ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

আর কী চায় বিএনপি? প্রশ্ন শেখ হাসিনার

  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর ২০২১
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : দুর্নীতিতে দ-িত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দিয়ে ‘উন্নত চিকিৎসার সুযোগ’ করে দেওয়ার পরও কেন দলটি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলে, সেই প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তাকে আমি এইটুকু সুযোগও দিয়েছি। আর কী চায় তারা? তারপরও কিসের ডেমোস্ট্রেশন?”
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে যাবজ্জীবন সাজার রায় মাথায় নিয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন, সে বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেছেন, সাহস থাকলে তার তার দেশে ফেরা উচিত, রাজনীতি করতে হলে ‘সাহস দেখাতে হয়’।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক নাগরিক সংবর্ধনায় কথা বলছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আজকে আমি শুনলাম আমার বিরুদ্ধে অনেক ডেমোনেস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রশ্ন আমি অন্যায়টা কী করেছি? আমি বাংলাদেশের উন্নতি করেছি, দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি, বাংলাদেশের মানুষকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি।”
সরকার যে সাক্ষরতার হার বাড়াচ্ছে, দেশের মানুষ যে শিক্ষিত হচ্ছে, সেটা বিএনপির ‘পছন্দ না’ মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা বলেন, “অবশ্য সেটা পছন্দ নাই হতে পারে। কারণ খালেদা জিয়া মেট্রিকে পাস করেনি। জিয়াউর রহমান কেবলই ইন্টারমিডিয়েট পাস ছিল। আর তারেক জিয়া তো ফেল করতে করতে এখন নাকি অখ্যাত কোথা থেকে সে পাস করেছে শোনা যায়।”
দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে খালেদা জিয়ার জেলে থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেহেতু সে অসুস্থ, তাকে আমরা তার বাসায় থাকতে দিয়েছি এবং তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কই জেলখানায় এই রকম কখনো তো কাউকে এই সুযোগ দেওয়া হয় না। এমনকি তিনি মেইড সার্ভেন্টও নিয়ে গেছেন। কারাগারে মেইউ সার্ভেন্ট পাওয়া যায়- এটা কখনো শুনেছেন আপনারা?”
খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান শুধু অনলাইনে যোগাযোগ করে দেশে আন্দোলন করতে বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এত ভয় কিসের? দেশে যায় না কেন? আমারে বিরুদ্ধে যখন মামলা দিয়েছে আমি তো জোর করে দেশে গিয়েছি, তখন আমাকে আসতে দেয় না।
“তো দেশে চলে আসুক যদি সাহস থাকে। আর রাজনীতি করতে হলে সাহস দেখাতে হবে। পলায়ে থেকে খালি বোমা মেরে, আগুন দিয়ে, আর ডেমোনস্ট্রেশন দিয়ে তো চলবে না।”
বিএনপিকে মানুষ কেন ভোট দেবে- সেই প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে! আমার কথা হচ্ছে তারা ভোটটা পাবে কোত্থেকে, যেখানে নেতৃত্বশূন্যতা রয়েছে? নেতৃত্বে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, পতালক আসামি। সেই নেতৃত্বকে কি জনগণ ভোট দেবে? আপনারা বলেন, কোন আশায় দেবে?”
বিএনপি-জামায়াত দেশকে পিছিয়ে নিতে চায় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশ আর দরিদ্র থাকবে না, আর পেছাবে না। এরা চাচ্ছে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাক। কারণ আমি থাকলে ডেভেলপমেন্ট হবে এবং আমি না থাকলে এগুলো স্থবির হবে। আর ওদের মত চোর-চোট্টারা যদি ক্ষমতায় আসে তো বাংলাদেশ রসাতলে যাবে।”
দেশের উন্নয়ন অব্যহত রাখার অঙ্গীকার জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ওরা বলে যাবে, আন্দোলন করে যাবে, আমি আমার ডেভেলপমেন্ট করে যাব, আমি আমার উন্নয়ন করে যাব। কারণ আমরা আন্দোলন করেই এখানে এসেছি। আর খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল বলে আন্দোলন করে তাকে আমরা ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিলাম।”
বিএনপির সময়ে টিআইয়ের দুর্নীতির সূচকে চার বার বাংলাদেশের শীর্ষে থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তারা অর্থ বানায়নি। আজকে যদি চুরি করে এই অর্থ না বানাত, তাহলে নিশ্চয় লন্ডনে এত বিলাসী জীবন যাপন করতে পারত না। এত শান শওকতে থাকতে পারত না, এত টাকাও খরচ করতে পারত না।’
“চুরি করে টাকা পাচার করেছে এটা আমার কথা না। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফাবিআইয়ের তদন্তে সেটা বের হয়েছে। তারা আন্দোলন করে আমার বিরুদ্ধে, কেন? সেটা আমার প্রশ্ন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমার অপরাধটা কী? বাংলাদেশের উন্নতি করেছি এটাই তো তাদের কাছে অপরাধ? তাহলে এর অর্থটা কী দাঁড়ায়? এরা স্বাধীনতা চায় না, বাংলাদেশের উন্নতিটা চায় না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য ফিরুক সেটা চায় না।
“কিন্তু আমি আপনাদেরকে কথা দিচ্ছিৃ বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না।” বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে ‘সুন্দর করতে’ যা যা করতে হয়, তার সবই আওয়ামী লীগ সরকার ‘করে দিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের ২৬ তম আসরে যোগ দিতে ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৩ নভেম্বর তিনি লন্ডনে যাবেন। এরপর ৯ নভেম্বর যাবেন প্যারিস সফরে। দুই সপ্তাহের সফর শেষে আগামী ১৪ নভেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইইউ ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

আর কী চায় বিএনপি? প্রশ্ন শেখ হাসিনার

আপডেট সময় : ০১:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : দুর্নীতিতে দ-িত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দিয়ে ‘উন্নত চিকিৎসার সুযোগ’ করে দেওয়ার পরও কেন দলটি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলে, সেই প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তাকে আমি এইটুকু সুযোগও দিয়েছি। আর কী চায় তারা? তারপরও কিসের ডেমোস্ট্রেশন?”
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে যাবজ্জীবন সাজার রায় মাথায় নিয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন, সে বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেছেন, সাহস থাকলে তার তার দেশে ফেরা উচিত, রাজনীতি করতে হলে ‘সাহস দেখাতে হয়’।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক নাগরিক সংবর্ধনায় কথা বলছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আজকে আমি শুনলাম আমার বিরুদ্ধে অনেক ডেমোনেস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রশ্ন আমি অন্যায়টা কী করেছি? আমি বাংলাদেশের উন্নতি করেছি, দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি, বাংলাদেশের মানুষকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি।”
সরকার যে সাক্ষরতার হার বাড়াচ্ছে, দেশের মানুষ যে শিক্ষিত হচ্ছে, সেটা বিএনপির ‘পছন্দ না’ মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা বলেন, “অবশ্য সেটা পছন্দ নাই হতে পারে। কারণ খালেদা জিয়া মেট্রিকে পাস করেনি। জিয়াউর রহমান কেবলই ইন্টারমিডিয়েট পাস ছিল। আর তারেক জিয়া তো ফেল করতে করতে এখন নাকি অখ্যাত কোথা থেকে সে পাস করেছে শোনা যায়।”
দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে খালেদা জিয়ার জেলে থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেহেতু সে অসুস্থ, তাকে আমরা তার বাসায় থাকতে দিয়েছি এবং তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কই জেলখানায় এই রকম কখনো তো কাউকে এই সুযোগ দেওয়া হয় না। এমনকি তিনি মেইড সার্ভেন্টও নিয়ে গেছেন। কারাগারে মেইউ সার্ভেন্ট পাওয়া যায়- এটা কখনো শুনেছেন আপনারা?”
খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান শুধু অনলাইনে যোগাযোগ করে দেশে আন্দোলন করতে বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এত ভয় কিসের? দেশে যায় না কেন? আমারে বিরুদ্ধে যখন মামলা দিয়েছে আমি তো জোর করে দেশে গিয়েছি, তখন আমাকে আসতে দেয় না।
“তো দেশে চলে আসুক যদি সাহস থাকে। আর রাজনীতি করতে হলে সাহস দেখাতে হবে। পলায়ে থেকে খালি বোমা মেরে, আগুন দিয়ে, আর ডেমোনস্ট্রেশন দিয়ে তো চলবে না।”
বিএনপিকে মানুষ কেন ভোট দেবে- সেই প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে! আমার কথা হচ্ছে তারা ভোটটা পাবে কোত্থেকে, যেখানে নেতৃত্বশূন্যতা রয়েছে? নেতৃত্বে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, পতালক আসামি। সেই নেতৃত্বকে কি জনগণ ভোট দেবে? আপনারা বলেন, কোন আশায় দেবে?”
বিএনপি-জামায়াত দেশকে পিছিয়ে নিতে চায় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশ আর দরিদ্র থাকবে না, আর পেছাবে না। এরা চাচ্ছে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাক। কারণ আমি থাকলে ডেভেলপমেন্ট হবে এবং আমি না থাকলে এগুলো স্থবির হবে। আর ওদের মত চোর-চোট্টারা যদি ক্ষমতায় আসে তো বাংলাদেশ রসাতলে যাবে।”
দেশের উন্নয়ন অব্যহত রাখার অঙ্গীকার জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ওরা বলে যাবে, আন্দোলন করে যাবে, আমি আমার ডেভেলপমেন্ট করে যাব, আমি আমার উন্নয়ন করে যাব। কারণ আমরা আন্দোলন করেই এখানে এসেছি। আর খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল বলে আন্দোলন করে তাকে আমরা ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিলাম।”
বিএনপির সময়ে টিআইয়ের দুর্নীতির সূচকে চার বার বাংলাদেশের শীর্ষে থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তারা অর্থ বানায়নি। আজকে যদি চুরি করে এই অর্থ না বানাত, তাহলে নিশ্চয় লন্ডনে এত বিলাসী জীবন যাপন করতে পারত না। এত শান শওকতে থাকতে পারত না, এত টাকাও খরচ করতে পারত না।’
“চুরি করে টাকা পাচার করেছে এটা আমার কথা না। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফাবিআইয়ের তদন্তে সেটা বের হয়েছে। তারা আন্দোলন করে আমার বিরুদ্ধে, কেন? সেটা আমার প্রশ্ন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমার অপরাধটা কী? বাংলাদেশের উন্নতি করেছি এটাই তো তাদের কাছে অপরাধ? তাহলে এর অর্থটা কী দাঁড়ায়? এরা স্বাধীনতা চায় না, বাংলাদেশের উন্নতিটা চায় না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য ফিরুক সেটা চায় না।
“কিন্তু আমি আপনাদেরকে কথা দিচ্ছিৃ বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না।” বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে ‘সুন্দর করতে’ যা যা করতে হয়, তার সবই আওয়ামী লীগ সরকার ‘করে দিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের ২৬ তম আসরে যোগ দিতে ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৩ নভেম্বর তিনি লন্ডনে যাবেন। এরপর ৯ নভেম্বর যাবেন প্যারিস সফরে। দুই সপ্তাহের সফর শেষে আগামী ১৪ নভেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।