারও বন্ধ করতে পারবে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। আমরা অবিলম্বে এই নীতিমালাকে বাতিল করতে বলেছি, সেই সঙ্গে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করার জন্য আমরা বলেছি।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এটাকে আমরা নিন্দা করেছি। রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ কখনই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নেওয়া উচিত।
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোনো কথা বলতে চাই না। কারণ, এই নির্বাচন কমিশন আমরা মানি না। এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন উপস্থিত ছিলেন।
আ.লীগের উচিত পদত্যাগ করে বিএনপির কাছে ক্ষমতা দেওয়া
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ