ঢাকা ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত শেষ: চিফ প্রসিকিউটর

  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঢাকার আশুলিয়ায় হত্যার পর ৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

তাজুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় হত্যার পর ৬ জনের লাশ পোড়ানো মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া কোনো একটি মামলার তদন্ত সম্পন্ন হলো।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ের দিন ৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নিপীড়ক পুলিশ, স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলাম ও তার ক্যাডার বাহিনী ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে আশুলিয়ায় নিহত হন অন্তত ৩১ জন। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ১৫ জন মারা যান। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল দেড় হাজারের বেশি মানুষ। যাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন। সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যায় অন্তত ৭৫ জন। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে লাশ পোড়ানোর একটি ভিডিও। মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও লোমহর্ষক ওই ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ছিল ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের।

ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকা একজনকে হাত ও পা ধরে ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। সেই ভ্যানে আরো লাশ রয়েছে। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পরে সেখানে আরো পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে। পুলিশ ভ্যানভর্তি লাশগুলো থানার সামনে নিয়ে যায়। পরে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। দুটি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় এমপি (সাবেক) সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তিনি এখনো পলাতক। তবে মামলার অন্য অভিযুক্ত ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক এবং কনস্টেবল মুকুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত শেষ: চিফ প্রসিকিউটর

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঢাকার আশুলিয়ায় হত্যার পর ৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

তাজুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় হত্যার পর ৬ জনের লাশ পোড়ানো মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া কোনো একটি মামলার তদন্ত সম্পন্ন হলো।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ের দিন ৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নিপীড়ক পুলিশ, স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলাম ও তার ক্যাডার বাহিনী ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে আশুলিয়ায় নিহত হন অন্তত ৩১ জন। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ১৫ জন মারা যান। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল দেড় হাজারের বেশি মানুষ। যাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন। সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যায় অন্তত ৭৫ জন। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে লাশ পোড়ানোর একটি ভিডিও। মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও লোমহর্ষক ওই ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ছিল ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের।

ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকা একজনকে হাত ও পা ধরে ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। সেই ভ্যানে আরো লাশ রয়েছে। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পরে সেখানে আরো পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে। পুলিশ ভ্যানভর্তি লাশগুলো থানার সামনে নিয়ে যায়। পরে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। দুটি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় এমপি (সাবেক) সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তিনি এখনো পলাতক। তবে মামলার অন্য অভিযুক্ত ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক এবং কনস্টেবল মুকুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।