ঢাকা ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

আম-দুধ একসঙ্গে খেলে শরীরে যা ঘটে

  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩
  • ১১৪ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক : পাকা আমের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে অনেকেই ঠান্ডা স্মুদি তৈরি করে খান গরমে। এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা স্মুদি মুহূর্তেই শরীর ও মনে প্রশান্তি এনে দেয়। এছাড়া এই মধুমাসে অনেকেই পাকা আমের সঙ্গে ভাত ও দুধ মেখেও খেতে পছন্দ করেন। খুবই সুস্বাদু ও অনেকেরই পছন্দের খাবার এটি। তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন, আম-দুধ একসঙ্গে খাওয়া শরীরের জন্য আদৌ ভালো নাকি খারাপ? চলুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে আয়ুর্বেদ কী বলছে? আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, দুগ্ধজাত খাবারের সঙ্গে ফল মেশানো, বিশেষ করে দুধের সঙ্গে বড় ভুল হতে পারে। এ বিষয়ে ভারতের একজন ডায়েটিশিয়ান ও পুষ্টিবিদ ডা. অর্চনা বাত্রা জানান, এ ধরনের খাবারের খারাপ মিশ্রণ শরীরে সিস্টেমিক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে। যদি এর সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তাহলে এর থেকে পুরুষত্বহীনতা, অন্ধত্ব, উন্মাদনা, বন্ধ্যাত্ব, হজমজনিত অসুস্থতা, বদহজম, গাঁজন, পট্রিফ্যাকশন ও গ্যাস তৈরির পাশাপাশি টক্সেমিয়ার মতো কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আরেকজন প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ নেহা প্রেমজীর মতে, দুধের সঙ্গে ফল মেশানো ও তা গ্রহণ করার ফলে পাচনতন্ত্রে অ্যাসিডিটি ও কনজেশন হতে পারে। ফলে থাকা ফাইবার ও ভুল হজম সমন্বয়ের কারণে প্রচ- গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। কারণ দুধে ভারী শক্তি থাকে, এতে প্রোটিন ও চর্বিও বেশি থাকে। যা ফলের তুলনায় অনেক ধীরে হজম হয়। যা বদহজমের কারণ হয় পরবর্তী সময়ে ও অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এই বিশেষজ্ঞের মতে, শুধু আম নয় কলা, স্ট্রবেরি, আনারস, লেবু ও কমলার মতো কিছু ফল হজমের সময় তাপ উৎপন্ন করে। অন্যদিকে দুধ পেট ঠান্ডা করে। এই ফলগুলো পেটে ভেঙ্গে গেলে টক হয়ে যায়। যখন দুধ ও এই ফলগুলো একত্রিত হয়, তাদের পারস্পরিক বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলো হজম ব্যবস্থাকে ধীর করে দেয়। ফলে এনজাইম সিস্টেম বাধাগ্রস্ত হয়, যা বিষাক্ত পদার্থের সংশ্লেষণের দিকে পরিচালিত করে। এ কারণে যারা দুধের সঙ্গে এ ধরনের ফল বেশি খান তাদের মধ্যে সর্দি, কাশি, কফ ও অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
ডা. বাত্রা আরও জানান, দুধ ও তরমুজও একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। কারণ দুধ ও তরমুজ উভয়ই শীতল বৈশিষ্টের, তবুও দুধ একটি রেচক ও তরমুজ একটি মূত্রবর্ধক। অন্যান্য খাবারের তুলনায় দুধ হজম হতে বেশি সময় নেয়। আয়ুর্বেদ টক খাবারের সঙ্গে দুধ পান করার বিষয়ে সতর্ক করে। কারণ তরমুজ হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় পাকস্থলীর অ্যাসিড দুধকে দই করে দেয়। এই অনুপযুক্ত খাদ্যের সংমিশ্রণ হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে ও কোষের বুদ্ধিকে বিভ্রান্ত করে। যা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। তিনি আরও জানান, শুধু টক ফল নয় বরং মিষ্টি ফলকেও দুধের সঙ্গে মেশানো ঠিক নয়। এ বিষয়ে ভারতের আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডা. দিক্ষা ভাবসার সাভালিয়া তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন, আম শুধু ফল হিসেবেই খাবেন। এটিকে কোনো খাবারের সঙ্গে মেশাবেন না। যে কোনো খাবারের সঙ্গে আম মেশালে অন্ত্রে ইফরমেন্টেশন তৈরি করতে পারে, যা ব্রণসহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা বাড়ায়। এছাড়া হজমের সমস্যাও বাড়ে আমের সঙ্গে অন্য খাবার খেলে। তাই খাবারের অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে বা পরে আম খান। শরীর ঠান্ডা রাখতে ও রিফ্রেশিং ড্রিংকস হিসেবে আমের সঙ্গে ১ চা চামচ তুলসীর বীজ মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে শরীর আরও ঠান্ডা হবে ও ব্রণ প্রতিরোধ হবে। সূত্র: হেলথশটস

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আম-দুধ একসঙ্গে খেলে শরীরে যা ঘটে

আপডেট সময় : ০৯:১৭:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩

লাইফস্টাইল ডেস্ক : পাকা আমের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে অনেকেই ঠান্ডা স্মুদি তৈরি করে খান গরমে। এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা স্মুদি মুহূর্তেই শরীর ও মনে প্রশান্তি এনে দেয়। এছাড়া এই মধুমাসে অনেকেই পাকা আমের সঙ্গে ভাত ও দুধ মেখেও খেতে পছন্দ করেন। খুবই সুস্বাদু ও অনেকেরই পছন্দের খাবার এটি। তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন, আম-দুধ একসঙ্গে খাওয়া শরীরের জন্য আদৌ ভালো নাকি খারাপ? চলুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে আয়ুর্বেদ কী বলছে? আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, দুগ্ধজাত খাবারের সঙ্গে ফল মেশানো, বিশেষ করে দুধের সঙ্গে বড় ভুল হতে পারে। এ বিষয়ে ভারতের একজন ডায়েটিশিয়ান ও পুষ্টিবিদ ডা. অর্চনা বাত্রা জানান, এ ধরনের খাবারের খারাপ মিশ্রণ শরীরে সিস্টেমিক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে। যদি এর সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তাহলে এর থেকে পুরুষত্বহীনতা, অন্ধত্ব, উন্মাদনা, বন্ধ্যাত্ব, হজমজনিত অসুস্থতা, বদহজম, গাঁজন, পট্রিফ্যাকশন ও গ্যাস তৈরির পাশাপাশি টক্সেমিয়ার মতো কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। আরেকজন প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ নেহা প্রেমজীর মতে, দুধের সঙ্গে ফল মেশানো ও তা গ্রহণ করার ফলে পাচনতন্ত্রে অ্যাসিডিটি ও কনজেশন হতে পারে। ফলে থাকা ফাইবার ও ভুল হজম সমন্বয়ের কারণে প্রচ- গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। কারণ দুধে ভারী শক্তি থাকে, এতে প্রোটিন ও চর্বিও বেশি থাকে। যা ফলের তুলনায় অনেক ধীরে হজম হয়। যা বদহজমের কারণ হয় পরবর্তী সময়ে ও অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এই বিশেষজ্ঞের মতে, শুধু আম নয় কলা, স্ট্রবেরি, আনারস, লেবু ও কমলার মতো কিছু ফল হজমের সময় তাপ উৎপন্ন করে। অন্যদিকে দুধ পেট ঠান্ডা করে। এই ফলগুলো পেটে ভেঙ্গে গেলে টক হয়ে যায়। যখন দুধ ও এই ফলগুলো একত্রিত হয়, তাদের পারস্পরিক বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলো হজম ব্যবস্থাকে ধীর করে দেয়। ফলে এনজাইম সিস্টেম বাধাগ্রস্ত হয়, যা বিষাক্ত পদার্থের সংশ্লেষণের দিকে পরিচালিত করে। এ কারণে যারা দুধের সঙ্গে এ ধরনের ফল বেশি খান তাদের মধ্যে সর্দি, কাশি, কফ ও অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
ডা. বাত্রা আরও জানান, দুধ ও তরমুজও একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। কারণ দুধ ও তরমুজ উভয়ই শীতল বৈশিষ্টের, তবুও দুধ একটি রেচক ও তরমুজ একটি মূত্রবর্ধক। অন্যান্য খাবারের তুলনায় দুধ হজম হতে বেশি সময় নেয়। আয়ুর্বেদ টক খাবারের সঙ্গে দুধ পান করার বিষয়ে সতর্ক করে। কারণ তরমুজ হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় পাকস্থলীর অ্যাসিড দুধকে দই করে দেয়। এই অনুপযুক্ত খাদ্যের সংমিশ্রণ হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে ও কোষের বুদ্ধিকে বিভ্রান্ত করে। যা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। তিনি আরও জানান, শুধু টক ফল নয় বরং মিষ্টি ফলকেও দুধের সঙ্গে মেশানো ঠিক নয়। এ বিষয়ে ভারতের আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডা. দিক্ষা ভাবসার সাভালিয়া তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন, আম শুধু ফল হিসেবেই খাবেন। এটিকে কোনো খাবারের সঙ্গে মেশাবেন না। যে কোনো খাবারের সঙ্গে আম মেশালে অন্ত্রে ইফরমেন্টেশন তৈরি করতে পারে, যা ব্রণসহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা বাড়ায়। এছাড়া হজমের সমস্যাও বাড়ে আমের সঙ্গে অন্য খাবার খেলে। তাই খাবারের অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে বা পরে আম খান। শরীর ঠান্ডা রাখতে ও রিফ্রেশিং ড্রিংকস হিসেবে আমের সঙ্গে ১ চা চামচ তুলসীর বীজ মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে শরীর আরও ঠান্ডা হবে ও ব্রণ প্রতিরোধ হবে। সূত্র: হেলথশটস