ঢাকা ০১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

আশুতোষের বীরত্বে ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় দিল্লির

  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: সোজা দাঁড়িয়ে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে সাইট স্ক্রিনে বল আছড়ে ফেলে দলের জয় নিশ্চিত করলেন আশুতোষ শার্মা। এগিয়ে এসে ব্যাট তাক করে ধরলেন তিনি ডাগআউটের দিকে। হাঁটু গেড়ে বসে করলেন নানা অঙ্গভঙ্গি। হাত উঁচিয়ে বারবার দেখাচ্ছিলেন কিছু একটা। ডাগআউটে দলের মেন্টর কেভিন পিটারসেনের খুশি যেন ধরে না। তাদের এমন উদযাপনই বলে দিচ্ছে এই জয়ের মাহাত্ম্য। দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ১০ বলের মধ্যে নেই ৩ উইকেট, ৬৫ রানের মধ্যে বিদায় ৫ ব্যাটসম্যানের, ২ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১৫ বলে দরকার ৩৮। এত কঠিন সব অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য এক জয়ে আইপিএল অভিযান শুরু করল দিল্লি ক্যাপিটালস। লাক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে সোমবার দিল্লির জয় ১ উইকেটে। ২১০ রানের লক্ষ্য তিন বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় তারা।

দিল্লির জয়ের নায়ক আশুতোষ । ‘ইমপ্যাক্ট বদলি’ হিসেবে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫টি করে ছক্কা ও চারে ৩১ বলে ৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন তিনি। একপর্যায়ে আশুতোষের রান ছিল ২০ বলে ২০। অবিশ্বাস্যভাবে পরের ১১ বলে ৪৬ রান করে দলকে জেতালেন ২৬ বছর বয়সী ক্রিকেটার। বড় অবদান রাখেন ভিপরাজ নিগামও। আইপিএলে অভিষেকে আটে নেমে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ১৫ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ২০ বছর বয়সী লেগ স্পিনার। ছয়ে নেমে ৩ ছক্কা ও এক চারে ২২ বলে ৩৪ রান করে ট্রিস্টান স্টাবস যখন ফেরেন, তখনও দিল্লির দরকার ৪৫ বলে ৯৭ রান, হাতে উইকেট ৪টি। এরপরই সপ্তম উইকেটে আশুতোষ ও নিগাম যোগ করেন ২২ বলে ৫৫ রান। নিগাম ফেরার পর দ্রুত বিদায় নেন মিচেল স্টার্ক। ১৫ বলে দরকার যখন ৩৮, লেগ স্পিনার রাভি বিষ্ণইয়ের পরপর তিন বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন আশুতোষ। ১৯তম ওভারে প্রিন্স ইয়াদাভের প্রথম বলে চার মেরে তৃতীয় বলে রান আউট হয়ে যান কুলদিপ ইয়াদাভ। শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে শেষ ওভারে সমীকরণ ৬ রানে নামিয়ে আনেন আশুতোষ।

বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদের প্রথম বলে অনেকটা বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় পারেননি মোহিত শার্মা। স্টাম্পিংয়ের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও বল গ্লাভসে রাখতে পারেননি কিপার ও লাক্ষ্ণৌর নতুন অধিনায়ক রিশাভ পান্ত। মোহিতকে আউট করতে পারলেই জিতে যেত লাক্ষ্ণৌ। পরে এলবিডব্লিউয়ের জন্য রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি তারা। পরের বলে মোহিত এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন আশুতোষকে, এবারও ফিল্ডিংয়ে গড়বড় করে ফেলে লাক্ষ্ণৌ। এরপরই আশুতোষের ওই ছক্কায় ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি। গত মৌসুমের পর দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক চুকেবুকে যায় পান্তের। নভেম্বরের মেগা নিলামে ২৭ কোটি রুপিতে তাকে দলে নেয় লাক্ষ্ণৌ। আইপিএলের ইতিহাসে নিলামে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ক্রিকেটারের নতুন ঠিকানায় শুরুটা মোটেও ভালো হলো না। ব্যাট হাতে ৬ বলে শূন্য রানে আউট হন তিনি। এরপর কিপিংয়ে শেষ দিকের ওই ব্যর্থতা। ম্যাচটা খুব দ্রুত ভুলে যেতে চাইবেন ভারতীয় তারকা। ব্যাটিংয়ে একটা সময় যে অবস্থানে লাক্ষ্ণৌ ছিল, তাদের পুঁজি আরও বড় হতে পারত। ১৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭০ রান তুলে ফেলার পর নিয়মিত উইকেট হারানোয় ২০৯ রানে আটকে যায় তারা। মিচেল মার্শ ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৩৬ বলে করেন ৭২ রান। ৭ ছক্কা ও ৬ চারে ৩০ বলে ৭৫ রান করেন নিকোলাস পুরান। লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম দুই ওভারের মধ্যে জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক, ফাফ দু প্লেসি ও সামির রিজভিকে হারায় দিল্লি। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে যেভাবে তারা ম্যাচ জিতল, তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল অনেক। দিল্লির নতুন অধিনায়ক হিসেবে আকসার প্যাটেলের শুরুটা হলো রঙিন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আশুতোষের বীরত্বে ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় দিল্লির

আপডেট সময় : ০৪:৫২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: সোজা দাঁড়িয়ে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে সাইট স্ক্রিনে বল আছড়ে ফেলে দলের জয় নিশ্চিত করলেন আশুতোষ শার্মা। এগিয়ে এসে ব্যাট তাক করে ধরলেন তিনি ডাগআউটের দিকে। হাঁটু গেড়ে বসে করলেন নানা অঙ্গভঙ্গি। হাত উঁচিয়ে বারবার দেখাচ্ছিলেন কিছু একটা। ডাগআউটে দলের মেন্টর কেভিন পিটারসেনের খুশি যেন ধরে না। তাদের এমন উদযাপনই বলে দিচ্ছে এই জয়ের মাহাত্ম্য। দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ১০ বলের মধ্যে নেই ৩ উইকেট, ৬৫ রানের মধ্যে বিদায় ৫ ব্যাটসম্যানের, ২ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১৫ বলে দরকার ৩৮। এত কঠিন সব অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য এক জয়ে আইপিএল অভিযান শুরু করল দিল্লি ক্যাপিটালস। লাক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে সোমবার দিল্লির জয় ১ উইকেটে। ২১০ রানের লক্ষ্য তিন বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় তারা।

দিল্লির জয়ের নায়ক আশুতোষ । ‘ইমপ্যাক্ট বদলি’ হিসেবে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫টি করে ছক্কা ও চারে ৩১ বলে ৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন তিনি। একপর্যায়ে আশুতোষের রান ছিল ২০ বলে ২০। অবিশ্বাস্যভাবে পরের ১১ বলে ৪৬ রান করে দলকে জেতালেন ২৬ বছর বয়সী ক্রিকেটার। বড় অবদান রাখেন ভিপরাজ নিগামও। আইপিএলে অভিষেকে আটে নেমে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ১৫ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ২০ বছর বয়সী লেগ স্পিনার। ছয়ে নেমে ৩ ছক্কা ও এক চারে ২২ বলে ৩৪ রান করে ট্রিস্টান স্টাবস যখন ফেরেন, তখনও দিল্লির দরকার ৪৫ বলে ৯৭ রান, হাতে উইকেট ৪টি। এরপরই সপ্তম উইকেটে আশুতোষ ও নিগাম যোগ করেন ২২ বলে ৫৫ রান। নিগাম ফেরার পর দ্রুত বিদায় নেন মিচেল স্টার্ক। ১৫ বলে দরকার যখন ৩৮, লেগ স্পিনার রাভি বিষ্ণইয়ের পরপর তিন বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন আশুতোষ। ১৯তম ওভারে প্রিন্স ইয়াদাভের প্রথম বলে চার মেরে তৃতীয় বলে রান আউট হয়ে যান কুলদিপ ইয়াদাভ। শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে শেষ ওভারে সমীকরণ ৬ রানে নামিয়ে আনেন আশুতোষ।

বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদের প্রথম বলে অনেকটা বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় পারেননি মোহিত শার্মা। স্টাম্পিংয়ের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও বল গ্লাভসে রাখতে পারেননি কিপার ও লাক্ষ্ণৌর নতুন অধিনায়ক রিশাভ পান্ত। মোহিতকে আউট করতে পারলেই জিতে যেত লাক্ষ্ণৌ। পরে এলবিডব্লিউয়ের জন্য রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি তারা। পরের বলে মোহিত এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন আশুতোষকে, এবারও ফিল্ডিংয়ে গড়বড় করে ফেলে লাক্ষ্ণৌ। এরপরই আশুতোষের ওই ছক্কায় ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি। গত মৌসুমের পর দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক চুকেবুকে যায় পান্তের। নভেম্বরের মেগা নিলামে ২৭ কোটি রুপিতে তাকে দলে নেয় লাক্ষ্ণৌ। আইপিএলের ইতিহাসে নিলামে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ক্রিকেটারের নতুন ঠিকানায় শুরুটা মোটেও ভালো হলো না। ব্যাট হাতে ৬ বলে শূন্য রানে আউট হন তিনি। এরপর কিপিংয়ে শেষ দিকের ওই ব্যর্থতা। ম্যাচটা খুব দ্রুত ভুলে যেতে চাইবেন ভারতীয় তারকা। ব্যাটিংয়ে একটা সময় যে অবস্থানে লাক্ষ্ণৌ ছিল, তাদের পুঁজি আরও বড় হতে পারত। ১৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭০ রান তুলে ফেলার পর নিয়মিত উইকেট হারানোয় ২০৯ রানে আটকে যায় তারা। মিচেল মার্শ ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৩৬ বলে করেন ৭২ রান। ৭ ছক্কা ও ৬ চারে ৩০ বলে ৭৫ রান করেন নিকোলাস পুরান। লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম দুই ওভারের মধ্যে জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক, ফাফ দু প্লেসি ও সামির রিজভিকে হারায় দিল্লি। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে যেভাবে তারা ম্যাচ জিতল, তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল অনেক। দিল্লির নতুন অধিনায়ক হিসেবে আকসার প্যাটেলের শুরুটা হলো রঙিন।