বিনোদন প্রতিবেদক : বাংলা চলচ্চিত্রের অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। তিনি রেকর্ড আট শতাধিক ছবিতে ভিলেন হিসেবে অভিনয় করেছেন। এত সংখ্যক ছবিতে ঢালিউডের আর কোনো অভিনেতাই অভিনয় করেননি। অভিনয় প্রতিভা দিয়ে দুই বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছেন মিশা। একবার শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা বিভাগে, আরেকবার শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে।
১৯৬৬ সালের ৪ জুন গুণী এই অভিনেতার জন্ম হয়েছিল পুরান ঢাকায়। সেখানেই বেড়ে ওঠা। তিনি বাংলাদেশের একজন সুযোগ্য নাগরিক। কিন্তু জানেন কি, মিশা সওদাগর বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও ধনী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক? তাও ছোটবেলা থেকে! হ্যা, এটাই সত্যি। কারণ সম্প্রতি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্যে মিশা সওদাগর নিজেই সিলমোহর দিয়েছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানান, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই আমেরিকার নাগরিক। তখন থেকেই দেশটিতে আমার যাতায়াত রয়েছে। কিন্তু কাজের ব্যস্ততার কারণে বেশিদিন থাকতে পারি না। আমার বড় ছেলে আমেরিকায় পড়াশোনা করছে। তাকে সঙ্গ দেয়ার জন্য মাঝে মাঝেই সপরিবারে সেখানে যেতে হয়। গত রোজায় সেখান থেকেই ফিরেছি।’
মিশা সওদাগর আমেরিকার নাগরিক হলেও জো বাইডেনদের দেশে স্থায়ীভাবে থাকার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, সে সম্পর্কে জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমেরিকায় স্থায়ীভাবে থাকার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। অভিনয় করছি, আরও কয়েক বছর এ পেশায় থাকতে চাই। যখন অবসর নেব, তখন সিদ্ধান্ত নেব।’
১৯৬৬ সালের ৪ জানুয়ারি মিশা সওদাগরের জন্ম হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার সাতরোজায় আবুল হাসান রোডে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। অভিনেতার প্রকৃত নাম শাহীদ হাসান। তার বাবার নাম ওসমান গনি এবং মায়ের নাম বিলকিস রাশিদা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মিশা চতুর্থ। তার দাদার নাম জুম্মন সওদাগর।
মিশা সওদাগরের স্ত্রীর নাম মিতা। এই দম্পতির দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে হাসান মোহাম্মদ ওয়ালিদ এবং ছোট ছেলে ওয়াইজ করণী। অভিনেতার প্রকৃত নাম শাহীদ হাসান হলেও চলচ্চিত্র জগতে তিনি মিশা সওদাগর নামেই সুপরিচিত। এই নামেরও ছোট একটা ইতিহাস আছে। তিনি তার স্ত্রীর মিতা নামের ‘মি’ এবং নিজের নামের ‘শা’একসঙ্গে করে নিজের নাম রাখেন মিশা। আর দাদার নামের থেকে সওদাগর উপাধি নিয়ে নিজের পুরো নামকরণ করেন মিশা সওদাগর।
প্রতাপশালী এই অভিনেতা বাংলা চলচ্চিত্রে এসেছিলেন ১৯৮৬ সালে বিএফডিসি কর্তৃক আয়োজিত নতুন মুখ কার্যক্রমে নির্বাচিত হয়ে। ১৯৯০ সালে ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘চেতনা’ ও ‘অমরসঙ্গী’ চলচ্চিত্র দুটিতে তিনি প্রথমে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। কিন্তু সাফল্য পাননি। যার কারণে সে সময়কার পরিচালকরা তাকে খলচরিত্রে অভিনয়ের পরামর্শ দেন। মিশা তাই করেন। বাকিটা তো ইতিহাস। বর্তমানে তিনি খল চরিত্রে অপ্রতিরোধ্য।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি মিশা কয়েকটি নাটকেও অভিনয় করেছেন। এছাড়া তাকে দেখা গেছে ছোটপর্দার সঞ্চালক হিসেবেও। অভিনেতা পরিচয়ের বাইরে মিশা একজন শিল্পী নেতাও। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি একই সমিতির টানা দুই বারের সভাপতি। অভিনয়ের পাশাপাশি কাজ করে চলেছেন শিল্পীদের কল্যাণেও।
আমেরিকান নাগরিক মিশা সওদাগর
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ