ক্রীড়া ডেস্ক: ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসের ২৬তম ওভারের তৃতীয় বল। বোলার আব্দুল ওয়াহেদ বালারাফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফিল্ডার জাইন উল আবিদিনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন মিয়ানমারের শেষ ব্যাটাসম্যান নায় লিন তুন। তাতেই ৩২৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে যায় বিপক্ষে দল।
বিপক্ষ দলের নাম শুনলে অবশ্য চমকে উঠতে হবে। দলটির নাম সৌদি আরব জাতীয় ক্রিকেট দল। ভুল পড়েননি, মরুর বুকে বেজে উঠেছে ক্রিকেটের জয়গান। ধূ ধূ বালুকাপ্রান্ত কেঁপে উঠেছে ব্যাট-বলের অদ্ভূত সুরে।
বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছিল ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। তারই অংশ হিসেবে এশিয়ার দলটি অংশগ্রহণ করেছিল এসিসি মেন’স চ্যালেঞ্জার কাপে। সেখানেই মিয়ানমারকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে সৌদি আরব। এককালে সৌদি আরবের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠতো চৌচির মরুর বুকে উটের বিচরণ, পথে পথে আরব বেদুঈনের কাফেলা। আরব্য রজনীর গল্পগুলোও পুরনো নয়। তাতে নতুন সংযোজন হলো বাইশগজের অধ্যায়। আরবদের কঠিন শাসনের কথা মুখে মুখে বেশ প্রচলিত। বাইশগজের খেলায়ও সেটা ফুটিয়ে তুললো তারা। ৫০ ওভারের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে থাইল্যান্ডের টার্থাই ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্রেফ ঝড় বইয়ে দিলো সৌদি। তাতে খড়কুটোর মতো উড়ে গেলো মিয়ানমার। ব্যাট হাতে ঝড়ো সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার আব্দুল মানান খান। ৮০ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রান করে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যান তিনি। বসে থাকেননি বাকিরাও। প্রত্যেকে নেমেই শুরু করেছেন বেধড়ক পিটুনি। তাতে হাফ-সেঞ্চুরি এসেছে আরও তিনটি। মোহাম্মাদ হাশিম শেখ (৫৯), আব্দুল ওয়াহিদ (৬১) ও জাইন উল আবিদিনের (৬৬) হাফ-সেঞ্চুরিতে ভর করে ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৪২৪ রান তোলে অ্যারাবিয়ানরা। ৪২৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সৌদি বোলারদের সামনে আরেকবার অসহায় আত্মসমর্পণ করে মিয়ানমার। ম্যাচের অর্ধেক পথেই পত্রপাট গুটিয়ে যায় তাদের। পুরো ইনিংসে দুই অংকের ঘর ছুঁতে পেরেছেন মাত্র দু’জন। বাকি ৯ ব্যাটসম্যানের রান সংখ্যা আটকে ছিল মোবাইল ডিজিটের ঘরে। আর তাতেই ম্যাচের অর্ধেক পথে মাত্র ২৬.৩ ওভারেই ৯৭ রানে অলআউট হয়ে যায় মিয়ানমার। পরাজয় মেনে নেয় ৩২৭ রানের বিশাল ব্যববানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: সৌদি আরব: ৪২৪/৭ (৫০ ওভার)। মিয়ানমার: ৯৭/১০ (২৫.৩ ওভার)। ফল: সৌদি আরব ৩২৭ রানে জয়ী।