নিজস্ব প্রতিবেদক : মামলা করার পর শুনানি না করে এবং আদেশের সময় হাজির না থেকে আদালতের ‘সময় নষ্ট করে’ জরিমানার শাস্তি গোণা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ এবার সদ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ খোয়ানো ডা. মুরাদ হাসানের এমপি পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট করেছেন।
গতকাল বুধবার ফাইল করা এ রিটে জামালপুর-৪ আসনের এমপি মুরাদ হাসানের কর্মকা-ের বিচার বিভাগীয় তদন্তও চাওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে করা রিটটি আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের নির্ধারিত শাখায় দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন ‘নানা বিষয়ে রিটকারী’ সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
ইউনুস আলী আকন্দ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি, ভিকারুননিসা স্কুলের আসন সংখ্যার অতিরিক্ত ভর্তি, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মডেল টেস্টের নামে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে রিট করে আলোচিত। তবে রিট করে শুনানি না করা, আদেশের সময় আদালতে হাজির না থাকায় জরিমানাও গুনেছেন ইউনুস আলী আকন্দ।
এবার তিনি নারীবিদ্বেষী অসৌজন্যমূলক বক্তব্য ও এক অভিনেত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে অশালীন কথোপকথনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মন্ত্রি পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসানের এমপি পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট ফাইল করেছেন। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, ‘জনস্বার্থে এ রিট আজ (গতকাল বুধবার) ফাইল করেছি। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) এটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেবো।’
রিট করার পাশাপাশি সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে ঢাকা-৮ আসন থেকে নির্বাচন করেও আলোচনায় ছিলেন ইউনুস আলী আকন্দ। সেই নির্বাচনে নামমাত্র ভোট পাওয়া সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী সম্প্রতি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে নতুন করে আলোচনায় ছিলেন। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে ফেসবুকে তার করা এক মন্তব্যের কারণে ইউনুস আলী আকন্দকে হাইকোর্ট বিভাগে আইন পেশা থেকে তিন মাস বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এই নির্দেশের পাশাপাশি ইউনুস আলী আকন্দকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। বিভিন্ন ইস্যুতে রিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন সময়ে জনস্বার্থে রিট করে থাকি। এসব রিটের কারণে অনেক সমস্যার সমাধানও হয়েছে। আবার আমাকে জরিমানাও গুণতে হয়েছে। তারপরও আমি দমে না গিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
রিট করার বিষয়ে তাকে নিয়ে নানা আলোচনার বিষয়ে প্রশ্নে ইউনুস আলী আকন্দ যুক্তি দেখান, জনস্বার্থে রিট করার কারণেই নানা সময়ে কিছু বক্তি বা স্বার্থন্বেষী মহল তার সমালোচনা করে আসছে। তবে এসব সমালোচনায় তার কোনো সমস্যা নেই এবং তিনি কাজ করে যাবেন। আলোচনায় থাকার জন্য একজন আইনজীবীর কেবল রিট করে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ একজন আইনজীবী হিসেবে ইউনুস আলী আকন্দ সঠিক কাজটি করেন বলেই মন্তব্য করেন। এই আইনবিদ বলেন, ‘মুরাদ হাসানের এমপি পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটির বিষয়ে হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দিলে এ বিষয়ে কথা বলা যাবে। তবে তিনি যে জনস্বার্থে রিট করেন একজন আইনজীবী হিসেবে তিনি সঠিক কাজটি করেন।
আলোচনায় থাকতে বারবার রিট, তবে ইউনুস বলছেন ‘জনস্বার্থে’
ট্যাগস :
আলোচনায় থাকতে বারবার রিট
জনপ্রিয় সংবাদ