ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

আসুন ধৈর্য ধরি

  • আপডেট সময় : ১০:১৯:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

রেজোয়ান হক : তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, সরকারের অবস্থান ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি একই জায়গায় মিলে গেছে। তারা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা সরকারি পরিপত্র পুনর্বহাল চেয়েছেন। সরকারও সে জন্য আইনি লড়াই করছে, পরিপত্রটি পুনর্বহাল হয়েছে। মানে এই মুহূর্তে কোটা নেই। কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সরকারি দল বা সরকারের মুখপাত্র হিসেবে প্রতিমন্ত্রী শনিবার এ কথা বলেছেন। এ থেকে এই ইস্যুতে সরকারের অবস্থান আরও পরিষ্কার হয়েছে। অন্যান্য সূত্রেও যতটুকু জেনেছি তাতে সরকার কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করতে আগ্রহী কিন্তু বিষয়টি আদালতে থাকায় এই মুহূর্তে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
আমার ধারণা-আগামী ৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এ নিয়ে শুনানির যে দিনটি ধার্য রয়েছে তাতে আপিল বিভাগও হাইকোর্টের মতই সরকারকে বিষয়টি নিষ্পত্তির সুযোগ দেবেন। শিক্ষার্থীরা আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন স্থগিত রাখার ধৈর্য দেখালে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ এবং সব পক্ষের জন্য সম্মানজনক সমাধান হতে পারতো।
কিন্তু জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সভাপতি যেহেতু বলেছেন– এই আন্দোলনে ছাত্রদলও আছে’, তাতে ধরে নেওয়া যায় ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিএনপি জোটের দলগুলোর ছাত্র সংগঠনও আছে, আবার বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শুধু কোটা বাতিলই নয়, গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনেও ছাত্রদের এগিয়ে আসতে বলেছেন। ফলে এ আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে রয়েছে কিনা, থাকলেও কতক্ষণ থাকবে সেটাও বড় প্রশ্ন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতাদের একজন শনিবার বলেছেন, দাবি মানাতে প্রয়োজনে সবাইকে নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তবে এ আন্দোলনে মতলববাজ অনুপ্রবেশকারীরা থাকুক বা না থাকুক, ধৈর্য দেখাতে হবে সরকারকেও। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা ভালো ফল দেবে না, কারণ সরকারই তো বলছে একটা মহল সবসময়ই পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে নয়, শিক্ষার্থীদের কাছে অপ্রকাশ্যে হলেও সরাসরি বার্তা পৌঁছানো দরকার যে সরকারও সংস্কার চাইছে-অপেক্ষা শুধু আদালতের প্রক্রিয়া শেষ হবার। তবে সড়ক-রেল অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি চলতে থাকলে সরকার যে চুপচাপ থাকবে না, তার আলামত ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আরও দুটো বিষয়ে কথা বলা দরকার। শিক্ষার্থীদের দাবি কোটার পরিবর্তে মেধায় নিয়োগ। এর মানে কোটায় যারা নিয়োগ পায় তারা মেধাবী নয়। অথচ অন্য সবার মতো প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং মৌখিক- এই ৩টি পরীক্ষায় পাস না করলে কেউ কোটা সুবিধা পায় না। এর অর্থ কোটায় চাকরিপ্রাপ্তরাও মেধাবী। তবে এই বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনেরও দায় আছে। তাদের কাগজপত্রে বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে চাকরির সুপারিশ করা প্রার্থীদের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয় তাতে মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রতিবন্ধী ইত্যাদির মতো ‘মেধা’কেও একটি শ্রেণি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর অর্থ দাঁড়ায় বাকিদের মেধা নেই। খোদ সরকারি দলিলেই এভাবে লেখা হলে অন্যদের আর দোষ কী?
লেখক: প্রধান সম্পাদক, মাছরাঙা টেলিভিশন

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দেশে কোরবানির পশু পর্যাপ্ত, পাশের দেশের প্রয়োজন নেই: উপদেষ্টা

আসুন ধৈর্য ধরি

আপডেট সময় : ১০:১৯:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

রেজোয়ান হক : তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, সরকারের অবস্থান ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি একই জায়গায় মিলে গেছে। তারা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা সরকারি পরিপত্র পুনর্বহাল চেয়েছেন। সরকারও সে জন্য আইনি লড়াই করছে, পরিপত্রটি পুনর্বহাল হয়েছে। মানে এই মুহূর্তে কোটা নেই। কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সরকারি দল বা সরকারের মুখপাত্র হিসেবে প্রতিমন্ত্রী শনিবার এ কথা বলেছেন। এ থেকে এই ইস্যুতে সরকারের অবস্থান আরও পরিষ্কার হয়েছে। অন্যান্য সূত্রেও যতটুকু জেনেছি তাতে সরকার কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করতে আগ্রহী কিন্তু বিষয়টি আদালতে থাকায় এই মুহূর্তে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
আমার ধারণা-আগামী ৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এ নিয়ে শুনানির যে দিনটি ধার্য রয়েছে তাতে আপিল বিভাগও হাইকোর্টের মতই সরকারকে বিষয়টি নিষ্পত্তির সুযোগ দেবেন। শিক্ষার্থীরা আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন স্থগিত রাখার ধৈর্য দেখালে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ এবং সব পক্ষের জন্য সম্মানজনক সমাধান হতে পারতো।
কিন্তু জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সভাপতি যেহেতু বলেছেন– এই আন্দোলনে ছাত্রদলও আছে’, তাতে ধরে নেওয়া যায় ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিএনপি জোটের দলগুলোর ছাত্র সংগঠনও আছে, আবার বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শুধু কোটা বাতিলই নয়, গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনেও ছাত্রদের এগিয়ে আসতে বলেছেন। ফলে এ আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং নিয়ন্ত্রণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে রয়েছে কিনা, থাকলেও কতক্ষণ থাকবে সেটাও বড় প্রশ্ন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতাদের একজন শনিবার বলেছেন, দাবি মানাতে প্রয়োজনে সবাইকে নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তবে এ আন্দোলনে মতলববাজ অনুপ্রবেশকারীরা থাকুক বা না থাকুক, ধৈর্য দেখাতে হবে সরকারকেও। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা ভালো ফল দেবে না, কারণ সরকারই তো বলছে একটা মহল সবসময়ই পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে নয়, শিক্ষার্থীদের কাছে অপ্রকাশ্যে হলেও সরাসরি বার্তা পৌঁছানো দরকার যে সরকারও সংস্কার চাইছে-অপেক্ষা শুধু আদালতের প্রক্রিয়া শেষ হবার। তবে সড়ক-রেল অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি চলতে থাকলে সরকার যে চুপচাপ থাকবে না, তার আলামত ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আরও দুটো বিষয়ে কথা বলা দরকার। শিক্ষার্থীদের দাবি কোটার পরিবর্তে মেধায় নিয়োগ। এর মানে কোটায় যারা নিয়োগ পায় তারা মেধাবী নয়। অথচ অন্য সবার মতো প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং মৌখিক- এই ৩টি পরীক্ষায় পাস না করলে কেউ কোটা সুবিধা পায় না। এর অর্থ কোটায় চাকরিপ্রাপ্তরাও মেধাবী। তবে এই বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনেরও দায় আছে। তাদের কাগজপত্রে বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে চাকরির সুপারিশ করা প্রার্থীদের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয় তাতে মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রতিবন্ধী ইত্যাদির মতো ‘মেধা’কেও একটি শ্রেণি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর অর্থ দাঁড়ায় বাকিদের মেধা নেই। খোদ সরকারি দলিলেই এভাবে লেখা হলে অন্যদের আর দোষ কী?
লেখক: প্রধান সম্পাদক, মাছরাঙা টেলিভিশন