নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মহামারির এই সময়ে বাজারে যেন নগদ অর্থের সংকট না হয় সেজন্য আসন্ন ঈদে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নোট বাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি নতুন নোট বাজার ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে আর্থিক খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বছরের সব সময়ই নতুন নোট ছাপানো হয়। তবে ঈদের আগে নতুন নোটের চাহিদা বেশি থাকায় ছাপানোর পরিমাণও বাড়াতে হয়। কোরবানি দেওয়ার জন্য অনেকে পশু কিনবেন। এতে নগদ টাকার লেনদেন বাড়বে। বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন নোট ছাড়া হচ্ছে। ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ এবং ১০০০ টাকার সব নোটই ছাপানো আছে। তবে কোরবানিতে পশু কেনাবেচায় বড় অংকের লেনদেন বেশি হয়। তাই এবার ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বেশি ছাড়া হচ্ছে। পাশাপাশি আগের মতোই সমপরিমাণ পুরাতন নোট বাজার থেকে অপসারণ করা হবে। ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি নতুন নোট সরবরাহ করতে প্রস্তুতি রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। চাহিদা অনুযায়ী নতুন নোট সরবারহ সম্ভব বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র একেএম মহিউদ্দিন আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, চাহিদা-সরবরাহ নীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সারাবছর বাজারে নোট সরবরাহ করে। করোনার কারণে এবার নির্ধারিত কোনো লক্ষ্য নেই। তবে ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী নোট সরবরাহ করা হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউন্টারের মাধ্যমে কোনো টাকা দেওয়া হবে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যে চেক নিয়ে আসবে সে অনুযায়ী আমরা টাকা দেবো। তিনি জানান, বিধিনিষেধের কারণে ব্যাংকের লেনদেনের সময় কম। ঈদের আর কয়েকদিন ব্যাংক খোলা থাকবে। এ সময় লক্ষ্য ঠিক করে নোট দেওয়া সম্ভব না। আমাদের পর্যাপ্ত নতুন নোট দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে।
আজ থেকে ৩ দিন ব্যাংক চলবে স্বাভাবিক নিয়মে
এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ শিথিল করায় ব্যাংক লেনদেনের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে আগামী সোমবার পর্যন্ত স্বাভাবিক নিয়মে ব্যাংকে লেনদেন চলবে। ঈদের আগের তিনদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই), রোববার (১৮ জুলাই) ও সোমবার (১৯ জুলাই) ব্যাংক লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ব্যাংকের আনুষঙ্গিক কাজ চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। এছাড়াও আগামী শনিবার (১৭ জুলাই) ও মঙ্গলবার (২০ জুলাই) শিল্প এলাকায় সীমিত আকারে ব্যাংক লেনদেন চালু থাকবে। এ দুদিন শিল্প এলাকায় লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত। আনুষঙ্গিক কাজ চলবে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশন-ডিওএস থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের নির্বাহী কর্মবর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঈদের পর আগামী ২৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় ব্যাংক লেনদেন হবে সীমিত পরিসরে। ওই সময় (২৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট) পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া ব্যাংক লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা । এ সময়ে ব্যাংকের অন্যান্য কাজ চলবে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, সকল সমুদ্র/স্থল/বিমানবন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা/উপ-শাখা/বুথসমূহ সার্বক্ষণিক খোলা রাখার বিষয়ে ৫ আগস্ট ২০১৯ এ জারিকৃত ডিওএস সার্কুলার লেটার নং-২৪ অনুসারে স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দর/কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন নিশ্চিত-পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে আরও বলা হয়, বিধিনিষেধ চলাকালে যেসব শাখা বন্ধ থাকবে সেসব শাখার গ্রাহক সেবা কার্যক্রম খোলা রাখা শাখার মাধ্যমে সম্পাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্ধ শাখার গ্রাহকদের গ্রাহক সেবাপ্রাপ্তি বিষয়ে অবহিত করতে ওই শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে।
আসছে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ