নারী ও শিশু ডেস্ক: বাংলাদেশের মেয়ে আশা শরীফ ১০ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের প্রিন্স প্যালেসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সেরা কূটনীতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একটি অনুষ্ঠানে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন- যেখানে ৪০টি দেশের ৮০ জন অংশগ্রহণকারী ছিলেন। এই সম্মেলনে বিভিন্ন পেশার ও বিভিন্ন বয়সের অংশগ্রহণকারীরা উপস্থিত ছিলেন। আশা শরীফ তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। তিনি বাংলাদেশের একজন তরুণ উদ্যোক্তা এবং ফ্যাশন ডিজাইনার। এই সম্মেলন মূলত একটি নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে যা সহজেই যেকোনো সচেতন নাগরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। এটি তরুণদের জন্য বৈশি^ক সমস্যা-সংকট পরিবর্তন বিষয়ক ধারণা বিনিময়ের এবং সমাধানের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিশ^ব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে। এবারের সম্মেলনের বিষয় ছিল- পরিবেশগত প্রভাব প্রশমিত করা এবং পর্যটন শিল্পের মধ্যে স্থায়িত্বের অগ্রগতিবিষয়ে। তিনি বাংলাদেশের হয়ে এই সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে তার কাজের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, তাই তিনি মূলত এই বিষয়ে ফেসবুকের ভূমিকাও তুলে ধরেন।
নিশ্চিতভাবেই এটা আমাদের দেশের জন্য অনেক আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। এই সম্মেলনে অংশ নেওয়া নিয়ে নারী উদ্যোক্তা ও ফ্যাশন ডিজাইনার আশা শরীফ বলেন- যেহেতু নতুন কিছু করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি এবং চ্যালেঞ্জ নিতে কখনোই পিছপা হই না; তাই সব সময় এই ধরনের বিশেষ কোনোকিছুর দিকে আমি ফেসবুকে খেয়াল রাখতাম। প্রথমে এই সম্মেলনে যাওয়ার জন্য আমি অ্যাপ্লাই করি, এরপর একসেপ্টট্যান্ট লেটার পাই তারপরে আরও কিছু ইনফরমেশন দেওয়ার পর ফাইনালি তারা আমাকে ইনভাইটেশন লেটার পাঠায়। আমি মনে করি- এই প্রোগ্রামটি আমাদের দেশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এটা তরুণদের জন্য একটা ইন্সপারেশন হতে পারে।
এই প্রোগ্রাম একজন উদ্যোগী তরুণকে নেটওয়ার্কিংকে বিল্ডআপ করে দেয়। একটা সময় নিজেকে উন্নতির শিখরে উত্তীর্ণ করতে সক্ষম হলে সে নিজের দেশকে অন্য দেশের সামনে মর্যাদার্পূণভাবে প্রেজেন্ট করতে পারে। সেই সাথে এই সম্মেলনে যুক্ত হবার ফলে অন্য দেশ সম্পর্কেও সে জানতে পারে। এই প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার ফলে নিজের আইডিয়া জেনারেট করতে পারা, আইডিয়া এক্সচেঞ্জ করা, ভবিষ্যতে কী করলে বৈশি^ক চ্যালেঞ্জগুলোর সাক্ষাৎ প্রবলেমগুলো সমাধান হতে পারে সেই ব্যাপারে অন্য সবার মতামত যেমন জানা যায় তেমনি নিজেও প্রচ- দক্ষ হয়ে ওঠে। অনেক সময় প্রবলেমগুলো টপিক ওয়াইজ আসে আবার অনেক সময় টপিকের বাইরেও আসে। আশা শরীফ বলেন, নেটওয়ার্কিং নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ ভাবনা হলো নেটওয়ার্কিংকে বিশ^মানে বিল্ডআপ করা- সেটা হোক দেশে অথবা আন্তর্জাতিক। সেই সাথে আমার চাওয়াকিয়েটিভ উদ্যোগগুলোকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়া। এই সম্মেলনের মাধ্যমে একটি কালচারাল প্রোগ্রামে আমি আমার দেশের ঐতিহ্য শাড়ি এবং আমার কাজকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি এতগুলো দেশের সামনে।
মূলত যেহেতু ফ্যাশন ডিজাইনে আমি শাড়ি নিয়ে কাজ করি এবং আমার ডিজাইন করার শাড়ি পরে আমি র্যাম্পে হেঁটেছি এবং এই প্রোগ্রামে ৪০টি দেশ তার নিজ নিজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিল- তাই এখানে অংশ নেওয়াটা আমার জন্য ছিল রীতিমতো গৌরবের। আমি আমার দেশের সংস্কৃতি এবং আমার কাজকে তুলে ধরেছি এটাই আমার ভালো লাগা এবং এটাই আমার সাফল্য। আশা শরীফ আরও বলেন, আমি একজন তরুণ উদ্যোক্তা। আমি কাজ করি বাংলাদেশের ঐতিহ্য রাজশাহী সিল্ক, পিওর মসলিন এবং জামদানি নিয়ে। মূলত আমি শাড়ি নিয়েই কাজ করি। তবে কাস্টোমারের চাহিদা অনুযায়ী আমি ২০ ভাগ কুত্তি, কামিজ, থ্রি পিসও রেখেছি। তবে ৮০ ভাগই আমি শাড়ি নিয়ে কাজ করি। আমি এ বিষয়ের সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা ও সহমর্মিতা পেলে ভবিষ্যতে দেশের মর্যাদাকে আন্তর্জাতিক পরিম-লের একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ স্থানে উন্নীত করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।
আশা শরীফ হতে পারেন তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস
জনপ্রিয় সংবাদ